নরওয়ে থেকে:-
সাম্প্রতিক বিশ্ব ব্যবস্থায় অর্থনীতিক মুক্তির চেয়ে বড়ো আর কোনো মুক্তি বা স্বাধীনতা নাই , আপনার যদি অর্থনীতিক মুক্তি থেকে থাকে তবে যে দেশেই থাকেন না কেন, যে দেশেরই নাগরিক হন না কেন, আপনি হচ্ছেন একটা মুক্ত বিহঙ্গ, যে বিহঙ্গ তার পাখার উপর ভর করে সারা বিশ্ব ঘুরতে পারে। অর্থনৈতিক মুক্তি হয়তোবা সর্ব ক্ষেত্রে সব মুক্তি এনে দিতে পারেনা তবে আপনি যদি অর্থনীতিক ভাবে স্বাধীন একজন মানুষ হয়ে থাকেন তবে শত আইন , শত সমস্যার ফাঁক ফোকর গলিয়ে আপনি কিন্তু আপনার স্বাধীনতা ঠিকই কিনে নিতে পারবেন। তাই অর্থনীতিক মুক্তির পথ খুঁজুন, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আছে তো মস্কো, নিউ ইয়র্ক, লন্ডন ,আপনার হাতের মুটোয়, অন্যদিকে অর্থনীতিক ভাবে সমস্যাগ্রস্ত ? সারা জীবনেও হয়তোবা আপনার নিজ জেলা শহরের বাহির কি রকম তা দেখতে পারবেন না। অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য, জীবনের স্বাধীনতার জন্য ছুটবেলা থেকে আমরা প্রস্তুত হই , আমাদের মা বাবা , আমাদের শিক্ষক, শিক্ষিকা, আমাদের শ্রদ্বাভাজনরা আমাদের প্রস্তুত হতে সহায়ক ভূমিকা পালন করেন, তার পরও ভবিষ্যতে আমরা কে কি হবো, কে কিভাবে কতটুকু স্বাধীনতা নিয়ে জীবন যাপন করবো তার ৯০% ভাগ নির্ভর করে আমাদের নিজেদের, পরিশ্রম, ও ইচ্ছার উপর। কম বয়সে নিজেদেরকে ঠিক মতো প্রস্তুত করে তুলতে না পারলে সারা জীবন তার বুঝা টানতে হয় এবং জীবনের শেষদিন গুলোতে এসে আফসুস নিয়ে মরতে হয়। পৃথিবিতে আমরা একবারই আসি, শত ইচ্ছা কিংবা চেষ্টায় আবার আসতে পারবোনা তাই আমরা এখনো যারা শিশু, কিশোর কিংবা যুবক আছি , তাদের কঠোর ভাবে চেষ্টা করা উচিত অর্থনৈতিক মুক্তির।
দশম শ্রেণীর যে ছাত্র প্রেমিকার পেছনে ঘুরতে গিয়ে রেজাল্ট খারাপ করে তার ভবিষৎ সে নিজের হাতে নিজেই নষ্ট করে। পৃথিবি জুড়ে নানা জাতি, নানা বর্ণের, নানান গুষ্টির বিলিয়ন বিলিয়ন মানুষের বসবাস , সবাই মুক্তির জন্য লড়ে যাচ্ছেন। কে কাকে পেছনে ফেলে আগে যাবে সে চেষ্টায় সবাই মত্ত। আপনি যদি নিজেকে সে সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত না করেন তবে মুক্তি তো মিলবেনা,, মস্কো, নিউ ইয়র্ক, লন্ডন দেখা তো হবেইনা !! রুগে, দুঃখে ভুগে নিজের গ্রামে, নিজের কুঁড়ে ঘরে নিষ্ঠুর, নিষ্পেষিত হয়ে মরতে হবে। এক জীবনে, নিষ্ঠুর এ পৃথিবিতে এভাবে যদি মরতেই হয় তবে আপনার মানব জন্মই বৃথা। তাই যাদের এখনো সময় আছে, যারা এখনো পারবেন বলে মনে করেন , তাদের সবারই অর্থনীতিক মুক্তির জন্য সংগ্রাম করা উচিত। উচিত মরবার আগে সুন্দর এই পৃথিবীর মনোরম দেশগুলো দেখে যাবার।
ফটো ; লুলা – লিথুনিয়ান, শরীফ- বাংলাদেশী, ফিন নরওয়েজিয়ান এবং আমজাদ- প্যালেস্টানিয়ান। আমাদের সবাই এক কাতারে ঠিকই দাঁড়িয়ে আছি , কিন্তু সবাই সবাইকে পেছনে থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে কিভাবে এগিয়ে যাবো সে চেষ্টায় মত্ত। যে যত দক্ষ সে সবচেবেশি সফল হবো। নিজেকে দক্ষ করে তুলুন। দক্ষতার কোনো বিকল্প নাই। আর আপনার নিজের মুক্তি আপনার নিজের হাতের উপরই নির্ভরশীল।
“আমি যেন সেই বাতিওয়ালা,
সে সন্ধ্যায় রাজপথে-পথে বাতি জ্বালিয়ে ফেরে
অথচ নিজের ঘরে নেই যার বাতি জ্বালার সামর্থ্য,
নিজের ঘরেই জমে থাকে দুঃসহ অন্ধকার।।”
-তারই নাম শরীফ ভাই … আই স্যালুট ইউ ..!!!