মনের জানালাটা খুললে
এখনো স্মৃতিগুলো জ্বলজ্বল করে ভেসে উঠে
ছেলেবেলায় বাবার খুব নেওটা ছিলাম আমি
বাবা আমাকে মা বলাতে
সেই ছোট আমি তখন থেকেই মা হয়ে উঠেছিলাম
বাবাকে আগলে রাখতে চাইতাম ছেলের মতো করে
তার চুল আঁচড়ানো , শার্ট, জুতা এগিয়ে দেয়া
মিছামিছি জ্বর দেখে কপাল টিপে দেয়া
সব করতাম ছেলে ভেবে
মা দূরে দাঁড়িয়ে হাসতেন
বাবার স্নেহের প্রশ্রয় দেয়া দেখে
রাতে ঘুমানোর আগে বাবার কাছ থেকে
শতবার শুনতাম একই গল্প
কিন্তু প্রতিবারেই গল্পটাকে না শোনা মনে হতো
বাবা যে কি জাদু মিশিয়ে গল্প বলতেন
যেন আমি আজো শুনতে পাই তার মধুর কণ্ঠ ।
আমার কৈশোরে সময়ের প্রয়োজনে
বাবা গিয়েছিলেন দেশের বাইরে
আমরা অধির আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় থাকতাম
ডাক পিয়ন ইমান আলী চাচার
বাবা তার প্রতিদিনের কাজের বিবরনী
লিখে পাঠাতেন আমাদের জন্য
তাতে থাকতো তার মনের সব আবেগ, ভালবাসা
বাবার ফিরে আসার অপেক্ষায় দিন গুনতাম
একদিন দুইদিন করে ।
এক সময় আমাদের প্রতিক্ষার পালা শেষ হতো
বাবা ফিরে আসতেন আমাদের চাহিদা মাফিক
ফর্দ মিলিয়ে কেনাকাটা করে ।
আমাদের সাত তারা মঞ্জিলে বয়ে যেত আনন্দের বন্যা ।
এখনো বাড়ীটা আছে ঠিক আগের মত
নেই শুধু সেই প্রিয় মানুষ
এখন আর আসে না কোন চিঠি
নেই বাবার ফিরে আসার অপেক্ষা ।