সমগ্র বিশ্ব জুডে এখন একটাই কথা আর কতদিন চলবে করনার তান্ডব ! অপেক্ষা করতে করতে যে হাঁপিয়ে উঠার অবস্থা !! বিশেষজ্ঞরা বলছেন দেড় বছরের আগে শেষ হবার নয়।কানাডার প্রধানমন্ত্রী বলেছেন , ভ্যাকসিন না আসা পর্যন্ত জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হবে না। টিকাআবিষ্কার ছাডা কোন নিস্তার নাই। বিল গেইটসের মতে , ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরের আগে আমেরিকানরা করোনা –১৯ মহামারী থেকে পরিত্রাণ পাবেন না। তাঁর যুক্তি হচ্ছে প্রতিষেধকের সঙ্গে এর একটা প্রত্যক্ষ সম্পর্ক রয়েছে। তাই তিনি টিকা আবিষ্কারের জন্য কোটি কোটি ডলার দান করেছেন।
জানিনা এভাবে আর কতদিন এভাবে চলবে । স্কুল কলেজ ,ব্যাবসা বাণিজ্য সব কিছু বন্ধ রেখে এভাবে চলতে থাকলে বিশ্বব্যাপী যে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে তা কাটিয়ে উঠতে কতদিন লাগবে ?অনেক মানুষ মানসিকভাবে বিকারগ্র্রস্ত হয়ে পড়বে, শিশুদের বিকাশ ঘটবেনা, কাজকর্ম ফেলে কতদিন লুকিয়ে থাকা যাবে ঘরে ঘরে করনার অগোচরে ? সামাজিক যোগাযোগ ছেঁটে ফেলে, রোগীকে বিচ্ছিন্ন করে? কতদিন দেখবো হাসপাতালের বিছানায় মুমূর্ষ রোগী নিস্তেজ পড়ে আছে কিংবা আর্তনাদ করছে!!
করোনার প্রভাব বিশ্বের মানুষের জীবনযাত্রা কে একদম স্থবির করে দিয়েছে। মানুষকে হাত–পা ঝেড়ে ঠেলে–তুলে দিয়েছে ঘরের চার দেয়ালের মধ্যে। রাস্তায় বা পার্কে বা অন্য যেকোনো জায়গায় একত্রে সমাবেশ করা যাবে না। কারণ করোনা মানুষের সাথে মানুষের সংযোগ হলেই বিস্তার লাভ করছে। সব ধর্মের মানুষ ঘরে বসেই করছে তাদের প্রার্থনা। এর থেকে মানুষের জন্য আর বড় কি সাজা হতে পারে ?
কোনো কোনো ধর্মান্ধ ব্যাক্তিবর্গ এটাকে সৃষ্টি কর্তার প্রদত্ত গজব বলে মন্তব্য করছেন। এ বিষয়ে দিচ্ছেন নিজস্ব ব্যাখ্যা বা মতামত। আবার এর পাশা পাশি কিছু ধর্মপ্রাণ ভালো মানুষের আত্ম উপলদ্ধি মূলক বক্তব্য বা মতামতও পাওয়া যাচ্ছে। সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যের এক আলেমের কথাগুলো মনে গেঁথে যাওয়ার মতো । তিনি বললেন,,,,….
“মুসল্লী শূন্য মসজিদ। ইকামাত শূন্য আজান। খতিব শূন্য মিম্বার। এটি আমাদের জন্য খুবই দুঃখ এবং কষ্টের বিষয়। আরবের মসজিদ গুলি বিরান। আমাদের মসজিদ গুলিও বিরান হয়ে আছে।
,,,হায় আল্লাহ!! আমরা কি করলাম যে, তিনি আমাদেরকে মসজিদ থেকেই তাড়িয়ে দিলেন?
আমরা দেখলাম মসজিদুল নববীর দরজা গুলো বন্ধ হয়ে গেছে। মসজিদুল হারাম থেকেও মহান আল্লাহ আমাদেরকে তাড়িয়ে দিলেন। লোক সকল বলুন, কি অপরাধ করেছি আমরা?
চলুন, আমরা নিজেদের দিকে একটু নজর দেই।
,,আমরা তো সেই, যারা করোনা আসার আগেই হকদারের হক ভক্ষণ করেছি।
,,, আমরা তো সেই, যারা করোনা আসার আগে সুদ আর অবৈধ অর্থের পেছনে হুড়মুড়িয়ে ছুটেছি। খুন ধর্ষণে মেতেছি।
,,.আজ আমরা মেকি কান্না কাঁদছি, মেকি হাহাকার করছি মসজিদ গুলো বন্ধ হওয়ার কারণে।…..”
…….” এভাবে তিনি আরো কিছু কথা বলেছেন যা অন্যানো আলেম সম্প্রদায়ের বক্তব্য থেকে একটু ভিন্নতর।
করোনা ভাইরাস এর কারণে মানুষ গৃহবন্দী হলেও এখন বিশ্ববাসীর সাথে যোগাযোগ বেড়ে গেছে অনেক। এখন আইসোলেশন বা লোকডাউনের কারণে ঘরে বসে টেলিভিশন ও সোশ্যাল মিডিয়ার সাথে নিয়মিত যোগাযোগের কারণে সারা বিশ্বের সাথে নিবিড় একটা সম্পর্ক হয়ে গেছে। কিছু ক্ষন পর পরই আমরা জানতে পারছি বিশ্বে কি রকম তান্ডব ঘটচ্ছে এই তথাকথিত করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে।
বাংলাদেশের এক বন্ধু তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন , “উন্নত দেশগুলো যে ভাবে তাদের দেশে করোনা থেকে মুক্তির জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে তার ধারেকাছেও যায় না আমাদের দেশ । আর এটা আমাদের দেশের মানুষের কোনো দোষে নয়, এ রকম করাও আমাদের দেশের জন্য সম্ভব নয়। উন্নত দেশগুলোর হাসপাতাল যখন দেখায় টিভিতে ওখানকার চিকিৎসা দেয়ার ধরন কিছু টা হলেও আন্দাজ করতে পারা যায়। এগুলো দেখে নিজেদের কে মহান আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিনের হেফাজতে ছেড়ে দেয়া ছাড়া আমি আর কোনো উপায় দেখি না। আমাদের এই জনবহুল বাংলাদেশের মানুষ কেমন করে এই করোনার হাত হতে রক্ষা পাবে যদি না মহান আল্লাহ্ রাব্বুল উনার রহমতের চাদরে ঢেকে না রাখেন আমাদের। বস্তিবাসীরা কেমন করে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে থাকবে ? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আদেশ নিষেধ মেনে চলা কি আমাদের দেশের দিন আনা দিন খাওয়া মানুষের পক্ষে সম্ভব ?? মহান আল্লাহ্ রাব্বুল যদি আমাদের হেফাজত করেন তাহলেই আমাদের দেশবাসী নিরাপদ থাকতে পারবেন ।“
করোনা মোকাবেলায় বিশ্বের সব দেশই নিজ নিজ কর্মসূচি নিয়ে আইসোলেশন,সোশ্যাল ডিসটেন্স বা জনগণের চিকিৎসা ও খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে বহুমুখী কার্যক্রম নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। উন্নত দেশগুলির মত বাংলাদেশেও শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও করোনা প্রতিরোধে ব্যাবস্থা নেয়া হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিশ্বে সব চাইতে প্রশংসনীয় কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে কানাডা তার সুযোগ্য প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে। এ ছাড়া আরো কয়েকটি দেশও প্রশংসনীয় কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে এক বন্ধু তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেছেন, “ বর্তমানে বিশ্বের তিন হিরো…….
- ইতালির প্রাইম মিনিস্টার যিনি সাহসীকতার পরিচয় দিয়ে করোনা ভাইরাস এর দুর্যোগ মোকাবেলায় জনগণের জন্য কাজ করে যাচ্ছে।
- কানাডিয়ান প্রাইম মিনিস্টার নিজের দেশের সব খরচ নিজের সরকার এর উপর নিয়েছে।
- আয়ারল্যান্ড প্রাইম মিনিস্টার নিজ দেশের মানুষের জন্য নিজের পদত্যাগ করে আগের পেশায় ডাক্তারিতে ফিরেছেন।
নেতা এদেরকেই বলে “
যাই হোক, কিছু কিছু গবেষণা অনুযায়ী দেখা গেছে , টিকা আবিষ্কার এবং এর বাজারজাত করণে আরো এক বছরের বেশি সময় লাগবে। তারপর শুরু হবে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি। সব হিসেব করে আরো দেড় বছর লেগে যেতে পারে করনার বিরুদ্ধে জয়ী হতে। এই টিকার প্রয়োগ ছাডা কোনভাবেই বর্তমান মহামারী নির্মূল সম্ভব নয়। কেবল সাময়িকভাবে করোনা তাড়ানোর মধ্য দিয়ে মুক্তি আসবেনা। তাড়া খেয়ে করনা অন্যত্র যাবে। আবার ফিরে আসবে। তাই মানুষের শরীরে যাতে বাসা বাঁধতে না পারে সে বিষয়টা নিশ্চিত করতে হলে সকল মানুষকে সম্প্রসারিত টিকা দান কর্মসূচির আওতায় আনার বিকল্প নেই।
এ লক্ষ্য নিয়ে টিকা বা প্রতিষেধক তৈরির কাজ করছে বিশ্বের উন্নত দেশগুলির বিজ্ঞানীরা। বেশ কিছু অগ্রগতিও হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। তাদের কাছ থেকে কোনো ভালো খবরের প্রত্যাশায় অধীর আগ্রহ নিয়ে বিশ্ববাসী অপেক্ষা করছে।