আমাদের ছাত্র/ছাত্রী সমাজকে উৎসাহ দেয়ার জন্য বিভিন্ন সময় বিশিষ্ট ব্যাক্তিদের টেনে এনেছি । আমাদের ছেলে মেয়েদের অনেকেই শুনে থাকবেন ইন্ডিয়ান সিনেমা জগতের এক হিরো দিলীপ কুমার যার আসল নাম মুহাম্মদ ইউসুফ খান, জন্ম (ডিসেম্বর, ১৯২২)পেশাওয়ার ব্রিটিশ ইন্ডিয়া । তাঁরা পরিবারে ১২ জন ভাইবোন ছিল । তাঁর জীবনের প্রথম কাজ বোম্বে ব্রিটিশ আর্মি ক্যান্টিনে । চিত্র তারকা দেবিকা রানী ও তার স্বামী হিমাংশু রায়, তাদের মুভির জন্য একজন ভালো সুদর্শন ছেলে খোঁজ করতে ছিলেন। ইউসুফ খানকে দেখে তাদের খুব পছন্দ। তাকে দিলীপ কুমার নাম দিয়ে সিনেমা জগতে লাগিয়ে দিলেন। তার পর থেকে তাঁর পিছু তাকাতে হয়নি। সারা জীবন পরিশ্রম করে ভারতীয় সিনেমা/ মুভির জগতে তিনি সাড়া জাগিয়ে ছিলেন । তিনি এক সময় ইন্ডিয়ান পার্লিয়ামেন্টারিয়ান ও ছিলেন। তা ছাড়া ,তিনি একজন সমাজ সেবক হিসাব সুপরিচিত । তিনি আজ এক জন বর্ষীয়ান (৯৭) শ্রদ্ধয় ব্যাক্তি ,যার রয়েছে দুনিয়া জোড়া নাম ও সুখ্যাতি ।
কানাডার এডুকেশন সিস্টেম:
এবার আসা যাক অন্য প্রসঙ্গে । কানাডার এলিমেন্টারি স্কুল গুলিতে প্রতিটি ছেলে মেয়ের পড়াশুনার সঙ্গে সঙ্গে তার সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট , পার্সোনাল গ্রোথ, ক্লাস পার্টিসিপেশন, ডিসিপ্লিন , অন্যান্যদের সঙ্গে কো-অপারেশন, লিডারশিপ সঠিক ভাবে হচ্ছে কিনা টিচার লক্ষ করেন ও শিখিয়ে থাকেন, তা ছাড়া তাদের রিপোর্ট কার্ডে উল্লেখ করা হয় ।.আমাদের দেশ গুলিতে ছাত্র/ছাত্রীদের মার্কশীটে শুধু মার্ক্স্ দেখানো হয়, আর এখানে রিপোর্ট কার্ডে কেন কম বা বেশি মার্ক্স্ পেয়েছে, কোন কোন দিকে ইমপ্রুভমেন্ট করানো দরকার তার সঠিক ব্যাখ্যা দেয়া থাকে । তাতে মা/বাবা বুঝতে পারে তার ছেলে মেয়ের ইমপ্রুভমেন্ট করানোর ব্যাপারে সঠিক নির্দেশনা ।
এখানে প্রতিটি মিউনিসিপালিটিতে বা লোকসংখ্যা অনুসারে ২/৩ টি মিউনিসিপালিটি মিলিয়ে একটা এডুকেশন বোর্ড থাকে । টরন্টো মিউনিসিপালিটিতে একটা জেনারেল স্কুল এডুকেশন বোর্ড এবং একটা ক্যাথলিক স্কুল বোর্ড, (ক্যাথলিক স্টুডেন্টস দের জন্য) আছে । আমাদের দেশে এডুকেশন বোর্ড বলতে একটা বিরাট কিছু বুঝায়। অনেকগুলি ডিস্ট্রিক্ট নিয়ে একটা এডুকেশন বোর্ড গঠন করা হয়ে থাকে। এখানে ছোট ছোট বোর্ডে ৩/৪ জন, মিউনিসিপালিটি কতৃক ইলেক্শনে নির্বাচিত এডুকেশন ট্রাস্টি থাকে ।এক এক এরিয়ার জন্য এক এক জন ট্রাস্টি স্কুল গুলির এডুকেশন স্ট্যান্ডার্ড দেখা শুনা করে । তাছাড়া প্রতি স্কুলে পেরেন্টস/টিচার কাউন্সিল আছে। পেরেন্টস/টিচার কাউন্সিল রিপ্রেসেন্টেটিভ স্কুল পেরেন্টস ভোটে নিয়োগ হয়। প্রতি এক/দুই মাস অন্তর অন্তর স্কুলে মিটিং হয়, সে মিটিং এ ওরা স্কুলের সার্বিক উন্নতি নিয়ে আলাপ আলোচনা করে। ছেলে মেয়েদের মধ্যে মেধার তারতম্য থাকতে পারে। কিন্তু এদের ভালো পড়াশুনা ও ভালো মনের মানুষ হিসাবে তৈরী করতে কাউন্সেলর, ট্রাস্টি এবং টিচার যৌথ ভাবে কাজ করে। ছেলে মেয়েদের দৈনন্দিন একটিভিটিস এভালুয়েশন করে মা/বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করে । প্রিন্সিপাল,বোর্ড কমিটি, টিচার্স পারফরমেন্স এভালুয়েশন করে এবং এদের এভালুয়েশন এর উপর টিচার প্রমোশন বা পরিবর্তন নির্ভর করে।
ছাত্র/ছাত্রীর হোম ওয়ার্ক, ক্লাস একটিভিটিস, টেস্ট পারফরমেন্স মিলে তার রিপোর্ট কার্ড এবং টিচার্স’রেমার্ক্স সহ পারেন্টসকে পাঠানো হয়। টাইম টো টাইম স্কুলে পেরেন্টস ইন্টারভিউ এবং বিশদ আলোচনার জন্য ডাকা হয় ।কাজেই ছেলে মেয়েরা একটা কন্টিনুয়াস পড়া শুনার পরিবেশের মধ্যে থাকে। প্রতিটি ছাত্র/ছাত্রীকে বোর্ড থেকে একটা আইডেন্টিটি (স্টুডেন্ট নাম্বার) দেয়া হয় । তার পুরা স্টুডেন্ট লাইফ হিস্ট্রি যে কোনো স্কুল/ কলেজে বা ইউনিভার্সিটি দেখে নিতে পারে। টিচার স্টুডেন্টদের ক্রিয়েটিভিটির উপর বেশি জোর দিয়ে থাকে । ছেলে মেয়েদেরকে সব সময় একটা কিছু কাজ (প্রজেক্ট ) দেয়া হয় যা মূলতঃ গবেষণা মূলক এবং, ছাত্র /ছাত্রীরা তৈরী করে স্কুলে জমা দিতে হয় । এক এক ছাত্র /ছাত্রী তাদের নিজেদের চিন্তাধারা থেকে ভিন্ন ধরণের প্রজেক্ট তৈরী করবে, একজনের কাজের সঙ্গে অন্যজনের মিল হবে না । এ সব প্রজেক্ট স্কুল ওয়াল এ টানিয়ে রাখে পেরেন্টস (মা /বাবার ) অবগতির জন্য।
এখানে টিচার ছেলে মেয়েদের এলিমেন্টারি স্কুল গুলিতে কাজের মাধ্যমে ব্যাস্ত রাখে। হার্ড বোর্ড কেটে বা কাগজে ডিজাইন করে বিভিন্ন রকমের বাড়ি, বাড়ির সামনে লন, ফুলের বাগান, তা ছাড়া নিজের খেয়াল/ খুশি মতো গাড়ি এবং ব্যাটারী ও ইলেকট্রিক তার দিয়ে বিভিন্ন জিনিস তৈরী করে স্কুলে নিয়ে গিয়ে সাবমিট করে এবং স্কুলের ওয়াল ভর্তি সারা বৎসর ক্রিয়েটিভ কাজ টানানো থাকে। পেরেন্টস টিচার্স রাত্রে তারা প্রতিটি কাজ যত্ন সহকারে দেখে ও উৎসাহ পায় । তা ছাড়া ছেলে মেয়েদের দৈনন্দিন কাজ ও রিপোর্ট নিয়ে মা বাবা এবং ছেলে মেয়েরা বেশ উৎসাহ নিয়ে শিক্ষকের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে ।
এ দেশে ইলেমেন্টারি স্কুল গুলিতে লাঞ্চ রুম সুপারভিসর ও ক্লাস রুম অ্যাসিস্ট্যান্ট নেয়া হয় টিচারদের সাহায্যের জন্য। তাছাড়া স্পেশাল নিড স্টুডেন্টদের জন্যে আলাদা স্পেশাল নিড ট্রেনড অ্যাসিস্ট্যান্ট নেয়া হয়। এরা ক্লাস রুমে বা বাহিরে ডিসিপ্লিন রাখার জন্য টিচারদের সঙ্গে একত্রে কাজ করে। মাঝে মাঝে স্কুল থেকে প্রতিটি ছাত্র/ছাত্রীকে দিয়ে জনহিতকর কাজের জন্য পেরেন্টস,তাদের বন্ধু বান্ধব এবং বাহিরের লোকজনের কাছ থেকে ফান্ড raising করানো হয়; যেমন উনিসেফ, বিভিন্ন দেশে ফ্লাড, সাইক্লোন ও মহামারি আর ও বিভিন্ন সাহায্যে ডলার উঠিয়ে ছাত্র ছাত্রী স্কুল ফান্ডে জমা দেয় ।
সেকেন্ডারি স্কুলের বা কলেজ/উনিভার্সিটির ছেলে মেয়েরা পার্ট টাইম কাজ করে ডলার জমায় এবং নিজেদের খরচ বহন করে। সব ছেলে মেয়েদের মধ্যে বাহিরের দেশ ভ্রমণ করার ঝোঁক থাকে। এরা ঐতিহাসিক স্থান ভ্রমণ করতে ভালো বাসে । এদের মধ্যে কোনোরকম বৈষম্য দেখা যায় না । আমাদের ছেলে মেয়েদের মধ্যে একটা বৈষম্য আপনা আপনি তৈরী হয় ।যেমন আপনার গাড়ি/বাড়ি আর্থিক অবস্থা আর একজনের কিছুই নাই এই যে পার্থক্য, হায় হুতাশ, এটা এদের মধ্যে দেখা যায় না। এরা অধিকাংশ সময় জন হিতকর কাজে লাইব্রেরিতে এসে ভলান্টিয়ারিং কাজ করে। লোকজনকে কম্পিউটার নিয়ে সাহায্য করে, বই খুঁজে বের করে দেয়, ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের ইন্টারনেট বা অন্যান্য কাজে সাহায্য করে । কেউ হাত উঠলেই ওরা আসবে এবং যদি ব্যাস্ত থাকে, বলবে এক/ দুই মিনিট পরে আসছি। এ ভাবেই এরা লাইব্রেরিতে হাসিমুখে অবসর সময়ে অন্যদের সাহায্য করে ।
প্রতিটি রেস্টুরেন্ট ,ক্যাফেটেরিয়া, পার্ক এন্ড রিক্রিয়েশন সেন্টার বা কারখানা, এ সবে স্কুল,কলেজ ও উনিভার্সিটির ছেলে মেয়েরা লম্বা ছুটির সময়( সামার) জব করে । অনেক সময় ওরা বিভিন্ন আফ্রিকান ,এশিয়া ও সাউথ আমেরিকান দেশ গুলিতে পার্ট টাইম টিচিং বা অন্য কোনো কাজ নিয়ে কয়েক মাস থেকে আসে । এমন ও দেখা যায় যে ওরা এক দুই বৎসর ড্রপ দিয়ে পয়সা জমিয়ে আবার পড়া শুনা করে। এ দেশে পড়া শুনা গ্যাপ দিয়ে করা যায় ।এ দেশে পড়া শুনায় কেউ ফাঁকি দেয় না । পড়া শুনা শিক্ষা করা নিজের জন্য তাতে ফাঁকি দেয়া মানে নিজের ক্ষতি করা।
অ্যাডাল্ট এডুকেশন:
এ দেশে নাউলী ইম্মিগ্রান্টদের জন্য পড়া শুনার পরিবেশ রয়েছে। ১৯৯২ টরোন্টোতে কোনো একটা কলেজে এডুকেশন আপগ্রেড করার জন্য ভর্তি হই। বয়স্ক ছাত্র/ছাত্রীদের মধ্যে একজন ২৭/২৮ বৎসরের স্থানীয় লোক ও ছিল। একদিন কথা প্রসঙ্গে আমি তাকে জিজ্ঞাস করলাম, তোমার এডুকেশন ব্যাকগ্রাউন্ড কি? সে বলে,” আমি ৩/৪ বৎসর পূর্বে টরন্টো ইউনিভার্সিটি থেকে ইকোনমিক্স নিয়ে মাস্টার্স করেছি।“ আমি একটু অবাক হয়ে বললাম, এখানেতো ইকোনমিক্স নাই, এখানে একাউন্টিং রিলেটেড সাব্জেক্টস ও সফটওয়্যার শিখানো হবে । সে বলে,” ইকোনমিকসে অত্যধিক ভালো না করলে জব পাওয়া সমস্যা । আমি জব মার্কেটে সুবিধা করতে পারছি না। তাই লাইন চেঞ্জ করে একাউন্টিং নিয়ে পড়া শুনা করবো এবং ভবিষ্যতে সিজিএ (CERTIFIED GENERAL ACCOUNTING) প্রফেশনাল ডিগ্রী করবো বলে ভাবছি । “ আমি পুনরায় বললাম, তোমারতো, একাউন্টিং কোনো ব্যাকগ্রাউন্ড ও নাই। সে বলে,” আমি কাউন্সেলিং করিয়ে এই কোরসে ভর্তি হয়েছি। একাউন্টিং শিখে আমি আস্তে আস্তে ডিগ্রী নিয়ে নেবো ।“ দুই বৎসর আমাদের সঙ্গে কোর্স করে সে অত্যন্ত ভালো রেজাল্ট করেছিল। কলেজে থেকে বের হওয়ার পর ওর সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ হয় নি, সিজিএ বা প্রফেশনাল ডিগ্রী করেছিল কিনা জানি না ।
আমাদের বিভিন্ন দেশ গুলি থেকে বিভিন্ন ধরণের ডিগ্রী নিয়ে এ দেসে এসে লোকজন কাউন্সেলিং করিয়ে অনেকেই পড়াশুনা করে । এ দেশে স্কুল,কলেজ,ইউনিভার্সিটি বা জব মার্কেটে ঢুকার পূর্বে দেশ থেকে নিয়ে আসা ডিগ্রী এভালুয়েশন করিয়ে নিতে হয় । তাতে কি ধরণের কোর্স করা প্রয়োজন বুঝা যায় । কারণ, বেঁচে থাকার জন্য মানুষের অবিরাম প্রচেষ্টা, যেমন একজন ডাক্তার,একজন ডেন্টিস্ট বা একজন আই ( eye)স্পেশালিস্ট সরা সরি তার নিজস্য প্রফেশনে কাজ পায় না । কেউ হয়তো মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট, ডেন্টাল অ্যাসিস্ট্যান্ট, অপথালমোলজিস্ট জব নিয়ে জীবন শুরু করে । মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট কোর্স করে ডাক্তারের সহকারী ,ডেন্টিস্টের সহকারীএবং অপথালমোলজিস্ট চশমার দোকান দিয়ে ব্যবসা করে বা যে কোনো চশমার দোকানে অথবা ফ্যাক্টরিতে কাজ করে । এরা সবাই বিভিন্ন দেশ গুলি থেকে প্রফেশনাল ডিগ্রী নিয়ে অযথা সময় নষ্ট না করে ছোট খাটো কাজ নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে । অনেকেই মনে করে নিজের প্রফেশনে অযথা সময় নষ্ট না করে, বেঁচে থাকার জন্য কিছু করি আর ছেলে মেয়েদের ভালো ভাবে পড়া শুনা করাই । খোঁজ খবর নিলে জানা যায় এদের অনেকেরই জব স্যাটিসফেকশন নেই । আবার কেউ কেউ পড়া শুনা করে অনেক ভালো করে (person to person vary) ।
এখানে স্কুল ,কলেজ বা উনিভার্সিটিতে যে কোনো বয়সে পড়া শুনা করে স্কিল ডেভেলপ করা ও কাজ পরিবর্তন করে নিজেদের দৈনন্দিন ইনকাম বাড়ানো যায় । আমাদের দেশে কথায় বলে ,”একটা সাবজেক্টে পড়া শুনা করে যদি কেউ ভালো করতে না পারে, তবে ১০ টা ডিগ্রী নিলে ও ভালো করতে পারবে না , এই নীতি এ দেশে অকায্য কর । “ এ দেশে মানুষ সারা জীবন পড়াশুনা করে নিজেকে ডেভেলপ করে চাকুরী পালটায় (অবস্থার পরিবর্তন করে ) ।
প্রতিটি কমিউনিটিতে অ্যাডাল্ট (বয়স্ক) স্কুলে বয়স্কদের জন্য বিভিন্ন ধরণের কোর্সে ট্রেনিং দেয়া হয়। এখানে কতগুলি কোর্স একটু সংক্ষেপ করে দেখানো হলো (ইতি পূর্বে আরও কিছু কোর্স উল্লেখ করা হয়েছিল):
১) পেইন্টিং: নিজের বাড়ি বা অন্যের বাড়ি কি ভাবে পেইন্টিং করা হবে তা হাতে কলমে শিখানো হয় যাতে সে দোকান থেকে পেইন্ট, ব্রাশ ও অন্যান্য প্রাসঙ্গিক জিনিস পত্র খরিদ করে নিজের পছন্দ মতো পেইন্ট করতে পারে,। তাতে নিজের মনের তৃপ্তি ও খরচ কম লাগে ।
২) রেনোভেশন (মেরামত ): অনেকে নিজের বাড়িতে জিনিসপত্র কিনে পছন্দ মতো রুম তৈরী করে ভাড়া দেয় বা ছেলেমেয়েদের জন্য আলাদা রুম তৈরী করে। আবার কেউ কেউ বেসমেন্ট ভাড়া দেয়ার জন্য বা নিজে ব্যবহারের জন্য রুম তৈরী করে।বাহিরের লোক ডাকলে বহু পয়সা দিতে হয়, সে জন্য নিজের কাজ নিজের অবসর সময়ে করে নেয় । আবার কেউ কেউ অন্যের বাড়িতে ও কাজ করে এক্সট্রা ইনকাম করে। এ কাজ গুলির মধ্যে ইলেকট্রিক লাইন,switch, চোকেট লাগানো , বাড়ির সিঙ্কের ওয়াশার,pasat চেঞ্জ করা, নিত্য এ সব প্রয়োজনীয় কাজের দরকার হয়। সে জন্য অনেকে এ সব কোর্স করে যন্ত্রপাতি কিনে নিজের কাজ নিজে করে সময় ও খরচ কমায় ।
৩) কমিউনিকেশন: অনেকের ইংলিশ স্পোকেন ভালো জ্ঞান নাই। বিভিন্ন দেশ থেকে যথা ইরাক ,সিরিয়া,আরও অনেক দেশ থেকে মানবতার খাতিরে যে সব রেফিউজি এ দেশে আসে,তাদের ইংলিশ স্পোকেন (কথাবার্তা) নলেজ দরকার হয় । অথবা আমাদের দেশের লোকজন যারা মা বাবা কে স্পনসর করে আনে তাদের স্পোকেন ইংলিশ শিখতে হয়। তা ছাড়া আমাদের ইংলিশ বলার ধরণ (অ্যাকসেন্ট) এদের চেয়ে আলাদা ।
৪)রিয়েল এস্টেট প্রপার্টি কোর্স : যারা বাড়ি ও জমি জমা বেচা কেনা সংক্রান্ত ব্যবসা বাণিজ্য করতে চায়, তারা এ জাতীয় কোর্স করে লাইসেন্স নেয় । এ দেশে জমি জমা ক্যাশ পয়সা দিয়ে কিনা যায় না,ব্যাঙ্ক থেকে লোন অনুমোদন করিয়ে নিতে হয়।এই লোনের জন্য ক্রেতাকে স্থায়ী কাজ( স্ট্যাবল জব )ও কম পক্ষে 20% ব্যাঙ্ক ব্যালান্স দেখাতে হয়। যদি কমার্শিয়াল প্রপার্টি হয় তবে তার ও বেশি ব্যাঙ্ক ব্যালান্স দেখাতে হয়। যে পয্যন্ত না ব্যাংকের লোন পরিশোধ করা হবে, প্রপার্টি ব্যাংকের নামে থাকবে। তাছাড়া ক্রেতা প্রতি মাসের লোনের কিস্তি যদি কোনো কারণে ব্যাংকে জমা দিতে অক্ষম হয়, ব্যাঙ্ক প্রপার্টি বিক্রি করে লাভ লোকসানের হিসাব টেনে যদি কিছু পাওনা হয় ক্রেতাকে দেবে এবং অন্যত্র বিক্রি করে দেবে । এ ভাবেই এ দেশে কেনা বেচা হয়ে থাকে। এ জাতীয় কোর্স অ্যাডাল্ট লার্নিং সেন্টার বা রিয়েল এস্টেট নিজস্য ইনস্টিটিউট দ্বারা পরিচালিত হয়। এ কোর্স পাস্ করার পর যদি কেউ ব্যবসা করতে চায়, লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে পারে । আমাদের বাংলাদেশি,ইনডিয়ান বা অন্যান্য দেশের অনেকেই এই ব্যবসা করে থাকে। এখানে উল্লেখ করা যায় যে, যারা এই কোর্স করে ব্যবসা বাণিজ্য করে তাদের অধিকাংশ লোকই হাইলিএডুকেটেড ইঞ্জিনিয়ার,ডাক্তার, ও অন্য পেশার লোক । এখানে ক্রেতা/বিক্রেতা উভয়ই লইয়ারের (Lawyer) মাধ্যমে কাগজ চেকিং ও কোর্টে অনুমোধন স্বাপেক্ষে জমি,ঘর,(এপার্টমেন্ট ) বিক্রি ও খরিদ করে থাকে। কাজেই ভুয়া কোনো কাজ এখানে হয় না ।
একাউন্টিং রিলেটেড কোর্স: যারা একাউন্টিং ব্যবসা বা কাজ করতে চান , এখানে অনেক ধরণের কোর্স এবং সফটওয়্যার শিখানো হয়। প্রফেশনাল একাউন্টিং কোর্স ছাড়া ও বিভিন্ন শর্ট কোর্স শিখানো হয়। যারা ইমিগ্রেশন নিয়ে আসে, তাদের অনেকেই ছোটো খাটো ব্যবসা বাণিজ্য দিয়ে শুরু করে। প্রতি মাসে এমপ্লয়ার তাদের এমপ্লয়ীদের বেতনের একটা অংশ কেটে সরকারের নিকট পাঠাতে হয়। তা ছাড়া সেলস ট্যাক্স(HST,harmonized sales tax) যা ক্রেতার নিকট থেকে আদায় করা হয় , সরকারের হিসাবে পাঠাতে হয়। বৎসরের শেষে নিজেদের লাভ লোকসানের হিসাব, সরকারের ঘরে ট্যাক্স ফাইল করতে হয়। এ জন্য বিভিন্ন ধরণের কোর্স শিখানো হয়। এ ছাড়া ও যারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে চায় তাদেরকে বিভিন্ন ধরণের কোর্স যেমন: একাউন্টস আপ টো ব্যালান্স শিট শিখানো হয়। তা ছাড়া অনেক ধরণের সফটওয়্যার যথা: কুইক বুক, সিম্পলি একাউন্টিং আরও অনেক ধরনের সফটওয়্যার শিখানো হয়ে থাকে। এ ছাড়া ও যারা ইনকাম ট্যাক্স পার্সোনাল বা বিসনেস প্রাকটিস করতে চায়, তাদের জন্য কোর্স শিখানো হয় ।
এ দেশে যে কোনো বয়সে ,যে কোনো ধরণের কোর্স শিখানো হয় । এ দেশের সরকার জনগণের সুযোগ সুবিধার দিকে নজর রেখে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বহু ধরণের কোর্স শিক্ষার ব্যবস্থা করেছ যেমন ফিটনেস (ফিজিক্যাল একটিভিটিস) তা ছাড়া: বাংলা,হিন্দি,উর্দু, আরবি,ফার্সি,স্প্যানিশ আর ও অগণিত ভাষা শিখানো হয়, এ ছাড়া আরও অগণিত কোর্স শিখানো হয় যা এখানে উল্লেখ করা সম্ভব না।
মানুষ কিছু জানতে চাইলে বা শিখতে চাইলে সারা জীবন সম্ভব। একটা ডিগ্রী নেয়ার পর পড়াশুনা শেষ হয়ে যায় না, বরং পড়া শুনা শুরু হয়। একজন ৮০ বৎসর বয়েসের মহিলাকে যদি দেখি হুইল চেয়ার নিয়ে ক্লাসে গিয়ে ম্যাগ্নিফায়িং গ্লাসের সাহায্যে দেখে পড়াশুনা করে, তাতে মনে করি যে পড়া শুনা কোনো দিন শেষ হয় না।
আমি স্টার্টিং এ ইন্ডিয়ান ফেমাস সিনেমা মহা নায়ক দিলীপ কুমারকে নিয়ে কিছু কথা লিখছিলাম। দিলীপ কুমার সিনেমা জগতের এক আইকন। দিলীপ কুমার ও তার স্ত্রী সায়েরা বানুর কোনো ছেলে মেয়ে নাই । তবে অনেক ছেলেমেয়েকে তারা নিজের বলে যত্ন নেয় । দিলীপ কুমারের অনেক ধরণের গুনাগুন ও জন হিতকর কাজের জন্য এবং সারা জীবনের সাধনার বলে ভারতের সিনেমা জগতে ফেমাস হয়ে আছে ।