ভোর রাত থেকে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি
আর এখন..
বড্ড বেশী এলোমেলো ঝরা সকালের এই বাতাস
যখন তুই আমার ছিলি
এমন বাতাসকে আমার খুব হিংসে হতো
আমার আগেই
তোর বুকের গন্ধ, আঁচলের ওম
গ্রীবার ধারায় ফোঁটা মুক্তো রাশির স্রোত..
সব লুন্ঠন করে নিয়ে যেত
আমারও খুব ইচ্ছে হতো
ঐ বাতাসের মত, বুর্জোয়া লুটেরাদের মতো
ইচ্ছে হতো..
তোর সর্বস্ব লুট করে নিব কোন একদিন
নাহ্..
তবে লুট করে ওদের মত কখনো পালিয়ে যেতাম না
তোর বুকের বাম পাশটিতে পড়ে থাকতাম দীর্ঘ দীর্ঘ সময়
আরও আরও গভীরে পৌঁছে গিয়ে কান পেতে শুনে নিতাম
তোর হৃৎপিণ্ডের আন্দোলনে দ্রুত নিঃশ্বাসের তান
কিন্তু সব কিছুতেই আমার যে খুব দেরী হয়ে যায়
কড়ি খেলায় উন্মত্ত এই পৃথিবীতে
মানুষ তো আর এখন ঈশ্বরে প্রণতি করে না
ভালোবাসাকেও না
শুধু অর্থ আর প্রতিপত্তি হিমাচলের মত
সবকিছুর সামনে এসে মাথা তুলে দাঁড়ায়
এই সহজ সত্যটা যখন বুঝতে শিখলাম
ততদিনে তুই আর আমার থাকলি না..!
মাঝে মাঝে আমার খুব জানতে ইচ্ছে হয়
ঊষা মন্দিরের প্রার্থনায়
করজোড় আনত মস্তকে তোর ঐ প্রণামে
কোন বাসনায় তুই এমন আচ্ছন্ন হয়ে থাকিস..?
জীবনের কাছে এখন আর আমার কোন চাওয়া নেই
কোন ভবিষ্যত নেই..
বর্তমান..?
তাও না
আমার সবটুকু কেমন যেন অতীত
যখন তুই ছিলি আমার সব শুদ্ধতায়..
আমার সব সমর্পণে..
যখন তুই ছিলি..
আষাঢ়ী মেঘের তুমুল বৃষ্টিতে
অশ্বত্থের পাতায় সুর ছিলো
আমার রোদ মাখা ডানায়
নীল জল সমুদ্র গাহন ছিলো
গ্যালাতিয়ার মূর্তি গড়ব বলে
হাতে কাদা জল মাটি ছিলো..
এখন আর কিছু নেই…!
এখন এই কবিতার দেহের মতন
নিজেকেই শুধু ভেঙে ভেঙে গড়া
এখন কৃষ্ণ পক্ষ হিমাংশুর মত
মন ভূমির প্রান্তরে তোর ছায়া
ক্ষয়ে যেতে দেখা
এখন সূর্য বিমুখ এমন শ্রাবণ দিনে
তোর বুকের আগুন খুঁড়ে কখনো
হঠাৎ আবার লুটেরা হবার সাধ জাগা
অন্যায় কেন ভাবছিস..?
সব ই তো নিয়ে গেছিস
এমন কি
অনুশাসনের তোর ছোট্ট সেই পান্ডুলিপি খানাও
সুতরাং..
এমন তো আমি হ’তেই পারি এখন।।
ফরিদ তালুকদার / জুন ৬, ২০১৯