আমি তো মরেছিলাম পৃথিবীর প্রথম যুদ্ধেই
হাবিল কাবিলের হিংসে আর কুরুক্ষেত্রর দাবানলে
নশ্বর শরীর হয়েছিল মাংসপিন্ড।
উহুদের ধুধু প্রান্তর থেকে লঙ্কার রাবনের শিরচ্ছেদ-
নেপোলিয়নের বন্দুক আর বিশ্বযুদ্ধের দামামা
মারতে পেরেছে কেবল আমার মত সাধারন মানুষদের।
দিন এনে দিন খেয়ে যাদের জীবনধারণ,
যার রাজনীতি ও অর্থনীতির সমাপ্তি হয় ভাতের প্লেটে।
মৌলিক অধিকার যেখানে ক্ষমতা ও অর্থলোভীদের
বুটের নিচে পড়ে গুড়িয়ে যায়।
সেখানে মূক ও বধিরসম দুর্বল জনগনের
প্রানের দাম এক কড়িও হয় না।
যুদ্ধ শেষ হয়, একদল জেতে একদল হারিয়ে যায়
বিজয়ীর দ্বারা লিপিবদ্ধ ইতিহাসের পাতায়
আমি ও আমরা কেবল একটা সংখ্যা হয়েই রয়ে যাই।
একাত্তরে শহীদ হয় ত্রিশ লক্ষ বাঙালী।
সেই ত্রিশ লক্ষের আমিও একজন,
একজন মা, বোন না হয় কারও প্রেমিকা-
গুটিকয়েক ক্ষমতাবানদের যুদ্ধের সিদ্ধান্তে
দাবার গুটির মত প্রাণ দিতে হয়েছিল।
সম্ভ্রম তো হারিয়েছিলাম তারও আগে-
কৈ তোমরা তো কেবল নেতাদের কথাই বল
আমার নামটাও তো তোমাদের জানা নেই।
অশরীরী বানশির মত ছুটছি কেবল
আয়ারল্যান্ড থেকে আর্জেন্টিনায়
অদৃশ্য কায়া নিয়ে দৃশ্যমানদের ভীড়ে
সবাক জনগনের নির্বাক সঙ্গী হয়ে।
মানবসকল আমার অস্তিত্বে ভীত,
অপঘাতের মৃত্যুর এই উপহার
অসমাপ্ত কাজের চাপে অতৃপ্ত আত্মা
অন্ধ মানবকুলের আত্মবিধ্বংশী ভাঁড়ামো
মানুষ হয়ে মানুষের প্রান কেড়ে নিয়ে
তৈরী করা নষ্ট অট্টালিকায় বন্দি মগজে
যা কিছু সহজ সরল আর সুন্দর
পিছলে যাচ্ছে আঙুলের ফাঁক দিয়ে-
“সুখ” পালিয়ে যাচ্ছে মনের অগোচরে
অধরা সেই “সুখে”র পেছনেই ছুটছো তোমরা
মোটা বুদ্ধি, অলস, স্বার্থপর ও জ্ঞানহীন মানুষ।
টরন্টো, ২৪ জুলাই, ২০২০