নরওয়ে থেকে:-
জীবনে বড়ো কিছু হতে গেলে অন্যদের থেকে কিছু একটু অন্য রকম হতে হয় , আর সবার গতিতে চললে সামনে ঠিকই আগানো যায় তবে অন্যদের থেকে বেশি নয় বৈকি।
জুয়াকিম আমাদের পাশেরই ছোট্ট একটা শহর এভিয়ার ছেলে। ওর বয়স মাত্র ১৬ বৎসর, ১৬ বৎসর বয়সের টিপিক্যাল নরওয়েজিয়ান ছেলেমেয়েরা টাকা জমাতে থাকে আর অপেক্ষায় থাকে কখন ওদের বয়স ১৮ হবে, কখন ওরা দোকান থেকে সিগারেট এবং এলকোহল কিনতে পারবে , কখন ওরা নাইট ক্লাবে ডুকার অনুমতি পাবে ??
কিন্তু জুয়াকিম অন্নান্য টিপিক্যাল নরওয়েজিয়ান ছেলেমেয়েদের চেয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন।নরওয়েতে ছেলেমেয়েদের বয়স যখন ১৫ হয় তখন ওদের ধর্মীয় একটা অনুষ্টান হয় , যে অনুষ্টানে ছেলেমেয়েরা তাদের জীবনে কি ধর্মাবলম্ভী হবে তা নির্ধারিত করা হয়। পারিবারিক সে অনুষ্টানে ছেলেমেয়েরা আত্মীয় স্বজনদের কাছ থেকে অনেক টাকা পয়সা গিফট হিসাবে পায়। তবে বেশির ভাগ ছেলেমেয়েরা সে টাকা কয়েক মাসের মদ্ধ্যেই খরচ করে ফেলে কিংবা বয়স ১৮ হবার পর হাই স্কুল পাশ করবার পর এক মাস ব্যাপী যে উন্মাদনা পূর্ণ অনুষ্টান হয় তার জন্য জমিয়ে রাখে। জুয়াকিম কিন্তু এর সম্পূর্ণ ভিন্ন। জুয়াকিম তার কনফার্মেশন অনুষ্টানে আত্মীয় স্বজনদের কাছ থেকে পাওয়া সব টাকা ব্যায় করে এ বয়সেই নিজের একটা বিজনেস খুলেছে, তার কর্মচারীর সংখ্যা ৫ এবং বাৎসরিক ইনকামও মোটামোটি ভাল।
নরওয়েতে, পড়ালেখা জানা, শারীরিকভাবে সক্ষম এবং পয়সাওয়ালরাও যখন বিজনেস খুলতে ভয় পান সেখানে জুয়াকিমের এই ভিশন এবং সফলতা সাউথ নরওয়েতে সারা ফেলে দিয়েছে। আর তাইতো নরওয়ের সরকারি টিভি ওকে নিয়ে সুন্দর একটা প্রোগ্রাম করেছে যাতে করে তরুণ প্রজন্মকে আরো বেশি বাস্তব মুখু আরো বেশি ভিশনারি করা যায়। এবং জোয়াকিমের এই সাহসিক এন্টারপ্রেইনারশিপকে আরো এগিয়ে নিতে এভিয়া সিটিকর্পোরেশন এবং নরওয়ে সরকার যত রকম সাহায্য দরকার তার আশ্বাস প্রধান করেছে। জোয়াকিম যে আগামীতে নরওয়ের অনেক বড়ো বিজনেসম্যান হবে তা মোটামোটি নিশ্চিত। জীবনে এগিয়ে যেতে হলে ভীষণ থাকা লাগে, থাকা লাগে সততা আর নিজের জীবনের প্রতি সম্মান আর ভালোবাসা।
সবাই ভালো থাকবেন আর নিজের জীবনকে সাজাতে যা যা করার তা করে যাবেন. জয় একদিন আসবেন। অন্তর থেকে করে যাওয়া কোনো কাজই বিফলে যায়না।