– এই এই দাঁড়া, দাঁড়া বলতেছি
– আরে বেআক্কল মরবি না কি? মরার ইচ্ছে থাকলে তুই খাঁড়ায় থাক। আমি নাই …
– আর ঐ আমার জুতার ফিতা খুলে গেছে তো। দাঁড়ানা একটু…
– তুই আয় । আমি ঐ বট গাছের কাছে গেলাম।তাড়াতাড়ি ইট গায়ে লাগবে কিন্তু ;
– ঐ আমরা দৌড়াই কেন?
– কানি চশমা পড়োছ তাও কি চোখে কম দেখোস ?
– আমার চশমা ঘোলা হয়ে গেছে রে।
– হায়রে চশমা খুলে দৌড়া …
এই এই দাড়া শুন না…
– বল না দৌড়াই কেন আমরা? ওরায় হুদাই মারামারি করে। আমরা তো কোন কিছুর সাথে নাই দৌড় দেই কেন ?
– তাইলে আর কি খাঁড়ায় থাক। নিষেধ করছে কে শালী তোরে? ওদের লাঠি, রামদা, হাতড়ি আরো কি সব দেখলাম। যা মজা লাগবে। ঝাল মুড়ির মজা। যা খা যে …
ধূর, হুদাই কথা কচ্ছি তোর লগে। মূর্খ মাইয়া …
– এমন এক থাপ্পর দিমু কিন্তু
– হুম পারিস তো শুধু ওটাই। বলে নিজেই নিজের গালে হাত বুলালো।
– কিরে হাত বুলাস কেন এখনও তো মারি নাই শালা.. হি হি হি …
দোস্ত দোস্ত চল দৌড়াই, ঐ দেখ সামনে ওরা, পিছে পুলিশ। টিয়ার গ্যাস ছুঁড়ে। কোন দুঃখে যে ফুলবাড়িগেট আসলাম। আমরা দুজন একসাথে, বাকি ওরায় কোন দিক দৌড় দিলো রে ?
– শালী দৌড়া কথা কম ক তুই … সারাক্ষণ কথা কস। আল্লাহর দোহাই জলহস্তী মার্কা শরীরটায় একটু গিয়ার বেশি দিয়া দৌড়া।
– দোস্ত আর পারতাসি না। চল ঐ চায়ের দোকানের পিছে একটা ঝোপঝাড় ঐ দিকটায় যাই।
– চল,,, হয়ত এটা ঠিক
– উফ্ দমটা বের হয়ে যাচ্ছে তো, আল্লাহ শেষ আমি আজকে। বুক ধড়ফড় করছে। আল্লাহ ওরা কোন দিক গেলো, মোবাইল এ চেষ্টা করছিস ওদেরকে ?
– তুই কি মনে করছিস গাধী, তুই তো আছিস লেকচার মারার জন্য। আমি এতোক্ষণধরে ওদেরকেই চেষ্টা করছি। কেউ ফোন ধরে না।
– বলিস কি … এখন … কি হবে … আচ্ছা যা হয় হোক শোন না… এই তুই এইরকম কেন… নিষ্ঠুর, শোন আমার খিদা লাগছে খু——– ব,
– আল্লাহ মাবুদ রক্ষা করো এই জলহস্তির হাত থেকে। আরো তো ছিলো। এইটাই কেনো আমার লগে লগে দৌড়ালো ?
– এই আমি আমার মত দৌড়াইছি। আমি তোর লগে লগে মোটেও আসি না, কয়ে দিলাম। আর এমন কথা কইলে লাথ্থি খাবি।
– শালী টেনশনে আছি রে মা। চুপ কর। চশমা টা কাপড়ে মুছে দেখ ভালো করে কি অবস্থা …
– শুন না দোস্ত আমার খুব খিদা লাগছে। খিদা লাগলে আমার জানি কেমন কেমন লাগে? দোস্ত কিছুর একটা ব্যবস্থা কর না দোস্ত। বিশাল ইঁদুর পেটের মধ্যে দৌড়াইয়া পাকাইয়া দফারফা করতাছে দোস্ত। দোস্ত তুই ভালো কত্তো।
– তুই চুপ করবি শালী ??? মন যা চাচ্ছে, মনে হচ্ছে তোরে গলায় পাড়াইয়া মাইরা ফেলি। আছি কতবড় বিপদে। শালা আসছি বন্ধুর বিয়া দিতে। না আসাই উচিত ছিলো। যে মাইয়ার লগে এতোদিনের প্রেম সে কলাগাছ দেখাইয়া উধাও। মাঝে শ্রমিকের দলে দলে মারামারি, পুলিশ। কেমনে যামু বাড়ি তার নাই ঠিক। সাথে আর বন্ধুরা কই তাও জানি না। আর এই তুই পড়ে আছিস খিদা নিয়ে… ???
– শোন না দোস্ত, একটা কোন ব্যবস্থা কর না। আমার মাথা ঘুরাচ্ছে?
– থাপরামু তোরে আমি। কানি এই দেখ কোন দিক দিয়া বের হবো। একপাশে পুলিশ আর ঐ দেখ কি অবস্থা, ঢিল ছোড়াছুড়ি।
– সব বুজলাম দোস্ত। কিন্তু …
– কোন কিন্তু না। চুপ। না হলে টিস্যু গালের মধ্যে দিয়া চাবাইতে থাক। শালী জলহস্তী …
– মা,,, আম্মা কেমন টা লাগে। কখন থেকে অপমান কইরাই যাইতেছে। আল্লাহ বিচার করো। শোন, আমার না এখন কাচ্চি খাইতে মন চাইতেছে। এখন কাচ্চি হইলে যা জোশ হইতো না দোস্ত !!!
– কি ? মানে কি বললি ? তুই কি নরমাল ? মানে কি এটা? এই পরিস্থিতিতে কেউ মানে কারো মুখে কোন কথা থাকে না আর তুই কি না বলতেছিস এখন কাচ্চি হলে জোশ হইতো দোস্ত ??? তুই আসলেই জলহস্তী।
শোন এটা নে। পকেট থেকে ক্যাটবেরি বের করে এগিয়ে দিলো। নে খা এটা মা, আমারে রক্ষে কর।
– এরাকম করতেছিস কেন? চিল, কুল… এ রকম পরিস্থিতিতে আমরা কি কখনও পড়ছি বল। কখনোই না। ঢাকায় কত্তো মারামারি হয়। শালা থাকি তো আমরা অজোপাঁড়ায় কিচ্ছু তেমন হয় ও না আর এমনটা দেখার চান্সও কখনও হয় নাই দোস্ত। অন্য রকম ফিল দোস্ত। পুরাই মাখনে মাখন। Entertainment, Entertainment and Entertainment… দেখ দেখ টিভিতেই দেখলাম।
– থাপড়াইয়া লম্বা বানামু তোরে শয়তান কোনহানকার ..
আবার কয় চিল, কুল। আর একটা কথা বললে তোরে …. তুই কি বুজতেছিস কি অবস্থার মধ্যে পড়ছি আমরা? মানে তুই কেমনে স্বাভাবিক আছিস ?
– কি করবি ? হ্যা… কি করবি তুই??? আর এমন পরিস্থিতিতে যখন পড়েই গেছি নিজেকে সেভ করে চুপচাপ দেখ কি হয়। বের হতে তো এখন পারতেছি না তাই না …???
আমার খিদা লাগছে সেই কখন ধরে বলতেছি। কোন গুরুত্বই নাই। দিলো কি পকেট থেকে কোন মান্দার আমলের চকলেট। খাওয়া যায় ? বললাম কাচ্চি খেলে ভালো হতো এখন এরকম পরিস্থিতি জীবনে সামনাসামনি দেখছি বল দোস্ত। চিল থাক। আড়ালে থেকে দেখি। দোস্ত আজ সকালে কিছু তেমন খাই ও নাই বিশ্বাস কর। সত্যি মা কতবার বললো, খেয়ে বের হ। কিন্তুু… আমি ভাবলাম, মাথায় তো আছে সেজান আজকে যূথীকে বিয়ে করবে। বিয়ের পর আমাদের খাওয়াবে। শালা সব চমপট। কিরে আমারে আবার আড় চোখে দেখিস কেন?
– ওয়াও দোস্ত পালায় বিয়ে করতেছে। কি একটা ফিল না রে… আমির খান আর জুহি পালিয়ে বিয়ে ইস্ কি ফিল। দেব – কোয়েল এর মুভিতেও আহ্ রে পালিয়ে বিয়ে করার মজাই আলাদা নারে — আড় চোখে কড়া কড়া চাহুনি দিস কেন আমারে?
– দেখ ওগুলো সিনেমা। বাস্তবে প্যাদানী আর প্যাদানী বুজলি … শালী পালানোর ভিতর জোশ খুঁজে।
– এখনও যূথী র কোন খোঁজ নাই। পাল্টি মারলো কি না বোঝা যাচ্ছে না তারপরও বল দোস্ত কি একটা ফিল রে…
” পরাণ যায় জ্বলিয়া রে এ এ এ এ —
পরাণ যায় জ্বলিয়া রে এ —
ডিকডিকি ডিস ডিকডিকি ডিস… ..
কেমনে — রাখি বাঁন্ধিয়া
এই মনের পাখি বাঁন্ধিয়া
তুমি কাছে, তবু যে দূরে
কতো যে দূরে, ওরে কাচ্চিয়া – আ আ আ ,
পরান যায় জ্বলিয়া রে…
– ঐ ঐ ঐ তুই কি গান গাইলি ? কাচ্চি ? হায়রে, তুই কি রে … কি বিপদ আর তুই শালী কাচ্চির মধ্যে আল্লাহ তাও আবার প্রেমের গান গাইতেছে কাচ্চি নিয়া..
আল্লাহ রহম করো। তুই কি রে ? মানে আমি জাস্ট ভাবতে পারি না এমন সিচুয়েশনে কেউ স্বাভাবিক.. তুই কি পাগল ?
– দেখ, শার্টের কলারটা ধরতে পারছি না। শালা লম্বু তাল গাছ। মাথা টা একটু ঝুঁকা বাপ ঐ দেখ আমার চোখ্খের সামনের সাইনবোর্ডে লেখা হাশেমের কাচ্চি ঘর। উফ্ আল্লাহ খিদা লাগছে দোস্ত।
বেটার নাম হাশেম না হাশমি ? আগে আবার ইমরান নাই তো দোস্ত ? ঐ তুই আমার দিকে ওরকম করে তাকাস কেন বাপ … আমি জাস্ট বলছি আর কি … আমি চুপ একেবারে চুপ
– আচ্ছা আরোকটু পরিস্থিতি শান্ত হলে, দেখ ঐ পিছন থেকেও ঐ পিছনে দিয়ে একটু আগায় রাস্তা পাড় হয়ে তোরে খাওয়াবোনে যা। শালী জলহস্তী।
– এই আমি জলহস্তী না।
– তাইলে তুই কি এঞ্জেলিনা জলি, রানী মূখার্জী, ক্যাটরিনা কাইফ ? নাকি কোয়েল মল্লিক, শুভস্রী হা হা হা … কোন টা?
– শোন আমি না আমি ই। চল আমার খিদায় মাথা ঘুরতেছে।
– বডি ঘুরলে বলিস, আমি সাবধানতা অবলম্বন করবো। একটু সরে যাবো আর কি …
উফ্ মা গো, উরে আল্লাহ তোর হাত পা কি আল্লাহ ছেলেদেরটা দিয়ে দিছে রে। উরে কি জোরে লাথ্থি দিলো…
– দেখ সেই কখন থেকে আমারে যা তা বলতেছিস কিছু বলতেছিলাম না আর একবার যদি বলিস না
– মুখে তাড়াতাড়ি হাত দিয়ে, না না আর কিছু বলবো না। শোন, তোর না যারে তারে বিয়া করা উচিত না। তোর কাছে কেউ টিকবে না।
– কেনো মাইর খেয়ে কি বর্দোআ করতাছোস আমারে ?
– নাহ তোর এই অসহ্য কান্ডকারখানা আর উৎপাত সহ্য করার মত আজও কোন পুরুষ পয়দা হয় নাই রে মা … আর না পাইলে আমারে খবর দিস.
– তুই কি পয়দা করে নিয়ে আসবি ?
ধূর , চল কাচ্চি খাওয়াই তোরে তারপর দেখি ওরা কোথায়
আর না পাইলে যার যার বাড়ি বুজলি?
আর হ্যা সন্ধ্যায় কি আসতে পারবি রবীন্দ্রনাথের রক্তকরবী দেখতে ?
কিসের কি? কোথায় রক্ত কোথায় করবী
– একমনে কাচ্চি খাওয়া। দুনিয়া একপাশ, _____ আর কাচ্চি থাক।
সারাদিনই Different Entertainment, Entertainment and Entertainment…®
নীলিকা নীলাচল***