— এখানটায় এতো ঘুটঘুটে অন্ধকার কেন?
— কেন ভয় লাগছে? জানো অনেক বছর আগে এখানে একটা লাশ পড়েছিল! ঐ যে বেগুনি রংয়ের ফুলে উপচে পড়া ঝোপটা, ওটার ঐ পাশে।
— এসব কথা এখন বলো না তো! চলো দ্রুত জায়গাটা ছেড়ে চলে যাই।
—- তখনো এমন কৃষ্ণ পক্ষ রাত ছিলো। হত্যার মোটিভ এবং ধরন বোঝার জন্যে পুলিশ মৃতদেহটাকে এপাশ-ওপাশ করে দেখছিল!
জায়গাটার বিশেষত্ব হলো—
এখান থেকে আকাশটাকে যেমন দেখা যায় এ তল্লাটে তেমন স্থান আর কোথাও নেই। মৃত্যুর পূর্বে সব ভুলে লোকটা হয়তো ঐ আকাশই
দেখছিল! কে জানে?
— কি সব আবোলতাবোল বকছো? বললাম তো, তোমাকে এ নিয়ে আর কোনো কথা না বলতে?
— লাশের কথা শুনে মনে হচ্ছে তোমার ভয় আরও বেড়ে গেলো?
— বাড়বে না?
— কেন বাড়বে? বিষয়টাকে এভাবে দেখ, দিনের আলোয় আমরা যখন জনাকীর্ণ ফুটপাত ধরে হাঁটি, তখন কতো লাশ আমাদের পাশ কেটে
চলে যায়! জিন্দা লাশ! কেউ জীবনের চাপে, কেউ মহামান্য ভৌতিক এই সভ্যতার চাপে। কেউ…
আসলে আমাদের চারপাশে প্রতিনিয়ত আমরা যাদেরকে দেখি তাদের বেশিরভাগই হয় জিন্দা লাশ নয়তো ভ্যাম্পায়ার!
— এটা কিন্তু তুমি ঠিকই বলেছো!
— তাহলে চলো আমরা ঐ ওখানটায় গিয়ে আরও খানিকটা সময় কাটাই!
—- তুমি পাগল হলে নাকি!?
— তা হয়তো খানিকটা। তবে বিষয়টা কী জানো? মাঝে মাঝে আমাদের আঁধারেই কিছুটা সময় কাটানো উচিত। তাহলে আমাদেরকে দিক
ভ্রষ্ট করার জন্যে শত বছরে সৃষ্ট এই যে মিথ্যে আলোর প্রহসন, এতো বিচ্ছুরণ, এটা বুঝতে কিছুটা সহজ হয়! প্রকৃত আলোর রূপটা
উপলব্ধিতে আনতে তাই মাঝে মাঝে এমন আঁধারেই যাপন করা উচিত আমাদের!
— ওহ্!—
— তাহলে চলো যাই?
—- আবারও!?
_______© ফরিদ / জানুয়ারী ১৬, ২০২৪