এককাপ চা হবে?
হবে না কেনো—— এখুনি দিচ্ছি বলেই কমলীকা উঠে গেলো রান্নাঘরে। সাথে পারলে কিছু এনো কিছু খেতে ইচ্ছে করছে মৃন্ময় দরাজ গলায় বললো।
কমলীকা বরাবরিই একটু চুপচাপ। তাই কোন প্রতিউত্তর না দিয়েই চায়ের সাথে ঝাল চানাচুর মুড়ি বানানোর আয়োজন করতে লাগলো।
ছোট পিয়াঁজ গুলির বড্ড ঝাঁঝ হয়। মনে হচ্ছে চোখের পানি উপচে পড়বে। মনের ঝাঁঝ আর চোখের ঝাঁঝ মিলে মিশতে চাইছে। মনের কোনে একটা ঝাঁঝতো আছেই। প্রতিটা মূহুর্তে এক ধরনের যণ্ত্রণা। মিল খোঁজার ***
মা বলে এটাই নাকি মেয়েদের জীবনের একটা অংশ। আশ্চর্য মিল খোঁজার সাথে জীবন এর অংশ হবে কেনো? না কি জীবনের অংশ বলতে বুঝিয়েছে, স্বামী রা এমন ছোটখাটো অপমান করতেই থাকবে আর মেয়েরা সেটাকে হাসি মাখা মুখ করে জীবনের অংশ হিসাবে ধরে নিবে।।। মা চাচী খালাদের জীবনও কি এমন ছিলো? কিন্তু সে তো অনেক বছর আগে ছিলো। এই আধুনিক যুগে এসেও এমন পরিস্থিতি তে পড়তে হবে???
জীবনের অংশ হিসাবে যদী না নেই। কোন অপমান সূচক কথা মনে হলেই পাল্টা জবাব দেই তাতে ক্ষতি কি? দুটো কথা বাড়বে, সংসারে অশান্তি হবে, সম্পর্কের অবনতি হবে, আবার আজকালকার মতন সংসার ছেলেখেলার মতন ভেঙেও দেয়া যাবে। কিন্তু তাতে লাভটাই বা কি আর কতটুকু পরিমান ক্ষতির ভরতুকি দিতে হবে??
ভাবনাটা ভাবতে ভাবতেই চোখটার ভেতর কেমন জেনো করছে উফ্ বাবা বলতেই চোখটা পুরাই পানিতে পুকুর হয়ে গেলো আর নিজের অজান্তে বুঝবার আগেই হাতের বুড়ো আঙ্গুলটা থেকে রক্ত বের হলো। রক্তটা উপচে পড়বার যোগার দেখছি। বাসায় কোথায় জেনো মৃন্ময় ব্যান্ডেট রেখেছিলো কে জানে। মৃন্ময় বলে ডাকতেই কানে এলো সে কারো সাথে কথায় ব্যস্ত।
বিরক্ত না করে চুপচাপ চা আর ঝাল চানাচুর মুড়ি মাখা নিয়ে মৃন্ময় কে দিলো।
কমলীকার দিকে না তাকিয়েই হাত বাড়ায় চা নিয়ে খুব মনোযোগ দিয়ে মীমির সাথে আবারও করপোরেট বিষয়ে, রাজনীতি বিষয়ে, বিভিন্ন দেশের ভাষা তাদের ঐতিহ্য বিষয়ে আড্ডা দিচ্ছে মন দিয়ে। কমলীকা চুপচাপ পাশের ঘরে এসে কাপড় গুছাচ্ছে। বেশ কিছুক্ষণ পর মৃন্ময় এসে বললো, কি ব্যাপার তুমি ঝাল মুড়ি খাবে না।
না ইচ্ছা করছে না! কমলীকার সহজসরল কথা।
তুমি এতোক্ষণ ধরে কথা বলছিলে, এতো কথা তো তুমি আমার বিয়ের দুবছর যাচ্ছে তাও বলো না।
মৃন্ময় এর ও সহজসরল স্বীকারোক্তি, আমি আরো দুঘন্টা ওর সাথে কথা বলতে পারি। ওর সাথে আমার অনেক মিল। ওর সাথে কথা বলা যায়। অনেক ছোট তাতে কি : বিশ বছরের ছোট হলেও ওর সাথে কথা বলে আমার ভালো লাগে বলতে বলতেই পাশের ঘরে চলে গেলো।
কমলীকা চুপ করে ভাবতে লাগলো এটাই হয়ত জীবনের একটা অংশ। আমার সাথে কোন মিল নাই, আর অন্যের সাথে মিল আছে এটা ফলাও করে বলা………….
কমলীকা, কমলীকা বাথরুম এর পেস্ট আর ট্যিসু শেষ। কাল একটু নিয়ে এসো। বুজছো? কি হলো বুঝছো?
কমলীকা মনের-সাথে তখন- কথা বলাায় ব্যস্ত দ্বা য়িত্বের খাতায় আগামীকালের স্বাক্ষরটা দিতে হবে।
নীলিকা নীলাচল ***