নরওয়ে থেকে:-
আমার মা গর্ব করতেই পারেন। আব্বা মারা যাবার পর অনেক কষ্ট করে ছেলেমেয়েদের পড়ালেখা করিয়ে মানুষ করেছেন যে তিনি। বাংলাদেশের মতো জনবহুল একটা দেশে , স্বামীহীন এক গৃহিণীর পক্ষে তার ৬ ছয়টা সন্তানের দেখভাল ও পড়ালেখার দায়িত্ব পালন করা সহজ কথা নয় এবং আমার মা তা সঠিক ভাবে পালন করেছেন মাথার অনেক ঘাম মাটিতে ফেলে। আমার মা গর্ব করবেনই, উনি গর্ব করবেন নাই বা কেন?? তার ৬টি ছেলেমের সবাই আজ শিক্ষিত এবং বাংলাদেশী প্রেক্ষাপটে মোটামুটি প্রতিষ্টিত । নাতি নাতনি ছেলের বৌ, মেয়ের জমি সবাইকে নিয়ে উনার এখন সুখের সংসার। সংসারের দৈনন্দিক খরচাপাতি কিভাবে চলবে তা নিয়ে উনাকে আর মাথা জামাতে হয়না। শুধুমাত্র বার্ধক্য জনিত অসুস্থতা ছাড়া উনার তেমন কোনো সমস্যা নাই. বড়ো ছেলের সন্তানদের সাথে হাসি ঠাট্টা করেই সারাদিন কেটে যায়। তার গ্রাম্য বেয়াড়া মেজো ছেলে আজ নরওয়েতে অনেক ভালো আছে, সুখে আছে। বড়ো ছেলে, ছেলের বৌ সরকারি চাকরি করছে, দুই মেয়ে স্বামী সংসার নিয়ে সুখে আছে, ছুটো ছেলে স্থায়ী ভাবে আমেরিকা যাবে সে জন্য ভিসার অপেক্ষমান। আরেক ছেলে মাস্টার্স শেষ করে চাকরি খুজছে। এই সোনালি বাংলাদেশের সব মা যেন আমার মায়ের মতো হন, যিনি সব প্রতিকূলতার মাঝেও সন্তানদের মানুষ করতে পিছ পা হননি। ভয় পাননি কঠোর বাস্তবতাকে ,, প্রত্যেকটা প্রয়োজনে ছেলে মেয়ের পাশে দাঁড়িয়েছেন ছায়ার মতো হয়ে ,বিধাতার কাছে প্রার্থনা করেছেন রাতভর,, এগিয়ে যাবার প্রত্যয় জুগিয়েছেন নিরলসভাবে। বাংলাদেশের অন্য সব মধ্যবিত্ত ঘরের মায়েদের জন্য আমাদের মা এক অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবেন চিরকাল। মা দিবসে পৃথিবীর সব মায়েদের সাথে সাথে আমার মা এর প্রতিও বিশেষ শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।
শরীফ ভাই আপনার লেখা পড়ে ভালো লাগলো. ভালো থাকুন.