নিউইয়র্ক সেন্ট লরেন্স থেকে জেএফকে এয়ারপোর্টের দিকে যাচ্ছিলাম উবারে, বেশ ট্রাফিক,ধীর গতিতে গাড়ি চলছে। গন্তব্য বোস্টন হয়ে ডেট্রয়েট। উবার চালকের আসনে পঁচিশোর্ধ স্বর্ণকেশী মার্কিন তরুণী মারিয়া। মারিয়া গাড়ি চালাচ্ছে আর সেল ফোন লাউডে দিয়ে মাথা দুলিয়ে দুলিয়ে বাসায় থাকা তার বাচ্চাকে একটার পর একটা রাইম শোনাচ্ছে। ওপাশ থেকে শিশুর খিলখিল হাসির শব্দ, যেন বাচ্চাটা তার সামনেই বসে আছে।
আমি অভিভূত!! মা!! পৃথিবী ব্যাপি একই অনুভূতি।
টুকিটাকি কথায় জানলাম মারিয়া সিঙ্গেল মাদার। কেন সে সিঙ্গেল মাদার সে প্রসঙ্গে গেলাম না, শুধু জানা হলো মারিয়া তার চারবছরে শিশু পুত্র আর বৃদ্ধা মাকে নিয়ে কুইন্স-এ বসবাস করে। উবার চালায় কারণ, স্বাধীন পেশা, আয় ভাল এবং সে যখন ইচ্ছে তার শিশু সন্তানের সাথে কথা বলতে পারে। গাড়ি চলছে,, কথায় কথায় আবেগী অভিমানী কন্ঠে মরিয়া বললো, রহমান,,,, আমার মা আর আমার শিশু পুত্র, এই আমার পৃথিবী।
আমাকে এয়ারপোর্ট নামিয়ে দিয়ে মারিয়া চলে গেছে। উবারের ড্রাইভিং সিটে বসে নিউইয়র্কের রাস্তায় জীবন যুদ্ধরত মারিয়া হাজারো মানুষের ভিড়ে হারিয়ে যাবে, শিশু সন্তানকে রাইম শোনাবে, শিশুটি একসময় রাইম শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে যাবে।
উবারের স্টিয়ারিং হুইলের মতো মারিয়ার জীবনও মোড় নিতে থাকবে,, কখনো ডানে, কখনো বাঁয়ে, কখনো বা বিপরীতে।
জীবন বড়ই বিচিত্র!!!!
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,, মারিয়ার জন্য ভালবাসা।