আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা (১৯৬৮) “পাকিস্তান রাষ্ট্র বনাম শেখ মজিবুর রহমান এবং অন্যান্য “। এই ঐতিহাসিক মামলা যার প্রভাব পুরো বাঙ্গালী জাতির উপর পড়েছিল ; শহর, বন্দর, গ্রাম পর্যন্ত সর্বত্র প্রতিটি মানুষের মুখে মুখে আলোচনা, সমালোচনা এবং এর বিরুদ্ধে জনগণ রুখে দাঁড়িয়েছিল । স্কুল,কলেজ, উনিভার্সিটির ছাত্র -ছাত্রী, শ্রমিক এবং জনতা মিছিলের মুখে সারা দেশের শহর কেঁপে উঠেছে। মামলার ফলাফল : শেখ মুজিবুর রহমানের নিকট আইয়ুব খান ও রাষ্ট্র হেরে গেলো এবং আয়ুব খান মামলা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হলো ,তার ফলে তাঁর ক্ষমতায় থাকার আর কোনো অধিকার ই থাকলো না। তিনি তৎকালীন কমান্ডার ইন চিফ আগা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খানের হাতে ক্ষমতা দিয়ে সরে পড়লেন। ২৫ সে মার্চ ১৯৬৯ ইয়াহিয়া খান ক্ষমতা নেন। ১৯৫৪ সনের কুখ্যাত ওয়ান ইউনিট ভেঙে দিয়ে ৭ ই ডিসেম্বর,১৯৭০ জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচন ঘোষণা দিলেন। পরিস্থিতি শান্ত হয়ে উঠলো এবং জনগণ আস্বত্ব হলো যে সামরিক সরকার দেশে অবাধ সুষ্ঠ নির্বাচন দেবে।
প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান এবং পশ্চিম পাকিস্তানের রাজনীতিবিদ বুঝতে পারে নি যে শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর ৬ দফা পূর্ব পাকিস্তানে এতই জনপ্রিয়। ইয়াহিয়া খান মনে করেছিলেন পূর্ব পাকিস্তানে আওয়ামী লীগ হয়তো বেশি আসন পাবে ; তবে মুসলিম লীগ, অন্যান্য দল ও আসন পাবে এবং পশ্চিম পাকিস্তানে আওয়ামী লীগ কোনও আসন পাবে না। তাই কেন্দ্রীয় শাসন ভার পশ্চিম পাকিস্তানের হাতে থাকবে এবং আওয়ামী লীগ বিরোধী দল হিসাবে সংসদে দাবি দাওয়া নিয়ে কথা বলবে,তবে ৬ দফা বাস্তবায়ন বা আলোচনা করার প্রয়োজন পড়বে না। এই চিন্তাধারার প্রেক্ষিতে ওয়ান ইউনিট বাতিল করে জনসংখ্যার ভিত্তিতে নির্বাচন দিয়েছে, যা দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে কেউ করে নি।
১২ নভেম্বর,১৯৭০ সনের ঘূর্ণিঝড় ( গ্রেট সাইক্লোন নামেও পরিচিত) , একটি বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়, যা পূর্ব পাকিস্তান এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হানে; এর ফলে ৩ থেকে ৫ লক্ষ লোক প্রাণ হারায়। নির্বাচনের মাত্র এক মাস বাকি, এই রকম বিধ্বংসী ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড় যার প্রভাব দেশের নির্বাচনের উপর প্রতিফলিত হয়েছিল। সরকার ঘূর্ণিঝড়ের পর ত্রাণ তৎপরতা নিয়ে গড়িমসি করায় প্রচন্ড সমালোচনার মুখে পড়ে। এই ঘূর্ণি ঝড়ের ফলে ভোলা ও অপরাপর উপকূলীয় অঞ্চল গুলিতে সরকারের ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছতে দেরি হওয়াতে জনগণ বেশি বিপদের সম্মুখীন হয়। পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ এবং জনগণ ত্রান সামগ্রী নিয়ে উপস্থিত হলে ও তা পর্যাপ্ত ছিল না এবং প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ও সরকার সমালোচনার সম্মুখীন হন । জাতীয় পরিষদের নির্বাচন ১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর যা এক মাসের ও কম সময়, এক দিকে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা,অপর দিকে ঘূর্ণি ঝড় ; শেখ মুজিবুর রহমান ও আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য দল ত্রানসামগ্রী ও প্রচারণার বেশি সুযোগ পেয়েছে। নির্বাচন হয়ে গেলো এবং ৬ দফা পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্ত শাসনের মূলমন্ত্র যা বাস্তবায়নের পক্ষে ১৬৭ আসন পেয়ে পশ্চিম পাকিস্তানী রাজনীতিবিদ ও সামরিক সরকারকে অবাক করিয়েছে।
নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে একদিকে কেন্দ্রীয় সরকার,ভুট্টো ও সেনাবাহিনী জেনারেলগণ এবং অপরদিকে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের আওয়ামী লীগের মধ্যে মারাত্মক দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে । পূর্ব পাকিস্তানি নেতা ভৌগোলিকভাবে বিভক্ত দেশের জন্য পূর্বেই স্বায়ত্তশাসন দাবি করেছেন ,নির্বাচনের সংখ্যাগরিষ্ঠ ফলাফলে কোনো আলোচনার সুযোগ থাকার কথা নয় এবং ইয়াহিয়া খান সেনাবাহিনীকে দিয়ে আওয়ামী লীগ দমন করার নির্দেশ দিয়ে আর ও বেশি বিপাকে পড়েছেন এবং সমস্যার সৃষ্টি করেছেন । ২৫ সে মার্চ কালরাত্রির সার্চলাইট অপারেশন ও পরবর্তীতে নিরীহ জনগণকে নৃশংসভাবে হত্যা ও ধর্ষণ করার আদেশ দিয়েছিল। ফলে লক্ষ লক্ষ পূর্ব পাকিস্তানি শরণার্থী ভারতে প্রবেশ করেছিল, পূর্ব পাকিস্তানে মুক্তিযোদ্ধা ও ভারতীয় সেনাবাহিনী মিলে পশ্চিম পাকিস্তানি দখলদারদের যুদ্ধে পরাজয় ঘটায়।
নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে ইয়াহিয়া খান ,ভুট্টো ও সেনা প্রধানদের উদ্বেগ : কোনোক্রমেই পূর্ব পাকিস্তানিদের হাতে দেশের কতৃত্ব দেয়া যাবে না। শেখ মুজিবুর রহমান আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামি, ৬ দফা ও পূর্ব পাকিস্তানের ভৌগোলিকভাবে বিভক্ত দেশের জন্য স্বায়ত্তশাসন দাবি করেছেন। একটিমাত্র মাত্র অজুহাত, আওয়ামী লীগ পশ্চিম পাকিস্তানে কোনো আসন পায় নি, কাজেই নির্বাচনের ফলাফল যাই হোক না কেন এ অজুহাতে ওর সঙ্গে আলোচনা করা যেতে পারে। এ দিকে পূর্ব পাকিস্তানের আবহাওয়া উত্তপ্ত, ছাত্র -জনতা ঢাকা শহরে সড়ক ও রেসকোর্স ময়দানে উপস্থিত হয়ে সংসদ অধিবেশন ডাকার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছে। ইয়াহিয়া খান সেনাবাহিনীকে দিয়ে আওয়ামী লীগকে দমন করার নির্দেশ দিয়েছেন । একদিকে শেখ মুজিবুর রহমান ও আওয়ামী লীগ নেতৃস্থানীয়দের সঙ্গে লোক দেখানো আলোচনা, অপরদিকে এ সময়ে সেনা মোতায়েন করানো একধরণের প্রতারণা ব্যতীত আর কিছুই ছিল না।
জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিতের সিদ্ধান্তকে অনেক পশ্চিম পাকিস্তানি বুদ্ধিজীবী দুঃখজনক সিদ্ধান্ত বলে প্রকাশ করছেন; অনেকের মতে ইয়াহিয়া খান ভুট্টো ও জেনেরালদের পীড়াপীড়ি এবং পরামর্শ ক্রমে সহজ সরল পথ থেকে সরে গিয়ে বাঁকা রাস্তায় নিরীহ জনগণের উপর সেনাবাহিনীর তৎপরতা নেয়ার আদেশ দিয়ে দেশকে দুই টুকরা করেছেন।
শিকারের নাম করে ইয়াহিয়া খান জেনেরালদের নিয়ে লারকানায় ভুট্টোর সাথে আলোচনা করে পূর্ব পাকিস্তানের ২৫ সে মার্চের সার্চলাইট অপারেশনের নীলনকশা ঠিক করেছে ; অথচ ঢাকাতে সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা ও ভাবি প্রধান মন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে যাওয়া বা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কোনও উদ্যোগ নেয় নি। যদি এ ধরণের কোনও উদ্যোগ নেয়া হতো, তা হলে পরিস্থিতি অনুকূলে আসার সম্ভবনা থাকতো । তা না করে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতাকে প্রতারণা মূলক বৈঠকের জন্য প্রেসিডেন্ট ভবনে ডেকে পাঠানো এবং পরোক্ষভাবে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে সেনাবাহিনী ঢাকায় মোতায়েন করে আক্রমণের প্রস্তুতি নেয়া নেহায়েত দুরিভিসন্ধি।
রাষ্ট্রপতি ইয়াহিয়া খানের পক্ষ থেকে এই ধরনের অসম আচরণ বাঙ্গালীদের মধ্যে প্রচণ্ড ক্ষোভের সৃষ্টি করে; মূলতঃ পশ্চিম পাকিস্তান পূর্ব পাকিস্তানকে ২৩ বৎসর উপনিবেশ এবং প্রভু-দাস সম্পর্ক বজায় রেখেছিলো।
২৫ সে মার্চ ১৯৭০, পূর্ব পাকিস্তান সার্চ লাইট অপারেশন, ঢাকা রাজারবাগ পুলিশ সদর দপ্তর অতর্কিত আক্রমণ, পুলিশদের হত্যা,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বিভিন্ন ছাত্র ও ছাত্রী নিবাস আক্রমণ, নিরীহ ছাত্র এবং শিক্ষক হত্যা,ছাত্রী ও মহিলা ধর্ষণ , শহরের বিভিন্ন এলাকা এবং চট্টগ্রাম ,কুমিল্লা ও অনেক শহরে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে ; মানুষ জীবনের ভয়ে শহর ছেড়ে গ্রাম এবং গ্রাম ছেড়ে প্রতিবেশী ভারতে আশ্রয় নিয়ে জীবন রক্ষা করে। পক্ষান্তরে পূর্ব পাকিস্তান সেনাবাহিনী, আনসার, বর্ডার গার্ড, বিমানবাহিনী ছাত্র,গ্রামের যুবক কৃষক, মেহনতি জনতা, প্রতিবেশী ভারতে প্রশিক্ষণ নিয়ে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। দেশের সকল স্তরের জনতা মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে কাজ করার ফলে ৯ মাসেই পাকিস্তানী ৯০ হাজার সামরিক বাহিনীকে পরাজিত করা সহজ হয়েছিল। পশ্চিম পাকিস্তানে যে সব পূর্ব পাকিস্তানী সেনা ,নৌ এবং বিমান বাহিনীর লোক কর্মরত ছিল, পাকিস্তান সরকার এ সময় দেশের নিরাপত্তার জন্য কড়া পাহারার মধ্যে রেখে দিয়েছিলো । পূর্ব পাকিস্তানে সামরিক অভিযানের পর ইয়াহিয়ার করুণ অবস্থার প্রতিফলন ঘটে, ইয়াহিয়া খান সম্পূর্ণরূপে দিশেহারা হয়ে পড়ে এবং তাঁর সিনিয়র সহকর্মীরা তাঁকে পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুধাবন করতে ঢাকায় আসার অনুরোধ করেছিলেন ; কিন্তু সে আর ঢাকা আসে নি।
সে সময় আমার চাকুরী জীবন ইসলামাবাদ, পাকিস্তানে; শেখ মুজিবুর রহমানের গ্রেফতারের বিষয় পাকিস্তানী সরকার প্রচার করে নি। এমন কি পশ্চিম পাকিস্তানে প্রেস সেন্সরশিপ থাকায় দৈনন্দিন কি হচ্ছে তা ও জানা যেত না। দেশের পূর্বাঞ্চলে একটি কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে ; অথচ পশ্চিম পাকিস্তানের জনগণ উল্লাস করে বাঙ্গালীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মনোভাব ব্যক্ত করেছে , যেন কিছুই হয় নি।
পশ্চিম পাকিস্তানের সরকারি প্রচার মাধ্যম পূর্ব পাকিস্তানের গুরুতর সংকটের খবর দেয়া বন্ধ করায় এ অংশের লোক কিছুই জানতো না। চিঠি পত্র আসা বন্ধ হয়ে গিয়েছে ; আমার পূর্ব পাকিস্তানের এক সহ কর্মী জার্মান হয়ে আমাকে চিঠি পাঠাতেন এবং তার মাধ্যমে কিছু খবর পাওয়া যেত। আমি ইসলামাবাদ থেকে চিঠি জার্মানিতে পাঠাতাম , ওই চিঠি আমার বন্ধু পুনরায় বাংলাদেশে আমার বাড়ির ঠিকানায় পাঠাতেন এবং সে চিঠির জবাব পেতে তিন থেকে চার মাস সময় লাগতো। ১৬ ডিসেম্বর ভারতীয় সেনাবাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর যৌথ কমান্ডের সামনে পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনীর আত্মসমর্পণের খবর পশ্চিম পাকিস্তানে পৌঁছালে মানুষ হতবাক হলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে।
হামুদুর রহমান কমিশনের সামনে উপস্থাপিত লিখিত বক্তব্যে জেনারেল ইয়াহিয়া খান বলেন, “এমন একদিন আসবে যখন আমি বেঁচে থাকব বা না থাকব, পাকিস্তানের জনগণ বুঝতে পারবে কারা দেশকে ভেঙ্গে দিয়েছে এবং কেন ভেঙ্গেছে । তাঁর মতে দেশ ভাঙ্গার পেছনে ভুট্টো ও সিনিয়র জেনারেলদের হাত ছিল। প্রতিবেদনে ইয়াহিয়া স্বীকার করেন, পাকিস্তানি সৈন্যরা যেদিন বাঙ্গালীদের ওপর আক্রমণ শুরু করে সেদিনই প্রকৃত যুদ্ধে পরাজিত হয়। ”
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে ইয়াহিয়া খান বলেছিলেন যে “কালা বাঙ্গালী পুরা দেশকো ক্ষতরামে ঢালদিয়া “। রিপোর্টার প্রশ্ন করেছে লাখে লাখে রেফিউজি বর্ডার পার হতে দেখেছে- ইয়াহিয়া অস্বীকার করে বলেছে, ” ওরা রেফিউজি ছিল না , ওরা পাচারকারী,ঝোপ জঙ্গল, খাল -বিল পার হয়ে মালামাল পাচার করে, তোমরা পশ্চিম পাকিস্তানের বর্ডারে এ জাতীয় পাচারকারী দেখতে পাবে। ” ইয়াহিয়া খান আর ও বলেছে ” আমি পাকিস্তানের রাজনীতিবিদ এবং আর্মি জেনেরালদের সঙ্গে আলাপ করেছি ,সবাই আমাকে বলেছে শেখ মুজিবকে ক্ষমতা দেয়া যাবে না, সে দেশ ভাগ করবে। ” এ বক্তব্য থেকে এটাই প্রমাণিত হয় যে পশ্চিম পাকিস্তানিরা পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ ও বুদ্ধিজীবী মানুষের সমান মর্যাদা না দিয়ে উপনিবেশর বাসিন্দা হিসাবে গণ্য করতেন।
১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১, তৎকালীন ঐতিহাসিক রেসকোর্স (সারওয়ার্দী উদ্যান ) ময়দানের সে বিজয় দেখা আমার সৌভাগ্য হয় নি। পাকিস্তানের লেফটেন্যান্ট জেনারেল এ এ কে নিয়াজী আত্মসমর্পণ চুক্তিতে স্বাক্ষর এবং নব- বাংলাদেশের পক্ষে লিবারেশন ফোর্সের জয়েন্ট কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা , এই স্বাক্ষরকৃত অনুষ্ঠানটি প্রতিবারই টেলিভশন ও পত্র–পত্রিকায় দেখানো হয়। এটা সত্যিই বাংলাদেশের জন্য একটা গৌরবময় মুহূর্ত ; পৃথিবী যতদিন টিকে থাকবে এই স্মৃতি ইতিহাসের পাতায় ছবি সহ লেখা থাকবে, এমন কি প্রচার মাধ্যমে বারবার আসবে, আমাদের বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্ম দেখে আনন্দে শিহরিয়া উঠবে, ভাববে যদি ওই বিশেষ মুহূর্তটি দেখতে পেতাম !
১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১ দেশ ভাগ হয়েছে, ২০ ই ডিসেম্বর ইয়াহিয়া খান জুলফিকার আলী ভুট্টোকে পাকিস্তানের ক্ষমতা হস্তান্তর করেছে। ইয়াহিয়া খান বাংলাদেশের গণহত্যার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন, যেখানে প্রায় ৩,০০০,০০০ বাঙালিকে হত্যা করা হয়েছিল এবং ২০০,০০০ থেকে ৪০০,০০০ নারীকে ধর্ষণ করা হয়েছিল। পৃথিবীর অনেক দেশে স্বাধহীনতা যুদ্ধ অতীতে হয়েছে এবং আজ ও হচ্ছে ; তবে সারা বাঙ্গালীজাতি এক সাথে যে ভাবে প্রতক্ষ্য বা পরোক্ষ ভাবে যুদ্ধ করে দেশকে মাত্র ৯ মাসে স্বাধীন করেছে, এ জাতীয় ইতিহাস বিরল।
সমাপ্ত