হারানো অভিসারের অভিমান নিয়ে কোন এক পৌষে ভেসেছিলাম অথৈ সাগরে। ট্রলার চলছে তার ইঞ্জিনের নিজস্ব শব্দ করে। শান্ত নীল সাগর। দেখে বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় যে, এই শান্ত সাগর, নির্মম হয়ে ভাঙনের খেলা খেলতে পারে। সৈকতে দাঁড়িয়ে পা ভেজানো, বা একটু এগিয়ে জলকেলি, ও আমার ভাল লাগেনা। আমি সবকিছুর গভীরে যেতে চাই, হোক না তা সাগর, মহাসাগর, মানুষ এবং মানুষের মন।
গিয়েছিলাম, দশ নটিক্যাল মাইল বেগে, পঞ্চাশ নটিক্যাল মাইল গভীরে। আরো গভীরে যেতে চাই। সুকানি বললো, এবার ফিরতে হবে নইলে জ্বালানিতে কুলাবে না।
অনিচ্ছায় ফিরে যাচ্ছি আবার সেই মনের জানালায় পেরেক ঠুকে, হাসি হাসি সুখি সুখি আত্ম প্রবঞ্চনার উপকূলে।
সন্ধ্যা পেরিয়েছে, উপরে তারা ভরা আকাশ,নীচে অথৈ সাগর,দূরে একটা বাতিঘর আলো জ্বেলে নিঃসঙ্গ দাঁড়িয়ে আছে। খুব তেষ্টা পেয়েছে, কিন্তু পেট্ বোতলের শেষ চুমুক পানিটুকুও শেষ।
অসহায় অপলক দৃষ্টিতে সাগরের দিকে তাকিয়ে আছি। মনের গভীর থেকে আকুতি নিয়ে সাগরকে বললাম,আমাকে এক আজলা জল দাও না, আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। শান্ত নীল সাগর নিরুত্তর।
আমি ট্রলারের গুলুয়ে দাঁড়িয়ে দুহাত দুদিকে প্রসারিত করে, আকাশ কাঁপিয়ে অট্টহেসে বললাম, হে সমুদ্র তোমার কত অহংকার, অথচ একফোঁটা পানযোগ্য পানীয় জল উপহার দেয়ার ক্ষমতা তোমার নেই!!!
হে সাগর তোমার কিসের এত অহংকার ?
হে পৃথিবী তোমার কিসের এতো অহংকার ??
হে মানুষ তোমার কিসের এতো অহংকার ???
তোমরা কি তোমাদেরকে জানো ????