ফ্লোরিডা থেকে:-
জ্যোছনার একটি ঝলকের মত অদ্ভুত সুন্দর সে। গড়ন লিক লিকে নয় আবার স্থুলও নয়, একদম যেমন হলে দৃষ্টি শান্ত হয় ঠিক তাই। মুখটি সুন্দর, প্রশান্ত ও শীতল চন্দ্রিমার মত। চোখে যেন বাতাসে দোদুল্যমান একটি অশথ্থের প্রতিবিম্ব।
কালো চুল, কিন্তু লম্বা নয়। এখন লম্বা চুল খুব একটা দেখাই যায় না। ওর চুল ঘাড় ঢেকেছে। কন্ঠ লম্বা, তবে বেঢপ নয়।যে তার স্রষ্টা, তার স্থাপত্য ও দেহের বিভিন্ন অংশের জ্যামিতিক সমন্বয় ও অনুপাত-জ্ঞান অতি তীক্ষ্ণ। কোথাও কিছু অতিরিক্ত নয়, কোথাও কিছুর অভাব নেই। দক্ষ ও অভিজ্ঞ মালি যেমন জানে, বাগানের কোন ফুলটি কোথায় মানাবে, ঠিক তেমন। কচি লাউয়ের মসৃন চামড়ার মত ত্বক।
সদ্যই আঠারো পূর্ণ হয়েছে তার। এবং দাঁড়িয়ে আছে ঋজু, সাইপ্রেস বৃক্ষের মত। সে যে শার্টটি পরেছে, তা সংক্ষিপ্ত। তার অনাবৃত উদর, সমতল, এমনকি সামান্য অবতল। নাভি গভীর ইদারা নয় বরং অপরাজিতা ফুল-দলের মত একটু ঢালু। তার চোখে স্বৈরিনী হাসি বা কোন কিছুর ঈঙ্গিত নেই, কোন কামনার পপি মাদকতা নেই।
শুধু এক বৃহৎ হারিয়ে যাবার প্রান্তর।
কবি মুগ্ধ ও তন্ময়।
এবং সে তাকে অনাবৃত করে নিজের অন্তজ আঙ্গিনায় এবং সে তার পূর্ণস্তন দেখতে পায়।
অশিথিল, দৃঢ় এবং নিজস্ব পাত্রে। ফুলের টব তাকে স্থাপন করলে যেমন সে নীচে বা উপরে সরে যায় না, ঠিক তেমনি স্বস্থানে। তার বৃন্ত নিদ-তন্ময় ও গাঢ়ো বৃন্ত-বৃত্তে উষা-পূর্ব আঁধার।
কুমারি স্তনের কি চাঁদের সাথে তুলনা মিলে? না, প্রাচীন সে তুলনা।
বেদানার পূর্ণতা? সেও অনেক পুরনো।
বেল, বিল্ব, বরুন ফল, অমরাবতির নাশপাতি?
অতি ব্যবহৃত। কবি তন্য তন্য করে খুঁজতে থাকে।
নিজের গহীনে উদভ্রান্তি বোধ করে।
শব্দ যেন সমুদ্র, সে সমুদ্রে সাঁতরায়। শব্দ যেন অবিরল মেঠো-হাওয়ায় উড়ন্ত ঘুড়ি, সে ঘুড়ির পেছনে ছুটতে শুরু করে। শব্দ যেন অতীতের কোন অরণ্যানীর গহীনে লুকানো স্বচ্ছজলের খরস্রোতা স্রোতস্বীনী, সে স্রোতে ভেসে যায়।কিন্তু কোন মতেই খুঁজে পায় না শব্দ-মাণিক্য, একটিও উপযুক্ত উপমা এই যুগল স্তনের বর্ণনা করার জন্য। শুধু তাই নয়, তাদের ঘিরে যে অনুভূতি, যে বিহ্বলতা তা কি শুধুই লিবিডো মিশ্রিত, নাকি তারও অতীত কিছু আছে ?
কোন অবয়ব, রূপ, রস, গন্ধ ও স্পর্শনের রামধনু রং?
সুন্দরের সামনে এসে কবি শিশু হয়ে যায়, যার কোন কিছু সম্পর্কেই কোনো জ্ঞান নেই, কোন প্রজ্ঞা, অভিজ্ঞতা, বিচার ক্ষমতা নেই। সে শুধু তাকিয়ে তাকিয়ে দেখে আর তার চারিদিকে আলো ঝলমল করে।
সৌন্দর্য অবর্ণিত বিমূর্ত এক বিস্ময়ের মহাসমুদ্র, কবি হিরণ্য হারপুনে বিদ্ধ মীন।
শাহাব আহমেদ
সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৯