অনেক সংগ্রাম,অনেক রক্ত, অনেক কাঠ খড় পোড়ানোর বিনিময়ে আমরা বাংলা (আন্তর্জাতিক) মাতৃভাষা পেয়েছি । যারা সংগ্রাম করে, রক্ত দিয়ে, আমাদের মায়ের ভাষাকে উপহার দিয়ে গিয়েছেন, তাদের কাছে আমরা চির কৃতজ্ঞ, চির ঋণী। সালাম, বরকত, রফিক জব্বার, শফিক আরও লক্ষ, লক্ষ ভাই বোন দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছেন তাদের নাম চিরদিন বাঙালীর মুখে মুখে থাকবে। ১৯৪৭ জন্ম থেকে এই জাতি এবং ভাষাকে দাবিয়ে রাখার জন্য পাকিস্তানিরা অনেক চক্রান্ত করে ছিল। কিন্তু আমাদের জাগ্রত রাজনীতিবিদ, ছাত্র–ছাত্রী ও সংগ্রামী জনতা মায়ের মুখের ভাষাকে কেউ কেড়ে নেবে তা মেনে নেয় নি।
পাকিস্তান সৃষ্টি লগ্নে দেশের ৭% লোকের ভাষা উর্দু যা মুঘল আমলে নবাব পরিবারে ব্যবহৃত হতো এবং ৫৬% লোকের ভাষা ছিল বাংলা । কিন্তু পশ্চিমা পাকিস্তানী চক্র বাঙালি মায়ের বাংলা ভাষাকে কেড়ে নিয়ে উর্দুকে রাষ্ট্রীয় ভাষায় মর্যাদা দিতে গিয়ে বার বার বাঙ্গালীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। পশ্চিমা ৭% লোকের নিকট ৫৬% বাঙ্গালীর প্রাণের ভাষা ছিল অতি তুচ্ছ আর মূল্যহীন।
একটু পিছনের ইতিহাস নিয়ে নাড়াচাড়া করলে দেখি, অক্টোবর ৩, ১৯৩৭ লাখনো, ইন্ডিয়া মুসলীম লীগ অধিবেশনে যে আলোচনা হয়েছিলো “Urdu should be language of Bengali Muslims”। তাতে পরিষ্কার বুঝা যায় যে অখণ্ড ভারতের মুসলিম লীগের মেজরিটি সদস্য উর্দু স্পিকিং এবং তারা উর্দু ভাষাকে প্রাধান্য দিয়েছিলো। এমন কি তাদের ভয় ছিল বাঙালিরা এর বিরোধিতা করবে সে জন্য ওরা বাঙালি মেজরিটি জনসংখ্যাকে উর্দু শিক্ষার জন্য গুরুত্ব দিয়েছিলো।
১৮৫৭ সিপাই বিদ্রোহে বহু বাঙালি সেনা ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে অকাতরে প্রাণ দিয়ে এটা প্রমান করে বাঙালিরা কোনো কিছুতেই পিছিয়ে থাকেনি এবং নিজেদের ন্যায্য দাবির জন্য রক্ত দিতে ও দ্বিধা করে নি। তাছাড়া তৎকালীন পূর্ব বাংলায় অসংখ্য নেতা, জ্ঞানী, গুণী মানুষ ও জাগ্রত জনতা ব্রিটিশ সরকারের স্বৈরাচারি নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে ছিল।
মে ১৭,১৯৪৭ পাকিস্তান জন্মের কয়েক মাস পূর্বে হায়দারাবাদে All India Muslim League পুনরায় সিদ্ধান্ত নিয়েছিল পাকিস্তানের ভাষা হবে উর্দু। সেখানে ও পূর্ব বাংলার সংখ্যাগরিষ্ট লোকদের এ ব্যাপারে কোনো মতামত নেয়া হয় নি।
১৪ই অগাস্ট, ১৯৪৭ পাকিস্তান স্বাধীন হওয়ার পর থেকে উর্দু ভাষাকে জাতীয় ভাষা হিসাবে করার জন্য মহম্মদ আলী জিন্নাহ ও তাঁর মুসলিম লীগ তৎপর হয়ে উঠে।
২৩ ফেব্রুয়ারী ১৯৪৮ প্রথম পাকিস্তানের জাতিয় সংবিধান তৈরির জন্য সারা দেশের মুখ্য মন্ত্রী ও রাজনীতিবিদ করাচী একত্রিত হন । সেখানে উর্দু ভাষাকে জাতীয় ভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য আলোচনা উঠলে কুমিল্লা থেকে সংসদ সদস্য মিস্টার ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত একমাত্র (বিশিষ্ট আইনজীবী, যাকে বলা হয় বাংলা ভাষা চ্যাম্পিয়ন) পাকিস্তান জাতীয় অধিবেশন করাচিতে বাংলা ভাষাকে উর্দু ও ইংরেজি ভাষার সঙ্গে অফিসিয়াল ভাষা হিসাবে প্রস্তাব করেন,যদিও তাঁর প্রস্তাব অনেক সমালোচনার মুখে উপেক্ষিত হয়। এমন কি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্য মন্ত্রী নুরুল আমিন সাহেব ও উর্দু ভাষার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন।
২৯ মার্চ ১৯৭১ এই মহান ব্যাক্তি, মিষ্টার ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত কুমিল্লার নিজস্ব বাসা থেকে পাকিস্তান আর্মি গ্রেফতার করে এবং ময়নামতি ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে অত্যাচার করে মেরে ফেলে এবং তার মৃত দেহ ফেরত পাঠায় নি ।
ডক্টর মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেছিলেন উর্দু রাষ্ট্রীয় ভাষার মর্যাদা পেলে ৫৬% বাঙালি রাজনৈতিক ভাবে পাকিস্তানীদের দাসত্ব স্বীকার করতে হবে। তাঁর লিখনীতে জোরালো ভাবে উর্দু ভাষার সমালোচনা করা হয়েছে।
২১ মার্চ ১৯৪৮ , তৎকালীন পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঢাকা পল্টন ময়দানে উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্র ভাষা হিসাবে ঘোষণা দেন ।জিন্নাহ সাহেব তাঁর ভাষণে এও বলেছিলেন যে যারা এর বিরোধিতা করবে তারা দেশের শত্রু । তাহলে পূর্ব পাকিস্তানের সব মানুষ-ই কি পাকিস্তানের শত্রু? তার তিন দিন পর ২৫ মার্চ,১৯৪৮, ঢাকা ইউনিভার্সিটি কার্জন হল এক সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে জিন্নাহ সাহেব উর্দুকে পুনরায় রাষ্ট্র ভাষা হিসাবে ঘোষণা দিলে ছাত্র জনতা না না ধ্বনি দিয়ে চিৎকার করে এই ঘোষণাকে প্রত্যাখ্যান করে।
১১ সেপ্টেম্বর ১৯৪৮ মহম্মদ আলী জিন্নাহ মৃত্যুর পর খাজা নাজিমুদ্দিন পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল হিসাবে শপথ নেন। সে সময় পাকিস্তানের প্রধান মন্ত্রী ছিলেন লিয়াকত আলী খান।
১৯৫০ সনে প্রধান মন্ত্রী লিয়াকত আলী খান ঘোষণা দেন যে পাকিস্তানের এক মাত্র সরকারি ভাষা হবে উর্দু। ১৬ই অক্টোবর ১৯৫১ লিয়াকত আলী খান কে রাওয়ালপিন্ডি এক জন সভায় গুলি করে হত্যা করে এবং তাঁর শুন্য পদে খাজা নাজিমুদ্দিন সাহেবকে প্রধান মন্ত্রী করা হয় এবং গোলাম মোহাম্মদ আলী গভর্নর জেনারেল হন।
২৬ জানুয়ারী১৯৫২ খাজা নাজিমুদ্দিন তৎকালীন পাকিস্তানের প্রধান মন্ত্রী (বাঙ্গালী হওয়া সত্ত্বেও) ঢাকা পল্টন ময়দানের সমাবেশে উর্দু একমাত্র পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় ভাষা হিসাবে ঘোষণা দেন । সে সময় নুরুল আমিন পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্য মন্ত্রী ছিলেন।
নাজিমুদ্দিন সাহেবের এই ঘোষণার পর থেকেই ঢাকা শহরের পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়ে উঠে। ছাত্র জনতা পর পর মিছিল, সভা এবং কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে নানাহ কর্মসূচি নেয়া শুরু করে। এক পর্যায়ে মিস্টার নুরুল আমিন ঢাকা শহরে ১৪৪ ধারা জারি করে এবং ৩০ দিনের জন্য সব ধরণের মিছিল ও সভা সমাবেশ বন্ধ করে দেয় । সে সময় পূর্ব পাকিস্তানের সংসদ ভবন বর্তমান জগন্নাথ হল ঢাকা ইউনিভার্সিটি এরিয়াতে ছিল।
২১ ফেব্রুয়ারী ১৯৫২ ছাত্র ও জনতা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে গেলে পুলিশ ছাত্র ও জনতাকে গুলি করা শুরু করে এতে সালাম ,বরকত, রফিক ও জব্বার শহীদ হন এবং অনেক আহত হন ।
মুখ্য মন্ত্রী নুরুল আমিন সাহেব এতে গুরুত্ব না দিয়ে সারা শহরে কারফিউ দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু ছাত্র জনতা কারফিউ ভঙ্গ করে মিছিল নিয়ে বের হলে ২৩শে ফেব্রুয়ারী ১৯৫২ শফিক শহীদ হন। কিন্তু পাকিস্তানী শাসক গুষ্টির চক্রান্ত এখানেই থেমে যায় নি ।
পাকিস্তানী সরকার পূর্ব পাকিস্তানের পাট রপ্তানির বৈদেশিক মুদ্রা পশ্চিম পাকিস্তানে ব্যবহার করতো । পাকিস্তানের বড়ো বড়ো চাকুরী, সেনাবাহিনী কমিশন রেংকে নিয়োগ সব-ই পশ্চিম পাকিস্তান থেকে দেয়া হতো, বলা হতো পূর্ব পাকিস্তানে যোগ্য ব্যক্তির অভাব। করাচী থেকে রাজধানী ইসলামাবাদ পাহাড় কেটে স্থানান্তরিত করা হলো ।
১৯৫৮ জেনারেল আয়ুব খান দেশে মার্শাল ল দিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা নেন। উনি ক্ষমতায় এসেই অনেকগুলি পদক্ষেপ নেন:
ক) পূর্ব পাকিস্তানে লোকজনকে শহর, গ্রাম, বিল, নালা ডোবা পরিষ্কার করার নির্দেশ দেন। আমি চাঁদপুর পানির দেশের মানুষ যেখানে বর্ষায় খাল , বিল মাঠ সর্বত্রই কচুরি পানা । গ্রামের মানুষ সেনাবাহিনীর ভয়ে ডোবা, নালা, জঙ্গল, রাস্তা ঘাট কচুরি পানা পরিষ্কার করতে শুরু করে।
খ) সে সময় ইউনিয়ন পরিষদের প্রধানকে বলা হতো প্রেসিডেন্ট। তিনি নিজেও প্রেসিডেন্ট আবার ইউনিয়ন প্রধান ও প্রেসিডেন্ট তা হতে পারে না। ওদের উপাদি পরিবর্তন করা হলো চেয়ারম্যান । আমাদের ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সাহেবের বিরুদ্ধে অভিযোগ উনি তাঁর এলাকায় কচুরি পানা ও জঙ্গল পরিস্কার করতে পারেন নি । এই অপরাধে তাঁকে লোক সমুক্ষে বেঁধে পিটানো হয়েছিল ।
গ) জেনেরাল আয়ুব খান এবার সুযোগ পেয়ে পূর্ব পাকিস্তানের স্কুলে উর্দু ভাষা চালু করে দিলেন। আমি তখন ক্লাস সেভেনের ছাত্র। আমার মত প্রতি ক্লাসে ছেলে–মেয়েরা হঠাৎ করে উর্দু দেখে বিপদে পড়ি। তাছাড়া পূর্ব পাকিস্তানের স্কুল জানুয়ারিতে শুরু হয়, এখানকার গরিব জনগণ নভেম্বর-ডিসেম্বর ফসল উঠানো হলে ছাত্র বেতন পরিষ্কার করে । এ পরিস্থিতি না বুঝে পূর্ব পাকিস্তানে জুলাই থেকে জুন পয্যন্ত স্কুল বৎসর পরিবর্তন করেন । এই পরিবর্তনের ফলে আমরা এক বৎসর ১৮ মাস এক ক্লাসে ছিলাম । তবে আমাদের নেতা , জনগণ এবং ছাত্র সমাজের ধাক্কায় বেশিদিন স্কুলে উর্দু টিকিয়ে রাখতে পারেন নি। তাছাড়া স্কুল জানুয়ারী থেকে পুনরায় চালু হয় ।
ঘ) দেশের সমস্ত বুড়ো অশিক্ষত দের অক্ষর জ্ঞান দিবেন ।, ভালো কথা, সে কি হুলস্থুল কান্ড গ্রামে বুড়ো দাদা চাচার মাঝে হৈ ছৈ আর ভয় ভীতি শুরু হলো । সবাইকে ফ্রি বই দেয়া হয়েছে । আমরা স্কুলে পড়ুয়ারা ওদের পড়ার আগ্রহ দেখে খুব মজা করতাম।
চ) আবার আদেশ দেয়া হলো, গ্রাম রক্ষার জন্য পর্যায় ক্রমে সারা রাত গ্রাম পাহারা দেয়া। গ্রামের লোকজন না ঘুমিয়ে পালাক্রমে সারা গ্রাম ঘুরে ঘুরে চিৎকার করা ” বস্তি জাগো রে, বস্তি জাগো রে “, বিভিন্ন শ্লোগানে সারা গ্রামকে মুখোরিত করে তোলা। কিন্তু দুই/তিন মাস পর এ সব কি ভাবে বন্ধ হলো তা মনে নেই।
ছ) আর একটা কাজ উনি চালু করেছিলেন : মাঝে মধ্যে পূর্ব পাকিস্তানে এসে কিছু কিছু সম্মানীয় লোকদের ‘তমগায়ে খেদমত‘ উপাদী দিতেন, এটা অবশ্য অনেকদিন চালু ছিল।
জ) প্রেসিডেন্ট জেনারেল আয়ুব খান একটা বই লিখেছিলেন “FRIENDS NOT MASTER বা প্রভু নয় বন্ধু ” এই বইতে ওনার গুন্ গান , দশ বৎসরে (১৯৫৮–১৯৬৮ ) দেশের কি কি উন্নতি করেছিলেন তার একটা পিকচার দাঁড় করিয়েছিলেন ।
ঝ) ১৯৬৮ সনে পূর্ব বাংলার স্কুল কলেজে একদিকে আয়ুব খানের গুণ গান ” decade of reforms ” চলছে অন্য দিকে ৩৫ জন বাঙালি রাজনীতিবিদ ও সরকারি চাকুরে জীবিদের বিরুদ্ধে আগরতলা কন্সপিরেসি কেস দিয়ে ঢাকা আর্মি ক্যান্টনমেন্টে বিচার শুরু করেন। পূর্ব পাকিস্তানের রাজনীতিবিদ ও চাত্র জনতার ধাক্কায় এই কেস বেশিদূর নিতে পারেন নি এবং সব রাজবন্দীদের বিনা বিচারে ছেড়ে দিতে বাধ্য হলেন। শুধু তাই নয়, জেনারেল আয়ুব খানকে গদি ছাড়তে হলো।
এবার জেনারেল ইয়াহিয়া খান আসলেন, ইলেকশন দিলেন । কিন্তু ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে টালবাহানা শুরু হলো। সে অনেক কথা …
২৫সে মার্চ, ১৯৭১, কালো রাত্রি ঢাকা রাজারবাগ পুলিশ ফাঁড়ি, ইউনিভার্সিটি আবাসিক এলাকা পাকিস্তানী আর্মি আক্রমণ করে হাজার হাজার নিরীহ ছাত্র ও জনতাকে গুলি করে হত্যা করে। ১৯৭১ এর যুদ্ধে লক্ষ লক্ষ জনতা যখন পাকিস্তানী সৈন্য ও রাজাকারদের অত্যাচারে জীবন দিচ্ছে এবং দেশ থেকে পালিয়ে প্রতিবেশী ভারতে আশ্রয় নিচ্ছে, সে সময় পাকিস্তানী নেতা ও মেজর জেনারেলগন বলেছেন “মিট্টি চাহিয়ে, আদমী নেহি। অর্থাৎ আমরা ভূমি চাই, লোকজন নয়। ” তার মানে পাকিস্তানিরা, পূর্ব পাকিস্তানের ভূমি চেয়েছিলো , সাড়ে সাত কোটি বাঙালি চায় নি।
আর একটু গোড়ার দিকে গেলে (১৯৫৬- ১৯৫৮) হোসেন শহীদ সারওয়ার্দী সাহেব পাকিস্তানের প্রধান মন্ত্রী ছিলেন। জেনারেল আয়ুব খান সবে মাত্র মার্শিয়াল ল এডমিনিস্ট্রেটর হয়েছেন। হোসেন শহীদ সারওয়ার্দী সাহেবকে যেভাবে চাকুরিচ্যুত করে বৈরুত , লেবানন নির্বাসন দিলেন এটা অত্যন্ত মর্মান্তিক। সারওয়ার্দী সাহেব মৃত্যুর পূর্ব পয্যন্ত বৈরুত হোটেলে থাকতেন।১৯৬৩ সনে মৃত্যুর আগে পয্যন্ত তাঁকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয় নি ।
আমরা কানাডায় বাস করি। কানাডার লোক সংখ্যা ৩৬ মিলিয়নের উপর ।সারা দেশে (২৮ মিলিয়ন) ইংরেজিতে কথা বলে। বাকি ৮ মিলিয়নের মতো ক্যুবেক প্রদেশে বাস করে এবং ওদের ভাষা ফ্রেঞ্চ । কিন্তু এই ৮ মিলিয়ন লোকের জন্য ফ্রেঞ্চকে এ দেশের সরকারি দ্বিতীয় ভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। কানাডা সরকার ক্যুবেক কে পূর্ণ মর্যাদা দিয়েছে। ক্যুবেক আলাদা পলিটিকাল পার্টি রয়েছে যাদের সেপারেটিস্ট বলা হয়। ক্যুবেক কানাডা থেকে আলাদা হওয়ার জন্য দুইবার চেষ্টা করে ভোটা ভোটিতে ফেল করেছে। এতো সুবিধা পেয়েও ওরা ভাষার জন্য আলাদা হতে চায়। তাছাড়া ওদের ভাষাকে ইংরেজির সমান মর্যাদা ও দেয়া হয়েছে যাকে ইংরেজিতে বাই -ল্যাঙ্গুয়াল বলা হয় ।
আজ আমরা গর্বিত একটা স্বাধীন দেশ ও আন্তর্জাতিক বাংলা মাতৃভাষা পেয়েছি , যাদের জীবন বিসর্জনের বিনিময়ে স্বাধীন দেশ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পেয়েছি ,তারা চিরদিন আমাদের ও পরবর্তী প্রজন্মের মাঝে বেঁচে থাকবে।
আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো
একুশে ফেব্রুয়ারী
আমি কি ভুলিতে পারি?
সমাপ্ত