শ্রীকান্তর মতো ছন্নছাড়া আমার জীবনে ধ্রুব তারা হয়ে তুমি এলে
আমার একলা আকাশে অমাবশ্যার নিশুতি রাতে আমায় পথ দেখালে,
সভ্যতার চোরা গলিতে হোঁচট খাওয়া এই আমি সমর্পিত হলাম তোমার বাহুবন্ধনে
আর্কিমিডিসের সূত্রকে অমান্য করে আমায় ভাসতে শেখালে উত্তাল ভালোবাসার সাগরে।
পাড়ার দোকান থেকে বাকিতে রঙ্গিন সব ফুল কিনে এনে জয় করে নিলাম তোমার হৃদয়
বললাম, ‘দেখো মেয়ে, আমায় বিশ্বাস করো, সারা জীবন ফুলে ফুলে রাঙ্গিয়ে দিবো তোমায়
বোকার মতো আমায় বিশ্বাস করলে তুমি, হাতে হাত রেখে বললে আমায়
‘সাত সমুদ্রের পাড়ের আজবদেশে নিয়ে যাবে যেখানে অদ্ভুত সভ্যতা কাঁদায় আবার হাসায়?
মধবিত্তের সংসারে পাহাড় সমান চড়াই উৎরাই পেড়িয়ে এলাম এই সভ্য দেশে
আবার নতুন করে ঘষে মেজে সাজলাম একেবারে নতুন বেশে,
অসভ্য থেকে সভ্য হলাম অথবা সভ্য থেকে অসভ্য হলাম
ময়ূরের দেশে দাঁড় কাক হয়ে তোমার হাতে হাত রেখে থেকেই গেলাম।
বহু দিন পরে, বই এর ভাঁজে যত্ন করে রাখা সেই ফুলগুলি চ্যাপ্টা হয়ে রং বদলায়
অদ্ভুতভাবে আটকে থাকে পরম মমতায় বই এর পাতায়,
হতে পারে সেই রং নেই, সুবাস নেই, ক্ষতি কি? সেইতো হুবহু একই আকার- আকৃতি
সময়ের ভারে তুমিও বদলাওনি মোটেই, সেই নাক, চোখ মুখ, ভালবাসার হয়নি বিকৃতি।
নায়েগ্রা ফলস, সাফারি পার্ক, টিউলিপ ফেস্টিভ্যাল, প্রজাপতির মতো কত ঘুরে বেড়িয়েছি
বেয়াড়া ওয়াদার, মাতৃভূমির জন্য কষ্ট, তবুও খুশি, সেই আজব দেশে তোমায় আনতে পেরেছি
প্রকান্ড শান্ত লেকের ধারে জোনাকিহীন ভরা পূর্ণিমার রাতে ড্যাফোডিল হাতে রাশি রাশি
বেহায়ার মতো কেবল ক্রমাগত বলতেই থাকি ‘ওগো মেয়ে তোমায় ভালোবাসি, ভালোবাসি’।