সে যুগে আমাদের পল্লী  গ্রামে না ছিল কোন  ডাক্তার, না ছিল কোনো হাসপাতাল অসুস্থ্য হলে বাবামা, কাকাকাকী বা আমাদের সবাইকেই পল্লী চিকিৎসার সম্মুখীন হতে হতো। আজ ও মনে পড়ে গোবিন্দ কবিরাজ, ললিত কবিরাজ, কাশি ঠাকুর  আরো ও কত নাম না জানা গ্রামের পল্লী চিকিৎসক, কবিরাজি চিকিৎসার উপর সবাইকেই নির্ভর করতে হতো। কবিরাজি ঔষুধ খেতে হলে আমপাতা, তুলসীপাতা,আরো কত কি লতাপাতা বাড়ির আংগিনা বা জঙ্গল থেকে সংগ্রহ, রস তৈরী করে বড়ির সঙ্গে খেতে হতো। কোনো অসুবিধা দেখা দিলে গ্রামের কবিরাজের ওষুধ, হুজুরের পানিপড়া, তাবিজ, মাটিপড়া দিয়ে চিকিৎসা করানো হতো।  হয়তো জ্বরে প্রলাপ বকছে, একটু এদিক সেদিক সন্দহ হলেই  জ্বিনের তদবির করানো হতো।  প্রসূতি মায়েদের সন্ধার পর ঘরের বাইরে যাওয়া নিষেধ ছিল, মুরুব্বিরা বলতো জ্বিনের আছর, খারাপ বাতাস লাগবে।   

শিশুকাল থেকেই আমরা মায়ের কাছে ধর্মীয় বাংলা আদর্শলিপি বই থেকে  অক্ষর জ্ঞান লাভ করেছি। সে যুগে অনেকের মাবাবা  আবার লেখাপড়া জানতো না, সে ক্ষেত্রে বাড়ির তালেব- আলেম থেকে আক্ষরিক জ্ঞান লাভ  করতাম । বাড়ির সব ঘরের ছেলেমেয়েরা কাচারিগরে (বৈঠকখানা ) গোল হয়ে বসে জোরে জোরে চিৎকার করে পড়তাম।  একটু এদিক সেদিক হলে হুজুরের বেতের পিটানি তো ছিলোই  । অনেক বাড়িতে তালেব আলেম ছিল না ,সে ক্ষেত্রে পাড়ার মসজিদে জোরে জোরে সবাই মিলে আরবি সুরাকেরাত ও কোরান শিক্ষা করতাম।  

  বৎসর বয়স  পর্যন্ত আমরা বাড়িতেই এই ঘরের সেই ঘরের ছেলেমেয়েদের সঙ্গে একত্রে মাটি দিয়ে এটাসেটা তৈরী করে বাড়ির ভাইবোনেরা মিলে খেলাধুলা করতাম। সব ছেলেমেয়ে স্কুলে যেত না।    সে যুগে চার/পাঁচটা গ্রাম মিলিয়ে একটা প্রাইমারি স্কুল ছিল এবং সবার পক্ষে স্কুলে যাওয়া সম্ভব হতো না। তাছাড়া আমাদের চাঁদপুর এলাকা ছিল নিচু,বর্ষা মৌসমে সব পানিতে তলিয়ে যেত।    

শুষ্ক মৌসুম (জানুয়ারী-জুলাই)  বর্ষার আগে পর্যন্ত আমরা বড়দের সঙ্গে পায়ে হেঁটে স্কুলে গেলে বর্ষার মৌসুমে নৌকা ব্যাতিত স্কুলে যাওয়া সম্ভব হতো না। একদিকে অনবরত বৃষ্টি, অপর দিকে খাল বিল সবই পানি ভর্তি, পায়ে হেঁটে স্কুলে যাওয়া যেত না।একেতো গ্রামগুলিতে পড়াশুনার কোনো পরিবেশ ছিল না, অপরদিকে নৌকা ব্যাতিত স্কুলে যাওয়া সম্ভব হতো না।  সে জন্য মেয়েদের ৯০% স্কুল না গিয়ে ঘরে মা দাদীর কাছে ধর্মীয় হাতের কাজ শিক্ষা করতো, ৯-১০ বৎসর হলেই মাবাবা চিন্তা শুরু, ১৩-১৪ হলে বিয়ের গঠক এসে ছেলের খোঁজ দিতো।       

সে যুগের স্কুলগুলির করুন অবস্থা,যোগাযোগ ব্যবস্থা ও অন্যান্য অসুবিধার  কথা স্বরণ হলে আজ ও মনে হয় কতই না কষ্ট করে পড়াশুনা করেছি।  দোচালা টিনের ঘর, মুলির বেড়া’ জোরে বাতাস আসলে অনেক সময় ঘর উড়িয়ে নিয়ে যেত।  স্থানীয় লোকজন বাঁশ , টিন এবং এটাসেটা দিয়ে স্কুল তৈরী করে ছেলেমেয়েদের পড়াশুনার ব্যবস্থা করতো।   আমরা ছোটরা হোগলায় বসে এবং বড়োরা আম বা তালের তকতা দিয়ে বানানো লম্বা টুলে বসে পড়াশুনা করতো।  আমরা সে যুগে কলাপাতা, স্লেট লেখার জন্য ব্যবহার করতাম।  বাঁশের কঞ্চি দিয়ে কলম এবং বাজার থেকে এক রকম বড়ি কালি কিনে  দোয়াতে পানি দিয়ে গুলে ব্যবহার করতাম। কিছুক্ষন লেখার পর  কালি থেকে হাত ময়লা হয়ে যেত এবং পানি দিয়ে ধুইলেও পরিষ্কার হতো না।  আমার মনে পড়ে,স্কুলে সাপ দেখে আমরা ভয় পেয়ে চিৎকার করেছিলাম। গ্রামের লোক এসে সাপ মেরে  আমাদের ভয় ভীতি  দূর করে।  

আমাদের স্কুলে তিনজন গুরু ট্রেনিং প্রাপ্ত টিচার ছিল।  বেত ছাড়া টিচার ক্লাসে যেত না; পড়া না পারলেই বেত দিয়ে পিটানো হতো। তবে সব শিক্ষকদের খেয়াল ছিল আমার মতো আরো কয়েকজনের প্রতি , কারণ আমরা  ছিলাম সহজ- সরল, শিক্ষকদের ভক্তি শ্রদ্ধা করতাম, পড়াশুনা না করে স্কুলে আসতাম না।     

এই তিন জন  টিচার বাড়ি বাড়ি গিয়ে ছেলেমেয়েদের স্কুলে যাওয়ার জন্য উৎসাহিত করতেন।  সে যুগে মানুষের শিক্ষার প্রতি আগ্রহ ছিল না ; অনেকেই বলতে শুনেছিআমাদের ছেলেমেয়েদের পড়াশুনার দরকার নেই।  “এরা ছেলেদের মাঠে কাজ করানো লাভজনক মনে করতো। আজকাল প্রতিটি গ্রামে স্কুল আছে ; কিন্তু সে যুগে যোগাযোগ ব্যবস্থা এতোই নাজুক ছিল যে, সে জন্যে ও ছেলেমেয়েরা  স্কুলে যেতে চাইতো না। 

প্রাইমারি স্কুলগুলি জেলা স্কুল বোর্ডের অধীনে ছিল।  আমাদের স্কুল ঘর ছিল টিনের চাল, বাঁশের  এবং কাঠের খুঁটি, মুলির বেড়া।  প্রায় প্রতি বৎসরই ঘরের খুঁটি পাল্টাতে হতো।  স্কুল মেরামতের জন্য স্কুল বোর্ড কোনো পয়সা খরচ করতো না।  গ্রামের মানুষ প্রতি বৎসর স্কুল ঘরের খুঁটি , বেড়া পাল্টিয়ে  দিতো। ব্ল্যাকবোর্ড বেড়ার মধ্যে লাগানো থাকতো।  আমরা পুরানো বই বাজার থেকে অর্ধেক দামে কিনে পড়াশুনা করতাম।  

বেলা দশটায় স্কুল বসত এবং ৪টা বাজে ছুটি হতো।  স্কুলে কোনো ঘড়ি ছিল না এবং শিক্ষকের হাতেও কোনো ঘড়ি ছিল না। আন্দাজের উপর ভর করে ঘন্টা বাজতো এবং   আমরা আন্দাজ করে স্কুলে যাইতাম।আকাশের দিকে তাকিয়ে বেলা ঠিক করা হতো এবং সে মতে আমরা বাড়ি থেকে স্কুলে বই খাতা নিয়ে যাইতাম।         

শিশু শ্রেণী ওয়ান  আমরা লেখার জন্য স্লেট ব্যবহার করতাম। স্লেট  বার বার পরিষ্কার করে লিখতাম এবং পরিষ্কার করতাম  এবং বাড়িতেও  ব্যবহার করতা  শিশু শ্রেণীতে  পাঠ্য পুস্তক হিসাবে আদর্শলিপি বাল্যশিক্ষা একমাত্র পাঠ্যপুস্তক।  নামতা ২০ পর্যন্ত আমরা মুখস্ত করতাম।  তাছাড়া বিভিন্ন রকম শ্লোক (কড়াকিয়া, গন্ডাকিয়া )মুখস্ত করতাম।    

বর্ষার সময় স্কুলে যাইতে আমাদের সব চেয়ে সমস্যা,  ছোট নৌকা নিয়ে আমরা কয়েকজন মিলে স্কুলে যাইতাম। প্রায়ই বৃষ্টি হতো এবং অনেক সময় ভিজে ভিজে স্কুলে যাইতাম স্কুল থেকে আসতাম।  সে যে স্কুল যাওয়া আসার দুর্গতি তা ভুলে যাওয়ার মত না।  কিন্তু আমার মতো কয়েকজন পরিস্থিতির সঙ্গে যুদ্ধ করে স্কুলে রীতিমতো  যাওয়া আসা ক্লাসের পড়াশুনা চালিয়ে নিতাম বলে বোধ হয় পর্যন্ত আসতে পেরেছি।    

আমরা সে যুগে  বাড়ির কাজ (হোমটাস্ক) লিখতাম রুল টানা খাতায়।  প্রতিদিন এক পৃষ্ঠা লেখা স্কুলে নিতে   ভুল করতাম না।  আমাদের টিচার হাতের লেখা যাতে সুন্দর হয় সে দিকে বিশেষ মনোযোগ দিতেন।   আজকালকার মতো স্কুল ব্যাগ ছিল না, আমরা হাতে বা কাঁদে করে বই নিয়ে স্কুলে যাইতাম।  

 প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠ শেষ করার পর বেশির ভাগ ছেলেরাই উপরের ক্লাসে আর যেত না।  এটার একটা কারণ হলো উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল অনেক  দূরে থাকায় ছেলেরা থাকার অসুবিধার জন্য পড়াশুনা করতো না। মেয়েরা ঝুঁকি নিয়ে দূরদূরান্তরে গিয়ে পড়াশুনা করতো না।   উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল অনেক দূরে থাকায় এবং কারো বাড়িতে থাকার ব্যবস্থা করতে না পারলে,পড়াশুনা করা হতো না। ছেলেরা হয়তো এখানে সেখানে থাকার ব্যবস্থা করে নিতোমেয়েদের জন্য এটা অসম্ভব ছিল।   

এই দীর্ঘ দিনের ব্যবধানে  আমাদের দেশে শিক্ষা ব্যবস্থার অনেক পরিবর্তন   হয়েছে।  আজকাল যোগাযোগ ব্যাবস্থার উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে প্রতিটি গ্রামে স্কুল হয়েছে।  ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা আজকাল আমাদের মতো কষ্ট করতে হয় না। মেয়েরা আজকাল দুই ক্লাস বা তিন ক্লাস পড়াশুনা করে মা দাদির কাছে রান্নাবান্না শিক্ষা করে বিয়ের জন্য তৈরী হয়ে বসে থাকে না।   প্রতিটি স্কুল বিল্ডিং হয়েছে , ক্লাসরুম আর আগের মতো মুলিবাঁশের বেড়া দিয়ে আলাদা করা হয় না। হোগলায় বসে ছেলেমেয়েরা আজকাল স্লেট বা  কলাপাতায় বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরী কলম   কালি দিয়ে লিখে না।  আজকাল ছেলেমেয়েরা বলপয়েন্ট ব্যবহার করে কাগজে লেখে।  সরকার স্কুলগুলির প্রতি নজর দিয়েছে।  ছেলেমেয়েদের পোশাক আশাকে অনেক পরিবর্তন হয়েছে ।  ছেলেমেয়েরা কাঁদে করে বই না নিয়ে  স্কুল ব্যাগ ব্যবহার করে, টিফিন বক্স  নিয়ে স্কুলে যায়। মেয়েরা আজকাল ছেলেদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা দিয়ে পড়াশুনা ও  কাজ করে।  

আজকাল শহরে এমন কি গ্রামে প্রাইভেট কিন্ডারগার্টেন স্কুল হয়েছে  এবং মাবাবা ছেলেমেয়েদের কিন্ডারগার্টেন স্কুলে বেতন দিয়ে পড়াশুনা করিয়ে ভালো স্কুলে এবং ভালো গ্রেড নিয়ে পাশ করার জন্য প্রাইভেট টিচার দিয়ে পড়াশুনা করায়।   ছেলেমেয়েরা পড়াশুনার চাপে এত ব্যাস্ত থাকে যে আগের দিনের মতো স্বাধীন ভাবে চলাফেরা করার সুযোগ পায় না।  শহরে অনেকে ছেলেমেয়েদের পয়সা খরচ করিয়ে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পাঠিয়ে লেভেল এবং লেভেল” পরীক্ষা দিয়ে higher    studies  করানোর জন্য বিদেশে পাঠায়। আজকাল আমাদের দেশ শিক্ষা দীক্ষায় অনেক এগিয়েছে।  

 

কানাডায়  শিশু ভুমিষ্ট হওয়ার আগে থেকেই মাবাবার কত কি জল্পনা কল্পনা।  আজকাল মাবাবা শিশু জন্মের পূর্বেই জেনে  নেয়  ছেলে কি মেয়ে হবে ? আমাদের দেশে মেয়ে হলে বলেবৌ পোড়া  লক্ষ্মী দেশে মেয়ে হলেই মাবাবা বেশি খুশি।  মেয়ে হবে সে আনন্দে মাবাবা বা আত্মীয়স্বজন পূর্ব থেকেই খেলনা মেয়ে ড্রেস দিয়ে ঘর সাজিয়ে রাখে। এখানে তুলনামূলক ভাবে মেয়েরাই বেশি মাবাবার  আদর যত্ন করে।  

দেশে বাবামা সমান ভাবে সংসারের দায়িত্ব নিয়ে থাকে, উভয়ই কাজ করে সংসার চালায়  প্রতিটি পরিবারে বাবামা শিশুদেরডে কেয়ারশিশু যত্ন কেন্দ্রে রেখে কাজ করতে যায় গত দুই বৎসর করোনা মহামারীর কারণে কানাডায়  প্রাথমিক শিক্ষা এবং শিশু যত্নের  কিছু  সমস্যা দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ তাদের কাজ ছেড়ে দিতে হয়েছে, বা তাদের ঘন্টা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস হয়েছে।শিশু পরিচর্যার সুযোগ না থাকলে বাবামা  অর্থনীতিতে পুরোপুরি অংশ নিতে পারে না। শিশুর যত্ন  (Day Care”কানাডার একটি অপরিহার্য সামাজিক অবকাঠামো। রাস্তা এবং ট্রানজিট যেমন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে সমর্থন করে, তেমনি শিশুদের যত্নও করে।

প্রারম্ভিক শিশু শিক্ষা প্রোগ্রামে অংশগ্রহণকারী শিশুরা পড়াশুনার সঙ্গে সঙ্গে আরও ভাল সামাজিক এবং আচরণগত দক্ষতা অর্জন করে যা তাদের জীবনে একটি পা বাড়িয়ে দেয়। অনেক মাবাবা মনে করে  উচ্চমানের চাইল্ডকেয়ারে রেখে প্রশিক্ষণ দিতে পারলে    শিশুদের মানসিক বিকাশ উন্নত লাভ করে। ডে কেয়ারে রাখা শিশুদের কাজের অভ্যাস   দক্ষতা বাড়ায়, নিয়মিত পড়া ম্যাথ   শেখার আগ্রহ বাড়ে; সেখানে জটিল সমস্যাদি তার সমাধান শেখানো হয়।  ডে কেয়ার কর্মীরা অত্যন্ত দক্ষ, প্রারম্ভিক শিশু শিক্ষায় শিক্ষিত এবং শিশুদের দক্ষতার সঙ্গে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে।  

জুলাইঅগাস্ট দুইমাস কানাডায় স্কুল, কলেজ এবং ইউনিভার্সিটি ছুটি  থাকে   এই দুই মাস বিভিন্ন কমিউনিটি সেন্টার খোলা থাকে এবং কলেজ উনিভার্সিটির ছেলেমেয়েরা সময় কাজ করে নিজেদের হাতখরচের পয়সা রোজগার করে।   যেহেতু স্কুল ছুটি, মাবাবা ছোটছোট ছেলেমেয়েদের কমিউনিটি সেন্টারে রেখে কাজে যায় এবং বিকেলে কাজ থেকে ফেরার পথে বাসায় নিয়ে যায়।  সময় ওরা বিভিন্ন  ধরণের ক্রিয়াকলাপ নিয়ে ব্যাস্ত থাকে।   

) ছোট ছোট বাচ্চারা কেউবা কার্টুন,আর্ট, পেইন্টিং,পিয়ানো   সঙ্গীত শিখে এরা   নিজ থেকেই আনন্দের মধ্যে শিখে এবং ইয়ং টিচার   যারা কলেজ বা ইউনিভার্সিটি পড়াশুনা করে তারা নিজেরা কোনোরকম চাপ না দিয়ে উৎসাহ দিয়ে ছোট ছেলেমেয়েদের শিখায়।  

) কেউবা মাঠে ফুটবল খেলা শিখে: ছোটছোট ছেলেমেয়েরা মাঠে হইচই  ছুটাছুটি করতে ভালোবাসে এবং ফুটবল খেলা শিখে; কেউবা অন্যধরণের খেলাধুলা শিখে।     

) গ্রীষ্মকালীন ক্যাম্প: স্কুল বা কমিউনিটি সেন্টার থেকে শিশুদের ক্যাম্পে নিয়ে রকমারি  অভিজ্ঞতা বিভিন্ন গ্রুপে  কাজ শিখে , নতুন দক্ষতা  এবং মজাদার স্মৃতি  জীবনের সহায় হয়ে থাকে    

ক্যাম্প   থেকে ছেলেমেয়েরা  অঙ্কন, পেইন্টিং, ভাস্কর্য, মুদ্রণ শিখেঅনেকে ছেলেমেয়েদের বিভিন্ন স্থানে স্কুল শিক্ষকদের   সঙ্গে দু/তিন দিনের জন্য ক্যাম্পে পাঠায় এবং বাচ্চারা নিজেদের মধ্যে সামাজিকতা অন্যান্য অভিজ্ঞতা নিয়ে ঘরে ফিরে।  

তাছাড়া গ্রীষ্মকালীন (সামারের)  ছুটিতে মাবাবা ছেলেমেয়েদের পার্কে , লেকের পাড়ে, নায়াগারা জলপ্রপাত, ব্লু মাউন্টেন, অনেকে দূরদূরান্তরে  নিয়ে যায়।    

আজকাল আমাদের দেশে গ্রামে শহুরে  জীবনে মাবাবা ছেলেমেয়েদের ছুটিছাটার সময় বিভিন্ন মনোরম পরিবেশে নিয়ে গিয়ে অনেক কিছু শিখায়।

শিক্ষা কানাডাসরকারের জন্য সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারগুলির মধ্যে একটি। প্রাথমিক শিক্ষা বা প্রাথমিক বিদ্যালয় হল কানাডা শিশুদের জন্য বাধ্যতামূলক, গ্রেড   থেকে শুরু করে, সাধারণত   বা   বছর বয়সে, তাছাড়া   ১১   থেকে ১২ বছর বয়সে গ্রেড   শেষ করে

কানাডায় মাধ্যমিক শিক্ষার দুটি স্তর রয়েছে: জুনিয়র হাই স্কুল এবং উচ্চ বিদ্যালয়। জুনিয়র হাই স্কুল বা ইন্টারমিডিয়েট শিক্ষা প্রাথমিক বিদ্যালয় শেষ হওয়ার সাথে সাথেই অনুসরণ করা হয়। এটি শিক্ষার একটি দুই বছরের পর্যায় যা গ্রেড এবং গ্রেড পর্যন্ত।  কানাডিয়ান উচ্চ বিদ্যালয়গুলি সতর্কতার সাথে এবং ভেবেচিন্তে তাদের পাঠ্যক্রম ডিজাইন করে যাতে শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার জন্য সর্বোত্তমভাবে প্রস্তুত করা যায়। কানাডার অধিকাংশ প্রদেশে  স্কুলগুলি গ্রেড   ১২ পর্যন্ত গ্রেড ১১ থেকে ছেলেমেয়েদের বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ বা  উচ্চশিক্ষা চালিয়ে যাওয়া বা না যাওয়া  সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে  

কিছু কিছু ছেলেমেয়ে স্কুল শেষ করার পর ভোকেশনাল ট্রেনিং নিয়ে কাজে ঢুকে পড়ে এবং পরে আস্তে আস্তে পড়াশুনা করে নিজেকে জব মার্কেটের জন্য তৈরী করিয়ে নিয়ে নিজ নিজ ফিলডে কাজ করে। 

আমরা সেকালে সকালে পান্তাভাত, বাসি তরকারি, পোড়ামরিচ, পিয়াজ দিয়ে খেয়ে বা গরম ভাত যখন যা মিলতো খেয়ে স্কুলে যেতাম।  আমাদের ছিল না কোনো ভবিষ্যৎ চিন্তা, ভয়ভীতির মধ্যে পড়াশুনা করতে হতো   স্কুলের পড়া না পারলে কারো সাহায্য পাওয়া যেত না।  এটাই ছিল বাস্তবতা, পড়াশুনায় ভালো করতে না পারলে, খেতেখামারে কাজ করা।  

সমাপ্ত

পূর্ববর্তী নিবন্ধফ্যামিলি
পরবর্তী নিবন্ধ‘কণ্ঠচিত্রণ’ এর আবৃত্তি কর্মশালা
নজরুল ইসলাম
নজরুল ইসলাম - জন্ম:- ১৯৪৮ সাল । এনায়েতপুর, কচুয়া, চাঁদপুর, বাংলাদেশ। শিক্ষা:- এম, কম ( ব্যাবস্থাপনা ), ঢাকা ইউনিভার্সিটি। এম, এ (অর্থনীতি ) জগন্নাথ ইউনিভার্সিটি। চাকুরী জীবন:-ইসলামাবাদ, পাকিস্তান,বাংলাদেশ, নাইজেরিয়া,আমেরিকা ও কানাডা। বর্তমানে :- অবসর জীবন- কানাডাতে। ছাত্রজীবন থেকেই লেখালেখির শুরু। প্রকাশিত বই:-আমার সংগ্রামী জীবন,সাদা ঘোড়া,জীবন চক্র,শুচিতা ও জীবনের মুখোমুখি।

আপনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন