নরওয়ে থেকে:-
রূপে মাধুর্যে ভরা দেশ নরওয়েতে থাকলেও-
অঝোর ঝরা বৃষ্টি, ফুলেফেঁপে উঠা বনুয়ারবিল, ডাহুক পাখির মিহি কণ্ঠের ডাক আর সকালে মায়ের হাতের এক কাপ চা আমাকে পাগলের মতো টানে।
মাথার উপর বাবার হাত নেই সেই ১৬টা বৎসর।
বোনেরাও ব্যস্ত নিজেদের সংসার নিয়ে।
ভাইয়েরা আছে যার যার মতো করে –
দিন নাই রাত্রি নাই, ব্যস্ততা সারাক্ষন , তারপরও
মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে কৈশোরে ফিরে যেতে।
ইচ্ছে করে মন ভরে শুনতে ফয়জুল চাচার দরাজ কণ্ঠের সেই কোরান তেলাওয়াত। নজরু চাচার মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলোর গল্প কাহিনী।
জিজ্ঞেস না করেই কানু চাচার গাছের গোলাপজামগুলো পেড়ে খেতে ইচ্ছে করে । ইচ্ছে করে সব বাঁধা ম্লান করে এক কিশোরীর সাথে স্কুলে হেটে যাবার !
দুরন্ত কৈশোর আমার, কেনোইবা হাতছানি দিয়ে ডাকো বারেবার ?
কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালোবাসে বলো ??
অনেক বৎসর হয় নরওয়েতে থাকি ,
প্রিয়জনেরা আজ কত দূরে !
দিপক, রতিন্দ্র , বিশ্বজিৎ, অম্লান, হিলাল বাহারেরা থাকে দেশে,
প্রণব, তানভীর আমেরিকায় , সুয়েব, সামাদ সহ আরো অনেকেই লন্ডনে।
কতজনা ভালোবেসে হাতে হাত রাখলেও , ফিরে পাইনা দেশে ফেলে ফেলে আসা সেই কিশোরী আর তরুণীদের ভালোবাসার স্বাদ।
সীমাহীন আটলান্টিক সাগরের নীল জলরাশির ধারে বসেও ফিরে পাইনা আমার বনুয়া বিলের টান।
সিলেট শহর, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, লাল সবুজের পতাকা সবই আমায় টানে।
বেলা শেষে ফেরা হবে সেই প্রাণের বাংলায়, বঙ্গবন্ধুর দেশে কতোয়ালপুর গ্রামে।
আমার মায়াবতী বনুয়ার বিল, রুমাঞ্চভরা সিলেট শহর, লাল সবুজের পতাকা সেদিনও যেন থাকে,
ফেলে আসা ভালোবাসাটুকু থাকে যেন আকাশের নীল সীমানায়।