পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ কানাডা প্রতি বছর হাজার হাজার ইমিগ্রান্টদের স্বাগত জানাচ্ছে। গত ১৫ই অক্টোবর ২০১৮ অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো ১০২ তম এক্সপ্রেস এন্ট্রির ড্র। এতে সর্বনিম্ন সিআরএস স্কোর ছিল ৪৪০, আর আইটিএ পেয়েছে মোট ৩৯০০ জন। ২০১৮ সালের এই ১০ মাসে মোট ৭০,৩০০ জন আইটিএ পেলো। কানাডা মূলত অভিবাসীদেরই দেশ। এদেশের প্রথম আদিবাসী রেডইন্ডিয়ানরাও মূলতঃ এসেছিলো অভিবাসী হয়েই । তারপর ফ্রেঞ্চ, ইংলিশ সহ বিভিন্ন ইউরোপিয়ান , আফ্রিকান, এশিয়ান, ক্যারিবিয়ান, আরব সহ সব দেশেরই অভিবাসী বাস করে কানাডায় । কানাডার অভিবাসন নীতিমালা প্রতি নিয়ত প্রয়োজন অনুযায়ী পরিবর্তিত এবং আধুনিক হচ্ছে। আর তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালের জানুয়ারী মাস থেকে কানাডার অর্থনৈতিক অভিবাসন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ ওয়েব নির্ভর এক্সপ্রেস এন্ট্রির মাধ্যমে হয়ে থাকে। এর মাধ্যমে সারা পৃথিবী থেকে যোগ্য ব্যাক্তিরা কানাডায় অভিবাসনের আবেদন করে থাকে। এই প্রক্রিয়ায় কম্প্রিহেন্সিভ রাঙ্কিং সিস্টেম বা সিআরএস এর মাধ্যমে সারা বিশ্ব থেকে যোগ্য অভিবাসী প্রার্থীদের বাছাই করা হয়। মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে পয়েন্ট ভিত্তিক অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক এই পদ্ধতির মাধ্যমে মোটামুটি ভাবে প্রতি ১৫ দিন পর পর সমগ্র বিশ্ব থেকে ৩৫০০ থেকে চার হাজারের কাছাকাছি অভিবাসী বাছাই করা হয়। প্রাথীদের বয়স, ভাষাগত এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা, কাজের অভিজ্ঞতা এগুলোর উপর পয়েন্টস থাকে। এছাড়াও প্রাথী বা তাঁর স্পাউস এর আপন ভাই বা বোন থাকলে, ইংরেজির পাশাপাশি কানাডার দ্বিতীয় অফিসিয়াল ল্যাংগুয়েজ ফ্রেঞ্চ স্কিল থাকলে , কানাডার ভিতরের কোনো উপযুক্ত জব অফার থাকলে বা প্রভিন্সিয়াল নোমিনেশন থাকলে সিআরএস (কম্প্রিহেন্সিভ রাংকিং সিস্টেম) স্কোর বাড়ানো সম্ভব। জব অফার এখন আর আগের মতো পার্মানেন্ট জব অফার না হলেও চলবে এবং এলএমই আ ভ্যালিডেটেড হওয়াও লাগবে না।
বর্তমানে কানাডার উপযুক্ত জব অফারের জন্য মাত্র ৫০- ২০০ পয়েন্ট (জবের এনওসির উপর নির্ভর করে) করা হয়েছে আর প্রভিন্সিয়াল নোমিনেশন এর পয়েন্ট করা হয়েছে ৬০০ পয়েন্ট। আর সিআরএস পয়েন্টসই সর্ব সাকুল্যে ১২০০। কাজেই জব অফারের সোনার হরিণের পিছনে টাকা আর সময় নষ্ট না করে, অন্য কথায় কানাডিয়ান জব অফারের নামে প্রতারণার ফাঁদে পা না দিয়ে প্রভিন্সিয়াল নোমিনেশন এর চেষ্টা করুন। ইদানিং কানাডার ইমিগ্রেশনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে প্রভিন্সিয়াল নমিনী প্রোগ্রাম। এদেশে সাংবিধানিক ভাবেই কেন্দ্রীয় এবং প্রভিন্সিয়াল সরকার প্রয়োজন অনুযায়ী তাদের নিজস্ব ইমিগ্রেশন পলিসি তৈরী করে। আর তাই কানাডার ফেডারেল ইমিগ্রেশন ছাড়াও আরো নয়টি প্রভিন্স এবং তিনটি টেরিটোরির দুটি টেরিটোরিই তাদের নিজস্ব ইমিগ্র্যাশন প্রোগ্রামের মাধ্যমে অভিবাসী নিয়ে থাকে। প্রভিন্সিয়াল নোমিনেশন একজন প্রার্থীকে ৬০০ এক্সট্রা পয়েন্টস দেয় ; ফলে খুব সহজেই ফেডারেল ইমিগ্র্যাশন পাওয়া যায়। প্রভিন্সিয়াল নোমিনেশনে পাওয়ার ৬০ দিনের মধ্যেই ফেডারেল ইমিগ্রেশনের আবেদন করতে হয়। কানাডার দশটি প্রভিন্স– অন্টারিও, ক্যুবেক, ব্রিটিশ কলম্বিয়া, মানিটোবা, সাস্কাচেওন, আলবার্টা, , নোভাস্কোশিয়া, নিউব্রান্সউইক, প্রিন্স এডওয়ার্ড আইল্যান্ড এর মধ্যে একমাত্র কুইবেক ছাড়া সব কয়টি প্রভিন্সেই এবং তিনটি টেরিটরি নর্থ ওয়েস্ট টেরিটরি, নুনভাট এবং ইউকন এর মধ্যে একমাত্র নুনভাট ছাড়া সব জায়গাতেই প্রভিন্সিয়াল নমিনী প্রোগ্রাম চালু আছে। কুইবেক প্রতিবছরই আলাদা ভাবেই বিভিন্ন প্রোগ্রামে অভিবাসী নিয়ে থাকে। কানাডার একমাত্র প্যাসিভ ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম শুধুমাত্র কুইবেকেই আছে যার মাধ্যমে তারা প্রতি বছর সারা বিশ্ব থেকে বিসনেস ইনভেস্টর ক্যাটাগরি তে অভিবাসী এনে থাকে। এছাড়াও কুইবেক তাদের নিজস্ব সিএসকিও সার্টিফিকেটের মাধ্যমে প্রতি বছরই বিভিন্ন ক্যাটেগরিতে অভিবাসী আনে।
কানাডার দশটি প্রভিন্স এবং তিনটি টেরিটোরিই নিজস্ব বৈশিষ্ট্যে বৈশিষ্ট মন্ডিত। এখানকার অপেক্ষাকৃত কম জানা ছোট ছোট প্রভিন্সগুলোতে লোকসংখ্যা একেবারেই কম। যাঁরা আছেন তাঁদের অধিকাংশই সিনিয়র সিটিজেন। টরেন্ট , কুইবেক বা ভ্যানকুভার এর নাম অনেকেরই জানা কিন্তু এই কানাডাতেই আরো যেসব অপেক্ষাকৃত কম জানা প্রভিন্স বা টেরিটরি আছে সেগুলিও বিশেষ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে , সম্পদে ভরপুর। এসব জায়গাগুলোতে যেহেতু অভিবাসীদের আনাগোনা কম, তাই এইসব প্রভিন্সিয়াল সরকার বিভিন্ন ভাবে অভিবাসীদের আকৃষ্ট করার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে। এই যেমন ধরুন নিউফাউন্ডল্যান্ড এন্ড ল্যাব্রাডোর , সংক্ষেপে নিউফাউন্ডল্যান্ড। এটি কানাডার সর্ব উত্তরের এবং সর্ব কনিষ্ঠ প্রভিন্স। এটি আগে একটি আলাদা ডোমিনিওন ছিল। অপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মন্ডিত সমুদ্র তীরবর্তী এই দ্বীপ তেল ও গ্যাস সম্মৃদ্ধ। আর তাই এই প্রভিন্সটি পর্যটন, তেল ও গ্যাস শিল্পের ব্যাপক প্রসার ঘটিয়ে নতুন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছে। অক্টোবরের ২৫ তারিখে এখানকার মিনিস্টার অফ অ্যাডভান্সড এডুকেশন এন্ড স্কিলস মিস্টার হকিন্স জানান ২০১৭ সালের তুলনায় ২০১৮ সালে এই প্রভিন্সএ অভিবাসন বেড়েছে ২৫ পারসেন্ট। ২০১৮ সালের দশমাসেই সেখানে মোট ৮৩২ জন অভিবাসন পেয়েছে। একানকার মানুষ অভিবাসীদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত। যে কোনো প্রয়োজনে তারা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। ২০১৫ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছর মেয়াদী বিশেষ পরিকল্পনার মাধ্যমে এখানকার সরকার অভিবাসীদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছে। এছাড়াও তারা আটলানটিক ইমিগ্রেশন পাইলট প্রোগ্রামের মাধ্যমেও অভিবাসী আনছে।
রবার্ট ফ্রস্টের বিখ্যাত কবিতা “দি রোড নট টেকেন ” এর ভাষায় কানাডায় অভিবাসন প্রার্থীদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই- ছোট ছোট প্রভিন্স গুলো থেকে নোমিনেশন নিয়ে আপনার সিআরএস স্কোর বাড়িয়ে ফেলুন যা কানাডায় আপনার অভিবাসন প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করবে। টেক দি রোড লেস ট্রাভেলড বাই আর এটিই আপনাকে সবার মাঝ থেকে আলাদা করবে । প্রভিন্সিয়াল নোমিনেশন নেওয়ার পথে আইটিএ প্রার্থীদের আনাগোনা কম, চেষ্টা করুন, এসে যেতে পারে আপনার কাঙ্খিত ইনভিটেশন টু এপলাই। এপ্রসঙ্গে আরো বেশি জানতে চাইলে ইমেইল করুন–
মাহমুদা নাসরিন , RCIC
ক্যানবাংলা ইমিগ্রেশন সার্ভিসেস, টরেন্টো, কানাডা
I am interested to become Canadian Immigrant. Kindly provide me the simple process.
I have 2 daughters
( 18 and 25)
Student of
O level and BBA
I am 52 & widow. Also a service holder.
Thank you Nazma for your note. Please send a detailed c.v. to [email protected]