আধুনিকতা, অবকাঠামোগত উন্নয়ণ বা ডিজিটালাইসেশন নয় হয়তোবা বাংলাদেশ চলছে খোদাতালার অশেষ রহমতে, এবং সেটি হচ্ছে কিছু কিছু অপূর্ব সৎ, সহজ এবং সরল মানুষের জন্য।
গেলো ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে গিয়ে পারিবারিক কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ শেষে ভাগ্নে ভাগ্নিসহ এবার বেশ কয়েকজায়গায় যাওয়া হয়েছে এবং অনেকের সাথে ১০/২০/৩০ বছর পরেও দেখা হয়েছে। জানিনা আবার ওই সমস্ত লোকের সাথে দেখা হবে কি না। তবে এবার যাত্রায় বাংলদেশের শত ঝামেলা, জটিলতা এবং যানজটের মধ্যেও অপূর্ব কিছু মানুষের সাথে কিছু অপূর্ব সময় কেটেছে। আর আমি যেটা খুব শক্তভাবে বিশ্বাস করি যে শত ঝামেলা, জটিলতা এবং যানজটের মধ্যেও দেশটি এখনো টিকে আছে এবং চলছে সেটি ওই সমস্ত অসাধারণ এবং অপূর্ব কিছু মানুষের জন্য !!!
নিচের ছবির সেলফিটি কোনো হোমরা-চোমরা বা সেলিব্রেটির সাথে নয়, ছবিটিতে আমি এবং আমার ভাগ্নের সাথে আমার বড়বোনের ভাসুরের শাশুড়ির ছবি। উনার বয়স শতোর্ধ। এখনো কথা বলতে পারেন। খুবই সাধারণ এবং বেক্তিত্বপূর্ণ একজন মানুষ। সাম্প্রতিক পড়ে গিয়ে ব্যথা পাওয়ার কারণে বর্তমান বিছানা আছেন, তবে তার আগে উনি সঠিকভাবে চলাফেরাও করতে পারতেন।
উনি সেকালের, আমি মাঝামাঝি কালের আর আমার ভাগ্নে একালের। উনি থাকেন বরিশাল শহরের অদূরে ধবধৈব্বা নামক গ্রামে। উক্ত গ্রামের গাছ-পালা নদীনালা ঘেরা নিষ্পাপ, নির্মল পরিবেশের মতো উনার মনটা। ভালো লেগেছে ওই এলাকার অতিথিয়েতাপরায়ণ এবং অকপট সাধারণ মানুষদেরকেও। সময়স্বল্পতার কারণে বেশিক্ষন থাকা হয়নি, তবে ওখানে অনেকটা সময় কাটানোর মতো ভালো জায়গা। ঠিক ওই রকম লেগেছিলো সিলেটের হবিগঞ্জের অদূরে কাকলাইছ বাজারের কাছে আনন্দপুর গ্রামে।
আপনারা লক্ষ করে দেখুন, উনার মুখের চামড়া এখনো যথেষ্ট মলিন, চোখের ভুরু এখনো কালো। না, উনি কোনো মেক-আপ লাগাননি। আমি উনাকে দেখার পরে আমার নিজের এবং উনার হাঁটুর বয়োসী আমার ভাগ্নি বা বোনেদের দিকে তাকিয়ে দেখলাম, বরং আমাদের অনেকের ভুরু কিছুটা পেকেছে বা কালোত্ব হারিয়েছে কিন্তু উনারটা এখনো অটুট। হয়তো এর পিছনে ভেজালহীন মন, ভেজালহীন খাওয়া এবং ভেজালহীন পরিবেশ এর কৃতিত্ব অনেক ।
ওই শতোর্ধ মানুষটি তার সমন্ধে কিছু লেখা এবং আমার কিছু সময় পাওয়া অবশ্যই deserve করেন। আল্লাহ উনাকে আরো অনেক দিন বাঁচিয়ে রাখুন।
ধন্যবাদ।