রাত প্রায় দশটা বাজে। মহুয়াদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে বাস রাস্তায় গিয়ে দাঁড়ায় নিখিলেশ। দ্যাখে, জোৎস্নার উজ্জ্বল আলোয় ঝলমল করছে আকাশ। শুভ্র মেঘের স্তূপগুলো যেন দৌড়াচ্ছে। ঝুরু ঝুরু মৃদু শীতল হাওয়া বইছে। রাস্তায় লোকজন খুব একটা দেখা যাচ্ছে না। দু’চারটে ক্যাপ, যাত্রীবাহী বাস, বড় বড় ট্রাক হাওয়ার বেগে ছুটে যাচ্ছে। শহরের ব্যাপারিরা সব বস্তায় বস্তায় কাঁচা শাক-সব্জি ঠেলাগাড়িতে ভরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। তার পিছন পিছন যাচ্ছে অটোরিক্সা।
ইতিমধ্যে তৈরী হয়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসে মহুয়া। নিখিলেশ বলল,-‘সাজ-গোছ হলো আপনার! অনেক দেরী করে ফেললেন। হাঁটতে শুরু করলে এতক্ষণে অনেকটা পৌঁছি যেতাম।’
শাড়ির আঁচলে গাটা ঢেকে নিয়ে মহুয়া বলল,-‘গেলেই বা, আমরা তো আর হেঁটে যাচ্ছি না।’
গম্ভীর হয়ে নিখিলেশ বলল,-‘ম্যাডাম, ক’টা বাজে খেয়াল আছে আপনার! এতক্ষণে কোথায় যাবেন বলুন তো! এখনও একটা ট্যাক্সি নজরে পড়লো না।’
পলকমাত্র দৃষ্টিপাতে মহুয়া লক্ষ্য করলো, বির্বণ মুখে দাঁড়িয়ে আছে নিখিলেশ। সন্ধানি দৃষ্টিতে চোখদুটো ওর চড়কির মতো ঘুরছে চারিদিকে। কিন্তু ভিতরে ভিতরে ও’যে অস্বস্তিবোধ করছে, অস্থীর হয়ে উঠছে, সেটা বোধগম্য হতেই প্রচন্ড রাগ হয় মহুযার। গম্ভীর হয়ে বলল,-‘মশাই, এতোই যদি তাড়া ছিল, চলে গেলেই তো পারতেন। কে বলেছিল রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকতে!’
শাড়ির আঁচলটা টেনে আঙ্গুলে মোড়াতে মোড়োতে বলে,-‘কেন যে এলেন, আর কেনই বা চলে যাবার জন্যে অস্থীর হয়ে উঠলেন, বুঝতে পারছি না। আসলে, দোষ আমারই। অযথা আপনাকে ডিটেন করে রেখে….! নাঃ, আমি বরং ফিরেই যাই নিখিলেশ বাবু! আপনি চলে যান।’
মহুয়ার বিষাদাচ্ছন্ন মুখের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করতেই নিমেষে মোমের মতো গলে নিখিলেশ একেবারে নরম হয়ে যায়। নিঃশব্দে হেসে স্বাভাবিক গলায় বলল,-‘না, না, তা কি করে হয়! বেরিয়ে যখন পড়েছি, দেখাই যাক্ না! ততক্ষণে আমরা হাঁটতে থাকি। বাইরে আবহাওয়াটা বেশ দারুণ লাগছে। সুন্দর মিহিন বাতাস, আমোদিত হয়ে আছে রংবেরং-এর ফুলের সৌরভে। গগনের পশ্চিম প্রান্তর জুড়ে রেশমী জোছনার উজ্জ্বল আলোয় ঝলমল করছে। খুব ফ্রেস লাগছে! সজীব, সতেজতায় মন-প্রাণ একদম চাঙ্গা হয়ে উঠছে। ফিল করতে পারছেন মিস্ ব্যানার্জী?’
বলে কোণা চোখে তাকায় নিখিলেশ। মহুয়াকে স্বাভাবিক লাগছে। কিন্তু ওর আভ্যন্তরীণ একটা তাৎপর্য্য নজর এড়ায় না নিখিলেশের। মনে মনে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফ্যালে।
হঠাৎ দৃষ্টি বিনিময় হতেই মুখ টিপে নিঃশব্দে হেসে ফেলল মহুয়া। ইতিপূর্বে উচ্ছাসিত চোখে চারদিকে একবার নজর বুলিয়ে নিখিলেশ বলল,-‘আচ্ছা এদিকে আশেপাশে একটা সিনেমা হল্ ছিল না! গেল কোথায়? দেখছি না তো!
চোখ পাকিয়ে তাকায় মহুয়া। রসিকতা করে বলল,কেন? যাবেন না কি সিনেমা দেখতে? কিছুক্ষণ আগে বাড়ি যাবার জন্যে তো খুউব ছটফট করছিলেন। এখন দেরী হচ্ছে না আপনার!
-‘কি যে বলেন না! সিনেমা দেখবার এখন সময় কোথায়! দেখছি না, তাই জানতে চাইছিলাম। কিছুক্ষণ থেমে বলে,- আপনাকে একটা কথা জিজ্ঞ্যেস করবো?’
মাথা নেড়ে মহুয়া বলল,-‘হ্যাঁ করুন না! তার জন্য আবার অনুমতি নিতে হয় না কি!’
অস্ফূট হাসলো নিখিলেশ। খানিকটা বিস্ময় নিয়ে জিজ্ঞাস্য দৃষ্টিতে বলল,-‘আপনি সব কথায় এতো সিরিয়াস হয়ে যান কেন বলুন তো! এটা কি আপনার হ্যাবিট না অন্যকিছু?’
-‘মানে? হোয়াটস্ ইওর পয়েন্ট?’
-‘না মানে, আমি বলছিলাম, এই যে কথায় কথায় আপনার চটে যাওয়া, মুখ গোমড়া করে থাকা। এসেছি পর্যন্ত আপনাকে প্রাণ খুলে একবারও হাসতে দেখলাম না।’
গম্ভীর হয়ে মহুয়া বলল,-‘তা বলে মানুষ অকারণে হাসে বুঝি! গব সময় হি হি করাটা কি ঠিক? মোটেই ভালো দেখায় না। বিশেষ করে মেয়েদের।’
বলে বড় বড় চোখ পাকিয়ে সবিস্ময়ে নিখিলেশের আপাদমস্তক নজর বুলাতে থাকে।
মনে মনে হতস্ততবোধ করে নিখিলেশ। ফিক্ করে বিষন্নময় একটা হাসি হেসে বলল,-‘আর্শ্চয্য, হোয়াট্স রং মিস্ ব্যানার্জী? আপনি অমন করে কি দেখছেন? আবার কোনো ভুল হয়ে গেল না কি!’
-‘না, ভুল নয়। তবে একটা কথা, ভাবতে আমার ভীষণ অবাক লাগছে! আমি তো বিশ্বাসই করতে পাচ্ছি না। বাইরে থেকে দেখে কে বলবে আপনার মস্তিস্কের মধ্যে এত্তো সব কাজ করে!’
-‘কেন করবে না? ডাক্তারদের বুঝি হৃদয় নেই? আবেগ-অনুভূতি নেই? আরে বাবা আমিও তো একজন রক্তে-মাংসে গড়া মানুষ, না কি!’
-‘বলছেন! আমি তো ভাবলাম……! সী, ঠিক এই কথাটিই আমি বলতে চেয়েছিলাম।’
– ‘নাউ কাম্ টু দা পয়েন্ট।’
-‘কাম্ টু দা পয়েন্ট? হোয়াট ডু ইউ মীন? আপনি কি বলতে চাইছেন নিখিলেশ বাবু?’
মহুয়ার অস্বাভাবিক মুখাবয়ব লক্ষ্য করে প্রসঙ্গ পরিবর্তন করার চেষ্টা করে নিখিলেশ। ফিক্ করে একটা অস্ফূট হাসি হেসে বলল,-‘নাথিং ম্যাডাম! এবার একটু জোরে পা চালান দেখি।’
হাঁটতে হাঁটতে কখন যে বালিগঞ্জের সারকুলার রোড্টা পেরিয়ে এসেছিল, খেয়ালই করেনি। হঠাৎ বিকট শব্দে একটা ট্যাক্সি এসে দাঁড়াতেই দুজনেই চমকে ওঠে। মহুয়ার মুখের দিকে একপলক চেয়ে নিখিলেশ বলল,-‘চলুন, ঘুরেই আসি গিয়ে!’
তক্ষুণি ট্যাক্সিতে উঠে ড্রাইভারের পিছনের সীটে পাশাপাশি দুজনে বসে পড়ে। ড্রাইভার বলল,-‘কিধার জায়েঙ্গে সাহাব?’
-‘সিধা চলো ভাই। যাতে যাতে রাস্তেমে কোই আচ্ছাসা রেষ্টুরেন্ট মিল জায়ে তো হামলোগ উতার জাউঙ্গা।’
-‘ও.কে সাহাব। জ্যায়সা আপ কহেঙ্গে।’
রাস্তা ফাঁকা। গাড়ি হাওয়ার গতিতে চলছে। রাস্তার দোকানগুলি তখনও খোলা। গলা টেনে দুজনেই দেখতে লাগল, কোথাও একটা আভিজাত রেস্তরাঁ নজরে পড়লো না। প্রায় কুড়ি মিনিট পর সেন্ট্রাল কোলকাতার বিবিডি বাগের গ্রেট-ইষ্টার্ণ হোটেলের সামনে এসে ড্রাইভার বলল,-‘সাহাব, আপলোগ ইধার উতার যাইয়ে। অন্দরমে আচ্ছাসা এক রেষ্টুরেন্ট হ্যায়। সাথমে কেবিন ভি-ই।’
-‘হাঁ, হাঁ, মুঝে মালুম হ্যায়। এহি-ই রুকো।’
ভাড়া মিটিয়ে ট্যাক্সি থেকে নামতেই মহুয়ার স্নিগ্ধ কোমল সতেজতা, উচ্ছলতা এবং প্রাণবন্ত পদচারণায় চুম্বকের মতো দৃষ্টি আকর্ষণে নিখিলেশকে অত্যন্ত চমৎকৃত করে। বিস্ময়ে একেবারে অভিভূতের মতো হাঁ করে থাকে। মনে মনে বলে, -বাহঃ বেশ লাগছে তো মহুয়াকে! যেন সাক্ষাৎ দেবী। অবিকল দূর্গা প্রতিমার মতো দেখাচ্ছে। এ যেন ভুবনমোহিনী হৃদয়হরিনী মায়াবিনি এক বিদূষী নারী। স্বয়ং বিধাতাই যেন তাঁর অকৃপণ নিপুণতা ঢেলে ওকে গড়েছেন। নিখিলেশের পরম আকাক্সিক্ষত মন-বাসনার এক রূপ। আশ্চর্য্য, ওর স্বপ্নের সেই রাজকুমারীই বটে। তবু যেন বিশ্বাস হয় না নিজের চোখদুটোকে। নিখিলেশ পলকহীন নেত্রে চেয়ে থাকে আর ভাবে, মায়া মরীচিকা নয়তো! সবটাই কি বাস্তব, না ওর মনের ভ্রম! কিন্তু এতক্ষণ তো ওর নজরে পড়েনি!
কি যেন বলতে চাইছে নিখিলেশ কিন্তু বলতে পারছে না। আকস্মিক কাক্সিক্ষত মন-বাসনায় আপাদমস্তক ওর অদ্ভুদ একটা শিহরণে খেলে গেল। সে এক নতুন বিস্ময়। এক অভিনব অনুভূতি। জেগে ওঠে পুলক। বিকশিত হয় ওর মন-প্রাণ সারাশরীর। অথচ এতকাল বিদেশে একাকী বসবাস করেও কোনো শ্বেতাঙ্গ মহিলার সংস্পর্শে যাবার কখনো সুযোগই হয় নি। বিশেষ করে প্রণয়মূলক ব্যাপারে একেবারে আনাড়ী। তেমন এ্যাক্সপার্টও নয়। কোনো ধারণাই ওর নেই। আর হবেইবা কেমন করে! সুকোমল যৌবনের প্রারম্ভকাল থেকে একটি একটি করে আঠাশটি বসন্ত পেরিয়ে এসেও তেমন গভীরভাবে ভাববার কখনো অবকাশই পায় নি। অথচ সুদীর্ঘ সাত বছরে ইউরোপীয় সভ্যতা ও সংস্কৃতির কোনো প্রভাব ওর মধ্যে পড়ে নি। কোনো প্রতিক্রিয়া ঘটে নি। ওকে চমকিতও করেনি। দিনের শেষে সূির্য্যমামা অস্তাচলে ঢলে পড়লেই গিরগিটির মতো বদলে যায় শহরের রঙ, রূপ। বদলে যায় মানুষের মন-মানসিকতা। সে এক অভিনব বৈচিত্র্যের সমাহারে ছেয়ে যায় শহরের চারদিক। রাতের অন্ধকার ঘনিয়ে এলেই ধীরে ধীরে উন্মোচণ হতে থাকে, শ্বেতাঙ্গ পরীদের রহস্যাবৃত রূপ আর চমকপ্রদ প্রসাধনের বাহার। যখন অবিরল রঙের ধারায় ঝিকিমিকি আলোর মতো গাঢ় হয়ে ফুটে ওঠে। শুধু বস্তুই নয়, ব্যক্তি বিশেষেও। যখন সৌন্দর্য্যরে পারিজাত এবং তিলোত্তমা উর্বশী রমণীর বিমুগ্ধ রূপের দর্শণে চুম্বকের মতো আর্কষণ করে প্রতিটি মানুষকে, মানুষের হৃদয়কে। সে এক বর্ণনাতীত মোহময় আর্কষণ। তাতেও কোনো ভাবে নিখিলেশকে বিভ্রান্ত করতে পারে নি। মুহূর্তের জন্যেও কখনো ওর মনকে বিগলিতও হয় নি।
কিন্তু আজ মনের অগোচরেই ক্ষণপূর্বের তীব্র ভালোলাগার আবেশ মুহূর্তে ওর হৃদয়কে স্পর্শ করে। জাগ্রত হয়, এক অভিনব অব্যক্ত আনন্দ সঞ্চার হবার একটা তীব্র অনুভূতি। যা পূর্বে কোনদিন ঘটে নি। শুনতে পায় ওর প্রাণস্পন্দন। সে এক সম্পূর্ণ নতুন চেতনা, নতুন বিস্ময়। ওকে ক্রমশ উৎসুক্য করে তোলে এক অভিনব ইচ্ছা, আবেগ-অনুভূতি। আর তখনই রোমহর্ষক একটি কোমল শিহরণের ধাক্কা এসে লাগে ওর অন্তরের অন্তরস্থলে। ভিতরে ভিতরে চমক লাগে নিখিলেশের। মনে মনে বলল,-এর নামই কি প্রেম, ভালোবাসা! ভালোবাসায় এতো সুখ! এতো আনন্দদায়ক! ক্ষণপূর্বেও তো কল্পনা করে নি।
হঠাৎ দৃষ্টিগোচর হয়, উচ্ছাসিত মহুয়া আবেগে আপ্লুত হয়ে কিছু বলার ব্যকুলতায় ক্রমশ অস্থীর হয়ে উঠছে। উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো ওর চোখদুটোও জ্বলজ্বল করছে। উল্লাসে ঝোরে পড়ছে আবেগ, উচ্ছাস। অথচ তখন ওরা দুজন দুই পৃথিবীর বাসিন্দা। ক্ষণিকের ভালোলাগা ও মুগ্ধতার আমেজ দেহে, মনে ছড়িয়ে পড়লেও দুজনের কেউ কারো মনের খবর কাউকে জানতে দিলো না। বুঝতে দিলো না। মনে মনে অব্যক্ত আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে উঠলেও রুচীগত সৌজন্যে ক্ষণিকের অব্যক্ত ভালোলাগার সঞ্চিত আবেশটুকু এক অদৃশ্য অনুভূতিতে গেঁথে রাখে নিখিলেশ। নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করে। অস্ফূট খুশীর আমেজে রাতের গ্রহ তারা নক্ষত্রভরা আকাশের পানে একপলক চেয়ে পকেট থেকে একটি ৫৫৫ সিগারেট বের করে অগ্নিসংযোগে পুরুষালি মেজাজে টান দিতে দিতে মিশ্রব্যক্তিত্বে ধীর পায়ে এগিয়ে যায় গ্রেট ইষ্টার্ণ হোটেলের করিডোরের দিকে।
মহুয়া কিছুই টের পেলো না। অথচ নিখিলেশকে এতো কাছে পেয়েও ওর মনকে আজ একটিবারও নাড়া দিলো না। কোনো ভাবান্তর হলো না, অনুশোচনাও হলো না। ও’ সম্পূর্ন নির্বিকার। হয়তো ভুলেই গিয়েছে, একদিন ও’ও নিখিলেশকে মনে-প্রাণে ভালোবেসে ছিল। ওকে একান্ত আপনার করে পাবার আশায় মরিয়া হয়ে ছুটে
গিয়েছিল, মামাতো দিদি শুভ্রার শ্বশুড়বাড়িতে। কিন্তু পারে নি নিখিলেশের সামনে গিয়ে দাঁড়াতে। পারেনি ভালোবাসা শব্দটি মুখফুটে উচ্চারণ করতে। পারেনি নিজেকে স্বেচ্ছায় ধরা দিতে। পারেনি বলেই মহুয়ার হৃদয় থেকে সেই একান্ত ভালোবাসার ফুলটি অনাদর অবহেলায় ঝোরে গিয়েছিল। অথচ আজ একবারও সেকথা ওর মনে পড়ছে না। মনে পড়ছে না, যেদিন নিখিলেশকে হারিয়ে কি অপরিসীম বেদনায় মনের কষ্টগুলি তরল হয়ে অঝোর ধারায় অশ্রু প্লাবনে ওর মন থেকে প্রায় মুছেই গিয়েছিল জীবনের স্বপ্ন, আশা,আকাংক্ষা, কামনা বাসনা সব। যখন বন্ধুর বেশে মিথ্যে আশ্বাস দিয়ে জীবনকে নতুন করে সাজাবার ইচ্ছা জাগিয়ে ছিল হবুস্বামী জয়ন্ত রায়চৌধূরী। যার মিথ্যে ভালোবাসায় অন্ধের মতো দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরে স্বপ্নের জ্বাল বুনে অপেক্ষা করে আছে শুভ পরিণয়ের শুভদিনের শুভ মুহূর্তের জন্য। জয়ন্তই ওর জীবনের একমাত্র আশা, ভরসা, বিশ্বাস, ভালোবাসা সব। কিন্তু বিধির বিধান খন্ডাবে কে! এ তো মানুষের নিয়ন্ত্রের বাইরে। যা স্বপ্নেও কল্পনা করেনি। কল্পনা করতে পারেনি, অনাগত দিনে কি ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে। কখনো কল্পনা করতে পারেনি, জয়ন্তকে ভালোবাসার চরম পরিণতি কত নিষ্ঠুর, নির্দয়, কত অসহনীয়, কত যন্ত্রণাদায়ক।