বরাবরই হ-জ-ব-র-ল লিখি।আর এটাই আমার নীতি… যাক আজ একটা বিয়ে বাড়িতে গেছি। সবাই ব্যস্ত। কেউ আছে মেকাপ নিয়ে, কেউ আছে অতিথি আপ্যায়নে, কেউ আবার জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছে, এর মাঝে আত্মীয় আত্মীয় যাদের মাঝে একটু প্রেম প্রেম ভাব জন্মেছে তারা এক পাশ হয়ে চুটিয়ে নিজের মাঝে ডুবে আছে। বাচ্চারা কি আর বিয়ের মর্ম বুঝে? তারা আছে খেলায় মগ্ন। ছেলেপক্ষ রা এক পাশে গল্পের ঝুড়ি পেতেছে —- ভাবী জানেন, এই ড্রেসটা নতুন কিনেছি শুধুমাত্র ইমনের বিয়েতে আসবো বলে… আরেকজন ওমনি বললো, আমার এটা একবারই পড়া হয়েছে, আরেক জন বললো ভাবী দেখেন তো গলার সেটটা কেমন হয়েছে? টুকটুকির বাবা তো পারলে আমাকে পুরা দোকানটাই কিনে দেয়… চান্স পাইছে রে বর নিয়ে প্যানপ্যান করার। কিন্তুু বাড়ি যাক না, লুকিয়ে দেখলে দেখা যাবে, বাড়ী যেয়েই ঝগড়া, ঐ টুকটুকির বাপ, কিপ্টার যম ভাবীদের কত সুন্দর সুন্দর জিনিস দেখলাম নতুন কিনছে আর তুমি!!! তুমি একটা ছাগল, আমারে কিচ্ছু দেও না। ।।।
বুজলাম এখানে আর কিছুক্ষণ থাকলে হয়ত আমার শ্বাসকষ্ট হবে। ও বাবা বিয়ে বাড়ী বলে কথা আমায় কে এমন হলে হসপিটালে নিয়ে যাবে। আবার মানুষের মধ্যে একটা ঝামেলাও সৃষ্টি হবে। কি দরকার বলুন তো….. একটু হাঁটাই ভালো। মেয়ের বাড়ির লোকেরা কি ঘোড়াদৌড়টাই না দিচ্ছে। ৷৷ আহারে মনে হচ্ছে সরকার পক্ষ বসে আছে আর আর্মী সৈন্যরা তাদেরকে অভ্যর্থনা সহ ক্ষেদমত করছে।।ধূর এটাই নিয়ম কিন্তুু ভালো লাগছে না। আচ্ছা ছেলে বাড়ি র লোকরা কি সরকার পক্ষ??? ওমন একটা ভাব নিয়ে থাকে কেনো? এখনতো মেয়েরাও অনেক বড় বড় পজিশন এ থাকে বাবা, কিন্তু কৈ তার বাড়ির লোকদের তো সেনাপ্রজা হয়ে ই থাকতে হয়। কেনো ????
কি যে নিয়মনীতি পরিবর্তন পরিবর্তন করে অনসন,স্লোগা, ধর্মঘট, হরতাল সবই না মন্জুর এর খাতায় চলে গেছে। এ জন্য হয়ত এখনও অনেকেরই মতে মেয়ে হলো লস প্রযেক্ট…
খাবারের জন্য কয়েকটি টেবিল এ লোক বসিয়ে দিয়েছে। খাওয়াও শুরু হয়ে গেছে। বাহ্ খাওয়া দেখতে তো ভালোই লাগে… এটা আমার বরাবর ই স্বভাব বিয়ে বাড়ীতে যেয়ে কিছুক্ষণ পর দূর থেকে মানুষের খাওয়া দেখা। মানসিক প্রতিবন্ধী মনে হচ্ছে না কি? আসলে খাওয়ার ধরন দেখে মানুষের একটু কার্যকলাপ বুঝা যায় আর সেটাই আমি দেখি …. মজা করে দেখি। কেউ খায় অতি দ্রত, কেউ আবার ল্যাটকায় লুটকায়, কেউ আবার ক্যামেরা কোন দিক ঘুরছে সেই ভাবে খায়। সে এক অভাবনীয় দৃশ্য। আহা আমার ভালো লাগে। মানুষের তো কতকিছুই আজীব কর্মকান্ড থাকে সেরকমই… যাক ওখান থেকে হঠাৎই আমার স্টেজ এ চোখ পড়লো। সাজানো স্টেজ, পরিপাটি গুছানো।চারিদিকের হৈ চৈ এর মাঝে দুটি চেয়ার এ বর কনে বসে আছে। বিয়েটা তাদের এরেন্জ ম্যারেজ। তাকিয়ে খুব বোঝার চেষ্টা করছিলাম এই হাসিটা তাদেরকে কত দূর নিয়ে যাবে? এটায় কি তাদের সত্যি ই সম্মতি আছে নাকি পরিবারের জন্যে মানিয়ে নিচ্ছে… আসলে উপর থেকে গভীরতা বোঝা যায় না। কতটা গভীর হলে আজীবন থাকা যায়?????
নীলিকা নীলাচল***