পরবাসে পজেটিভ বাংলাদেশ উপস্থাপনে এগিয়ে যাচ্ছে ‘এন্টিভাইরাস টিম’। ‘এন্টিভাইরাস টিম’ সংযুক্ত আরব আমিরাতের সবচেয়ে নবীন সংগঠন। নতুন প্রজন্মের একঝাঁক উচ্ছল তরুণের সমন্বয়ে ২০১৫ সালের শুরুতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে দুবাই এবং শারজাহকেন্দ্রিক এ সামাজিক সংগঠনের যাত্রা শুরু।
নাম নিয়ে অনেকে বিভিন্ন মন্তব্য করলেও কথায় নয় কাজে বিশ্বাসী এন্টিভাইরাস। বিশ্বায়নের এই যুগে বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়েই আধুনিকতা এবং ডিজিটালের সমন্বয়ে এ নাম নির্ধারণ করা হয়। অরাজনৈতিক সামাজিক সংগঠন হিসেবে এ পরিবারে নেতৃত্ব বা পদ নিয়ে কাড়াকাড়ি নেই। সবাই সদস্য আবার সবাই দায়িত্বশীল। ভালো কাজ বা কাজের সহযোগী হয়ে সব সদস্যের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় খুব কম সময়ে এন্টিভাইরাস আরব আমিরাতে বসবাসরত বাংলাদেশিদের মন জয় করতে সক্ষম হয়েছে।
এন্টিভাইরাস শুরু থেকেই দক্ষতার সাথে সমাজ সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে বা সমাজ সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ডের সহযোগী। যার মাঝে উল্লেখযোগ্য গত মার্চে শারজাহ মদিনা ক্রিকেট গ্রাউন্ডে বাংলা হ্যারিটেজ আয়োজিত মেলায় সমাজ সচেতনতামূলক নাটিকা প্রদর্শন। মূলত আরব আমিরাতে সমসাময়িক অবস্থায় বাংলাদেশিদের অনৈতিক কর্মগুলোর বাস্তব চিত্র এন্টিভাইরাসের নাটিকা ‘ফাপরবাজ’। এতে ফুটে উঠে দালালের খপ্পরে পড়া অসহায় বাংলাদেশির প্রবাসজীবন, ব্যালেন্স ব্যবসায় বাংলাদেশিরা, এক বাংলাদেশির কাছে প্রতারিত অন্য বাংলাদেশি, অবৈধ হুন্ডি ব্যবসায় বাংলাদেশিরা। ভালো অবস্থানে কর্মরত বাংলাদেশিরা নিজ দেশের পরিচয় না দিয়ে ভিনদেশের পরিচয় দেয়াসহ আরো কিছু অসংগতি নাটিকায় প্রদর্শিত হয়েছে। স্বল্প সময়ের এ নাটিকা মেলায় উপস্থিত হওয়া প্রায় ১৮০০০ বাংলাদেশির মন কেড়ে নেয়। নাটিকার সাফল্যের ধারাবাহিকতায় ২৮ নভেম্বর ২০১৫ সংযুক্ত আরব আমিরাতের ৪৪তম জাতীয় দিবসের প্যারেডে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ আলাদাভাবে ও বর্ণিল সাজে সজ্জিত হয়ে কয়েকটি গ্রুপে অংশগ্রহণ করে। যার একটি ছিল ‘টিম টাইগার’। ‘টিম টাইগার’ মূলত এন্টিভাইরাস-এর সুসজ্জিত একটি দল, যারা প্যারেডে অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশ দলের প্রতীকী টাইগার ও ৫০ মিটার ব্যাট বহন করে। অংশগ্রহণকারী সব সদস্যের গায়ে ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জার্সি। ৫০ মিটার ব্যাট ও প্রতীকী টাইগার বহনের দৃশ্য প্যারেডে অংশগ্রহণকারী আরব আমিরাতের স্থানীয় মানুষ, আরব আমিরাতে বসবাসকারী অধিবাসী ছাড়াও প্যারেডে আসা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সংবাদকর্মীদের নজর কাড়ে। প্যারেডে অংশগ্রহণকারী টিম বাংলাদেশের থিম সং কথা, সুর ও সংগীত পরিচালনায় ছিল এন্টিভাইরাস টিম। বাংলাদেশ সোশ্যাল ক্লাব দুবাইয়ের সার্বিক তত্ত¡াবধানে ও এনআরবি কেয়ার ফর গালফের সার্বিক সহায়তায় আরব আমিরাতের ৪৪তম প্যারেডে প্রায় ৫০০শ বাংলাদেশি উপস্থিত ছিল। বাংলা হ্যারিটেজের আয়োজনে বাংলাদেশের ৪৪তম বিজয় দিবস উপলক্ষে শারজায় অনুষ্ঠিত গানে গানে দেশের টানে বিজয় উল্লাসে ‘এন্টিভাইরাস’ টিমের সার্বিক সহযোগিতা সবাইকে মুগ্ধ করে।
ভালো ইচ্ছা বা উদ্দেশ্য থাকলে সংঘবদ্ধ তরুণরা এক হয়ে যে কোনো কাজ সফল করতে পারে তা ইতিমধ্যে এন্টিভাইরাস প্রমাণ করেছে। প্রবাসে পজেটিভ বাংলাদেশ উপস্থাপন করার প্রয়াসে সমাজ সচেতনতামূলক নাটিকা প্রদর্শনের মাধ্যমে যেভাবে শুভ শুচনা হয়েছিল ঠিক তেমনিভাবে সফলতার সাথে ২০১৫ শেষ করেছে এন্টিভাইরাস। সম্প্রতি শারজাহ মদিনা ক্রিকেট একাডেমি প্রাঙ্গণে উইন্টার হট এন্টারটেইনমেন্টের আয়োজনে বিজয় মেলায় নাটক প্রদর্শন করে আবারও মেলায় আসা প্রায় ১০ হাজার দর্শকের মন জয় করেছে।
সর্বোপরি এন্টিভাইরাস-এর পথচলায় যাদের অবদান রয়েছে বা যেসব সংগঠন আমাদের এই প্রবাসে ভালো কিছু করার সুযোগ করে দিয়েছেন বিশেষ করে বাংলা হ্যারিটেজ, বাংলাদেশ সোশ্যাল ক্লাব দুবাই, এনআরবি কেয়ার ফর গালফ, উইন্টার হট এন্টারটেইনমেন্ট, বনফুল, ইভেন্টেলর, হুদায়বিয়া রেস্টুরেন্ট শারজাহসহ অনেকে। এসব প্রতিষ্ঠান বা প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্ত সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। সমসাময়িক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সমাজের পটপরিবর্তনে নতুন কোনো সংগঠনের আগমন ঘটে, যা কোনো ব্যক্তির ইচ্ছা বা স্বপ্নের বাস্তবায়ন। এন্টিভাইরাসও অনেকটা তেমনি, যার একান্ত ইচ্ছা, প্রচেষ্টার ফসল আজকের এন্টিভাইরাস। তিনি হলেন এনআরবি কেয়ার ফর গালফের সিইউ এবং বাংলা হ্যারিটেজের সম্মানিত সেক্রেটারি রফিকুল্লাহ গাজালী। সংযুক্ত আরব আমিরাতে পজেটিভ বাংলাদেশ উপস্থাপন করতেই তিনি এন্টিভাইরাস প্রতিষ্ঠা করেন। এ পরিবারের বর্তমান সদস্যরা হচ্ছেন শেখ তৌহিদুজ্জামান, জহিরুল ইসলাম মজুমদার, তুহিন ভুইয়া, মুহাম্মদ সালাউদ্দিন, মুহাম্মদ তৌহিদ, মুহাম্মদ রুবেল, মুহাম্মাদ ইছমাইল, আফসারুল ইসলাম রাজু, পাভেল আব্দুল্লাহ, জুয়েল অপূর্ব, শাহিন আব্দুল্লাহ, কায়ছার হামিদ, সাজ্জাদ ইসলাম, রবিউল হক, সাইফুল ইসলাম, সাইদুল ইসলাম, মিজান সাঈদ. এস রহমান সোহেল।
আপনাদের এই স্বপ্ন সফল হোক।
আশাকরি সকল প্রবাসী বাংলাদেশীরা আপনাদের পথ অনুসরন করুক।
আগামীতে আপনাদের বিভীন্ন কার্যক্রমের চিত্র তুলে ধরলে খুশী হবো।