পৃথিবীতে যত মানুষ রাগের মাথায় কিংবা ঠাণ্ডা মাথায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে পড়ে; এরা প্রত্যেকেই একটা পর্যায় শ্বাসকষ্ট সহ্য করতে না পেরে বাঁচার চেষ্টা করে।
সে যদি তার এই মৃত্যুযাত্রার কোন ভিডিও রেকর্ড করে এই কাজটি সম্পন্ন করত তাহলে পৃথিবীর মানুষ দেখতে পেত; মরে যেতে চাওয়া এই মানুষটা কিভাবে বাঁচতে চেয়েছিল।
উঁচু ব্রিজ থেকে লাফ দেয়ার কাজটা সে ঝোঁকের বসে করে ফেলে। অক্সিজেনের অভাবে যখন তার দম বন্ধ হয়ে আসে তখনই তার হুশ ফিরে। একটা গাছের পাতা পেলেও সেটাকে দু হাতে আকড়ে ধরে ভেসে থাকতে চায়।
পায়ের নিচে এক দানা বালুর স্পর্শ পেলেও সেটার উপর ভর দিয়ে এই যাত্রায় বেঁচে যেতে চায়। ডুবে যাবার ঠিক আগ মুহূর্তে একবার মাথা উঁচিয়ে পৃথিবীর দিকে তাকায়। সবাই জানবে মানুষটা মরতে চেয়েছিল ! আসলে মানুষটা বাঁচতে চেয়েছিল।
হুট করে গায়ে কেরাসিন দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দেয়াটা সহজ। আগুনে যখন চোখ, মুখ , জিহ্বা পুড়ে পুড়ে ধোঁয়া বের হয় কিংবা মাথার ভেতরে মোগজ গলতে থাকে তখন তাদের হুশ ফিরে আসে।
সামান্য মোমের আগুনে ৩০ সেকেন্ড আঙুল দিয়ে রাখতে পারো না; তুমি কীভাবে চামড়ার ভেতরে শিরায় শিরায় দাউ দাউ আগুন সহ্য করবে ?
তাদের এই সহ্য করার ব্যাপারটি এখানেই শেষ না। মাত্র শুরু। দুই মিনিটের আবেগ কন্ট্রোল করতে না পারার পরিণতি যে কী ভহাবহ তা রাসুললুল্লাহর কথা থেকেই আঁচ করা যায়।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন –
ক) যে ব্যক্তি নিজেকে পাহাড়ের ওপর থেকে নিক্ষেপ করে আত্মহত্যা করে, সে জাহান্নামের মধ্যে সর্বদা ঐভাবে নিজেকে নিক্ষেপ করতে থাকবে।
খ) যে ব্যক্তি বিষপান করে আত্মহত্যা করেছে সেও জাহান্নামের মধ্যে সর্বদা ঐভাবে নিজ হাতে বিষপান করতে থাকবে।
গ) যে কোন ধারালো অস্ত্র দ্বারা আত্মহত্যা করেছে তার কাছে জাহান্নামে সে ধারালো অস্ত্র থাকবে যার দ্বারা সে সর্বদা নিজের পেটকে ফুঁড়তে থাকবে।
ঘ) যে ব্যক্তি ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে সে দোজখে অনুরূপভাবে নিজ হাতে ফাঁসির শাস্তি ভোগ করতে থাকবে।
মরে যেতে চাওয়া এই সব মানুষ গুলো অভিমানি। রাগ, হতাশা, আবেগ কন্ট্রোল করতে না পেরে একটা কিছু করে বসে। তারা মনে করে বেঁচে থেকে শুধু শুধু কষ্ট পাবার কোনই মানে হয় না; বিশ্বাস কর, তারা প্রত্যেকেই মরে যাবার আগ মুহূর্তে বাঁচার জন্য ছটফট করে।
মোরগ জবাই করার পর ড্রামে রেখে ঢাকনা লাগিয়ে দিলে দেখবে ড্রামটা নড়ছে। ভেতর থেকে ছটফট শব্দ হচ্ছে। বোকা মানুষ গুলো নিজেরাই নিজেদের জবাই করে ড্রামের ভেতর বসে ঢাকনা লাগিয়ে দেয়। বাইরে থেকে একটু আকটু শব্দ হবে। ড্রামটা কিছুক্ষণ নড়বে। কেউ জানবে না মানুষটা আসলে বাঁচতে চেয়েছিল। কেউ না।কেউ না ———-
সময়:-না হয় নাই দেখলাম
নীলিকা নীলাচল..