আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এখন অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। একটি স্মার্ট ফোন ও ইন্টারনেট থাকলে ঘরে বাইরে সবখানে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে দুনিয়ার যে কোন প্রান্তের যে কোন বিষয়ে জানতে পারি। উঠতি বয়সের ছেলেমেয়েরা ছাড়াও সাধারণ সব মানুষই আজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সাথে সংশ্লিষ্ট। এ সকল যোগাযোগ মাধ্যমের অন্যতম আকর্ষণ জেনো ফেসবুক। ভাল-মন্দ সব বিষয়ই ফেসবুকের নিউজ ফীডে দেখা যায়। অনেক নোংরা বা অপ্রয়োজনীয় বিষয় থাকলেও আত্মীয়-বন্ধুবান্ধবের সাথে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম এখন ফেসবুক। আমার অনেক বন্ধু-বান্ধবকে দেখেছি সুন্দর সুন্দর বক্তব্য বা ইতিহাস,বা ঘটনাবলী ফেসবুকের প্রকাশ করছে।
আমি নিজেও যখন অবসর পাই তখন ফেসবুকে বিভিন্ন বিষয় দেখে থাকি। সম্প্রতি কলকাতার আমার কয়েকজন বন্ধুর লেখা গুলি আমি নিয়মিত পড়ি। তারা যেসব বিষয়ের অবতারণা করে সেটা থেকে অনেক নুতন নুতন তথ্য বা তত্ত্বের বিকাশ লক্ষণীয়। সম্প্রতি মলয় সিংহের একটি লেখা থেকে রমজান মাসে রোজা রাখার বিষয়ে আধুনিক বিজ্ঞানের যে সামঞ্জস্য পূর্ণ ধারণা সম্পর্কে তিনি যা লিখেছেন আমি সেটা পড়ে অবিভুত। মুসলমানদের রোজা রাখা বা হিন্দু ধর্মে উপবাস করা বা খ্রিষ্ট ধর্মের ফাস্টিং যাই বলি না কেন এর যে উপকারিতা সেটা আমি যেন আবারো নুতন করে উপলদ্ধি করতে পারলাম তার লেখা থেকে। রোজা বা উপবাস বা ফাস্টিং এর কারণে মানবদেহে যে প্রতিক্রিয়া হয় সে বিষয়ে গবেষণা করে ২০১৬ সালে এক জাপানি বিজ্ঞানী নোবেল পুরস্কার পেয়েছে সেটাও আমি তার লেখনীর মাধ্যমে জানতে পারলাম। তাই এ বিষয়টি সকলের সাথে শেয়ার করার আগ্রহ বোধ করছি। আমি তার এতদসংক্রান্ত লেখাটি হুবহু নিম্নে উল্লেখ করছি:-
মলয় সিংহ/ শিক্ষনীয় পোষ্ট
*****************************
“ হিন্দু বা বৌদ্ধরা না খেয়ে থাকলে তাকে বলা হয় “উপবাস’’।
মুসলিমরা রোজা রাখলে তাকে বলা হয়
“সিয়াম”।
খ্রিস্টানরা না খেয়ে থাকলে তাকে বলা হয় “ফাস্টিং”।
বিপ্লবীরা না খেয়ে থাকলে তাকে বলা হয়
“অনশন “।
আর ,মেডিক্যাল সায়েন্সে উপবাস করলে তাকে বলা হয় “অটোফেজি”, “Autophagy”.
খুব বেশি দিন হয়নি ,মেডিক্যাল সায়েন্স ‘অটোফেজি’র সাথে পরিচিত হয়েছে।
২০১৬ সালে নোবেল কমিটি জাপানের ডাক্তার
‘ ওশিনরি ওসুমি ’-কে অটোফেজি আবিষ্কারের জন্যে পুরষ্কার দেন।
এরপর থেকে আধুনিক মানুষেরা ব্যাপকভাবে উপবাস করতে শুরু করেন।
যাই হোক , “Autophagy” কি ?
এবার তাই বলি ।
Autophagy শব্দটি একটি
গ্রিক শব্দ। Auto অর্থ নিজে নিজে ,
এবং Phagy অর্থ খাওয়া।
সুতরাং , অটোফেজি মানে নিজে নিজেকে খাওয়া।
না , মেডিক্যাল সায়েন্স নিজের মাংস নিজে খেতে বলে না ।
শরীরের কোষগুলো বাইরে থেকে কোনো খাবার না পেয়ে নিজেই যখন নিজের অসুস্থ কোষগুলো খেতে শুরু করে , তখন মেডিক্যাল সাইন্সের ভাষায় তাকেই অটোফেজি বলা হয় ।
আরেকটু সহজভাবে বলি ?
আমাদের ঘরে যেমন ডাস্টবিন থাকে ,
অথবা আমাদের কম্পিউটারে যেমন রিসাইকেল বিন থাকে , তেমনি আমাদের শরীরের প্রতিটি কোষের মাঝেও একটি করে ডাস্টবিন আছে ।
সারা বছর শরীরের কোষগুলো খুব ব্যস্ত থাকার কারণে , ডাস্টবিন পরিষ্কার করার সময় পায় না ।
ফলে কোষগুলোতে অনেক আবর্জনা ও ময়লা জমে যায়।
শরীরের কোষগুলো যদি নিয়মিত তাদের ডাস্টবিন পরিষ্কার করতে না পারে ,
তাহলে কোষগুলো একসময় নিষ্ক্রিয় হয়ে শরীরে বিভিন্ন প্রকারের রোগের উৎপন্ন করে ।
ক্যান্সার বা ডায়াবেটিসের মতন অনেক বড় বড় রোগের শুরু হয় এখান থেকেই ।
মানুষ যখন খালি পেটে থাকে , তখন শরীরের কোষগুলো অনেকটা বেকার হয়ে পড়ে।
কিন্তু তারা তো আর আমাদের মত অলস হয়ে বসে থাকে না , তাই প্রতিটি কোষ তার ভিতরের আবর্জনা ও ময়লাগুলো পরিষ্কার করতে শুরু করে দেয়।
কোষগুলোর আমাদের মতন আবর্জনা ফেলার জায়গা নেই বলে তারা নিজের আবর্জনা
নিজেই খেয়ে ফেলে।
মেডিক্যাল সাইন্সে এই পদ্ধতিকে
বলা হয় অটোফেজি ।
শুধুমাত্র এই জিনিসটা আবিষ্কার
করেই জাপানের ওশিনরি ওসুমি
( Yoshinori Ohsumi)
২০১৬ সালে নোবেল পুরস্কারটা নিয়ে গেলেন ।
কি আর করা যায় ?
আমি যেহেতু ডাক্তার নই ,তাই এ নিয়ে আমার কোনো আফসোসও নেই… !!!
আমার আফসোস হলো তাঁদের জন্যে ,
যারা স্বাস্থ্যের কথা ভেবে উপবাস/রোজা/ফাস্টিং
করেন না ।
নিজের ধর্ম অনুযায়ী নিয়মিত না
খাওয়ার অভ্যাস শুরু করুন ,
এতে পূণ্য হয় কিনা জানি না ,
তবে আপনার শরীর আরো তরুন এবং প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে ।
অতীব গুরুত্বপূর্ণ এই তথ্যটি ”
–/সুত্র: ইন্টারনেট
(ছবি:-সৌজন্যে Kiss My keto)