গতকাল বিকাল ৩টার সময় ইস্কুল থেকে ফেরার পথে মা তার ৩ বাচ্চাকে নিয়ে তাদের বিল্ডিং এর পিছন দিক দিয়ে ঢুকছিলেন। এসময় হটাৎ করে ৮ তালা থেকে একটি AC একটি ৩ বছরের বাচ্চার স্ট্রোলারের উপর পড়ে। ৯১১ কল করলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আজ সকালের খবরে বলা হয় সে তার ইনজুরি থেকে মারা গেছে (ইন্না…..) . খুবই দুঃখজনক খবরে সকাল শুরু হলো।
ওই বিল্ডিংয়ে ঠিক ওই দরজা দিয়ে আমরা অনেক সময় যাই, কারণ ওই দিক থেকে পার্কিং লট কাছে।
উলেখ্য, ওই বিল্ডিংয়ে আমাদের এক ভাগ্নে (রাজ্) থাকে। তার বয়স ১০ বছর। ওই ঘটনার সময় সে ঠিক ওই পরিবারের পিছনে ছিলো। ও কিছুটা ভয়ও পেয়েছে। পরে বাসায় গিয়ে পুলিশ তার কাছ থেকে ঘটনা জানার চেষ্টা করেছে।
যাহোক আমি শুধু খবরটি দেওয়ার জন্য লিখিনি। যে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারে লিখছি সেটা হলো তার (রাজ্) এই ঘটনা দেখার আতংক এবং সম্ভাব্য PTSD বা পোস্ট ট্রমাটিক ডিসঅর্ডার। এটি একটি মানসিক রোগের নাম।
এই ধরণের ছোটখাটো ভয় পেলে অনেক সময় আমরা বাচ্চাকে হজুরের কাছে নিয়ে ঝড়-ফুক দিয়ে নিয়ে আসি। জিনিসটি যদি স্রেফ ভয়ের ব্যাপার হয়ে থাকে তাহলে হয়তো শুধু মাত্র ঝড়-ফুকে ঠিক হয়ে যাবে, কিন্তু সে যদি ওই ঘটনা দেখে ট্রমাটিক হয়ে থাকে তাহলে শুধুমাত্র ঝড়ফুকে কাজ হবে না। এবং এই PTSD সঙ্গে সঙ্গে বোঝা যায় না। তবে পরবর্তীতে খুব বাজে আকার ধারণ করে। আমি গত ১০/১২ বছরে অনেক ক্লায়েন্টের সাথে কাজ করেছি যাদের PTSD তাদের ছোট বেলার কোনো ভয় বা আতংক থেকে, এবং কোনো কারণে সেটাকে ignor করার ফলে তারা এই PTSD নামক মানসিক রোগে আক্রান্ত।
তাই বাচ্চারা কোনো ভয় পেলে বা আতংকিত হলে তাদেরকে অন্তত যথাযত চিকিৎসকের কাছ থেকে চেক করানো ভালো। সবার ক্ষেত্রে যে এরকম হতে পারে তেমন কোনো কথা নেই, তবে prevention সবসমই ভালো। এই PTSD শুধু মাত্র ছোটদের না, সবারই হতে পারে। আপনারা জানেন বা খবরে শোনেন, যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করা সৈনিকদের অনেকেই এই রোগে আক্রান্ত হয় এবং অনেকে আত্মহত্যা পর্যন্ত করে থাকে। তাই সব শেষে বলছি, আপনার বচ্চা কোনো কারণে ভয় পেলে বা আতংকিত হলে, এবং সেটি যদি তার উপর প্রভাব ফেলে তাহলে তাকে ঝাড়-ফুকের সাথে সাথে অবশ্যই যথাযত চিকিৎসকের কাছে নিয়ে চেক করাতে হবে।
সবাই ভালো থাকেন, সবাইকে সৃষ্টিকর্তা ভালো রাখুন।