শ্যামলীদের বাসায় আনন্দ, খুশি যেন উপচে পড়ছে। গল্প-গুজব, ভালো খাওয়া-দাওয়া, গান-বাজনা ইত্যাদি। তবে, এই উৎসবে গৃহকর্তা সতীশ বাবুকে তেমন একটা উৎসব মুখর মনে হচ্ছে না। তিনি বিরস মুখে বারান্দায় বসে সিগারেট ফুঁকছেন আর বাইরের শ্রাবনের বৃষ্টি পর্যবেক্ষণ করছেন। ঢাকা শহরে একটু বৃষ্টিতেই যেখানে রাস্তাঘাটে পানি থই থই করে সেখানে শ্রাবন মাসের বৃষ্টিতে আরও কাহিল অবস্থা। সতীশ বাবুর অবশ্য সেই কাহিল অবস্থার জন্যে মন খারাপ না, ওনার মন খারাপ ভিন্ন কারণে। আগস্ট ৫ এর পরে উচ্ছৃঙ্খল ছেলেমেয়েরা জাতির পিত বঙ্গবন্ধুর স্থাপত্যসমূহ ভেঙে চুরমার করে উল্লাস করছে। এই জাতি কি এটি বেঈমানের জাতি !! ঈমান বা বেঈমান এর দৃষ্টিভঙ্গি একেক বাংলাদেশির ক্ষেত্রে একেক রকম। সাম্প্রতিক ২০২২৪ সালের সহস্রাধিক শিশু-কিশোর আপামর জনতার মর্মান্তিক মৃত্যুসমূহ, আয়না ঘরের ভয়াবহ টর্চার, দেশের কোটি কোটি অর্থসম্পদ বিদেশে পাচার করার ঘটনাসমূহ যেমন কিছু মানুষের কাছে মূল্যহীন, আবার জাতির পিতার স্থাপত্যসমূহের মর্যদাও অনেকের কাছেই অমূল্য রতন । মূল্য -অমূল্যের এক জটিল সমীকরণ পথে হাঁটছে বাংলাদেশ।

যাক সেসব কথা। আজ যে শ্যমলীদের বাসায় উৎসব হচ্ছে তার উপলক্ষ, সতীশ বাবুর বন্ধুর ছেলে পরিমলকে ফিরে পাওয়া। আগস্ট ৫ এর পরে আয়না ঘরে আটকে থাকা পরিমলকে পরে হাসপাতাল থেকে উদ্ধার করে গতকাল বাসায় নিয়ে আসার পরে শ্যামলীদের বাসায় উৎসব চলছে। উৎসবে যোগ দিতে বগুড়া থেকে এসেছেন পরিমলের মা নীলাঞ্জনা দেবী। ছেলের খোঁজ পাওয়ার কথা শুনে তিনি পরিমলের ছোট কাকা হরেন বাবুকে নিয়ে বগুড়া থেকে নাইট কোচে আজ ভোরে ঢাকায় পৌঁছে সরাসরি শ্যামলীদের বাসায় এসেছেন। পরিমলের বাবা নগেন বাবুকে একটি পরিষ্কার ধুতি পরিয়ে দেয়া হয়েছে। ছেলেকে ফিরে পেয়ে নগেনের মানসিক স্বাস্থ্যের সাময়িক উন্নতি হলেই পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে আগামীকাল ভোরে হরেন বাবু তাঁকে পাবনায় নিয়ে যাবেন। নীলাঞ্জনা দেবী আরো সপ্তাহ খানিক অসুস্থ পরিমলকে নিয়ে শ্যামলীদের এখানে থাকবেন। এর মধ্যে পরিমল কিছুটা সুস্থ হয়ে এলে ছেলেকে নিয়ে বগুড়ায় নিজ বাড়িতে চলে যাবেন।

পরিমলের ঘুম ভাঙলো সকাল সাড়ে নয়টার দিকে। ঘুমের স্থায়িত্ব আরও বেশি হতে পারতো, দরজায় মৃদু টোকা পড়ায় সে চোখ মেলে তাকিয়ে দেখলো একটি রূপবতী যুবতী পিরিচে একটি চা কাপ হাতে নিয়ে মেঝের দিকে তাকিয়ে বলছে, ‘দরজা খুলতে আপনার কষ্ট হবে তাই ভেতরে ঢুকে পড়েছি দাদা। আপনারতো হবার ঘুমভেঙেই চা খাবার অভ্যাস, তাই ভাবলাম ….। তবে, এভাবে হঠাৎ করে ঢুকে পড়া আমার উচিত হয়নি।’ পরিমল প্রায় সপ্তাহ খানিক আয়না ঘরে আটকে ছিল। এই কয়েক দিনেই ভয়ংকর পৈশাচিক টর্চারে স্মৃতিশক্তি একেবারে এলোমেলো না হলেও অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়েছে। পরিমলের মনে হলো অনেক অনেক দূর থেকে কে যেন রিনরিনে গলায় মিষ্টি সুরে কথা বলছে। মেয়েটি কে ? যুবতীটির দৃষ্টি মেঝে থেকে সরিয়ে সরাসরি পরিমলের চোখের দিকে। যুবতীটিকে পরিমল ততক্ষনে চিনে ফেলেছে। অস্ফুট স্বরে বললো, ‘শ্যামলী !!’ শ্যামলীর দুচোখ বেয়ে টপ টপ করে পানি পড়ছে।

রান্না ঘরে প্রভারানী অতিথি নীলাঞ্জনা দেবীর সাথে হেসে হেসে গল্প করছে আর সকালের নাস্তা রান্না করছেন। নীলাঞ্জনা বললেন, ‘দিদি তোমার কাছে একটি কিছু চাইবো, না বলবে না কিন্তু।’ এ জাতীয় প্রশ্নে কি মানে করা হয় তা বুঝতে প্রভারানীর মোটেই অসুবিধা হলো না। তবুও না বোঝার ভান করে তিনি বললেন, ‘কি এমন কিছু দিদি এভাবে চাইছো ?’ নীলাঞ্জনা হাসিমুখে বললেন, ‘তোমার বড় মেয়ে গো দিদি, আমার পরিমল আরেকটু সুস্থ হয়ে নিক, তারপর দুজনের জুটি বেঁধে দিতে হবে গো দিদি , এই বলে নীলাঞ্জনা প্রভারানীর হাত ধরে হাসিমুখে বললনে, ‘ কি ঠিক আছে তো দিদি !” ঠিক সেই মুহূর্তেই অর্চনা কি মনে করে রান্না ঘরে ঢুঁ মারতে এসেছিল। ঘরে ঢুকতেই মা ও মাসির কথাবার্তার শেষাংশ তার কানে ঢুকেছে। অর্চনাকে দেখেই প্রভারানী বললো, ‘এই যে এতক্ষনে ঘুম ভাঙলো, যা তো মা দেখতো তোর দাদার ঘুম ভেঙেছে কি না, ঘুম ভাঙলে দাদার ঘরে নাস্তা দিয়ে আয়। অর্চনা এইমাত্র আড়াল থেকে যে কথাগুলো শুনছিলো তা শুনে মাথাটা কেমন যেন ঝিম ঝিম করছে। পরিমল দাদার সাথে দিদির বিয়ে হচ্ছে, এ তো ভালো কথা, কিন্তু তার মাথাটা এমন করছে কেন ? দিদিকে সে নিজের চেয়েও ভালোবাসে।

অনেক বছর আগে একবার স্কুলের হোম ওয়ার্ক না করার জন্যে টিচার বেত দিয়ে হাতের তালুতে এমনভাবে মেরেছিলেন যে হাতের তালু ফেটে রক্ত বের হয়েছিল। পরে স্কুল থেকে যখন সে হাতে ব্যান্ডেজ নিয়ে বাসায় ফিরলো, সব শুনে শ্যামলী দিদি রেগে তাৎক্ষণিক স্কুলে যেয়ে হেডমিস্ট্রেসের সাথে দেখা করে সেই টিচারের নামে নালিশ জানিয়ে হুলুস্থূল কান্ড করে ফেললেন। আরেকদিনের ঘটনা। অর্চনা তখন ক্লাস ফাইভে পড়ে। বাবা মা জমিজমা সংক্রান্ত কোনো ব্যাপারে জরুরু ভিত্তিতে তাঁদের দুই বোনকে রেখে বগুড়ায় গেলেন। হঠাৎ করে অর্চনার কঠিন জ্বর হলো। জোরের ঘোরে অর্চনা দেখলো তার দিদি সারা রাট ধরে তার মাথায় পানি দিচ্ছে, কপালে জলপট্টি দিচ্ছে, সারা গা স্পঞ্জ করছে। সেই দিদির জন্যে অর্চণা প্রয়োজনে জান দিতে রাজি ।

মা বলেছে বলে পরিমল দাদার ঘরের দিকে যেতেই দেখতে পেল দরজা আধা ভেজানো। ধীর পায়ে ভেজানো দরজা খুলতেই দেখতে পেল পরিমল দা’র বুকে মাথা গুঁজে দিদি কাঁদছে। অর্চনা বিস্ময়ে তাকিয়ে থেকে বেড়ালের মতো সন্তর্পনে এভাবে এসেছিল সেভাবে চলে গেল।

অর্চনা তড়িৎ বেগে বের হয়ে এসে বাথরুমে ঢুকলো। বাথরুমের আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে পানির ট্যাপ ছেড়ে দিয়ে শব্দ করে কাঁদতে শুরু করলো। দু বোন আলাদা আলাদাভাবে কাঁদছে। দুজনের কান্নার ধরণ ও কারণ আলাদা। অর্চনা শ্যামলীর চেয়ে সাড়ে চার বছরের ছোট হলেও দুবোনই জেন- জি গ্ৰুপের মধ্যেই পড়ে। এই গ্ৰুপের ছেলেমেয়েরা যেমন অনেক সাহসী, তেমনি অনেক ত্যাগী। অতিসম্প্রতি বাংলাদেশিরা এদের সাহসের পরিচয় পেয়েছে। অধিকার কীভাবে করায় গন্ডায় আদায় করে নিতে হয় তার প্রমান জেন- জি গ্ৰুপের সদস্য -সদস্যারা দেখিয়েছে। তবে, এই মুহূর্তে সতীশ বাবুর সংসারে দুবোনের মধ্যে গোপনে অধিকার আদায় ও ত্যাগের যে ব্যাপারটি ঘটলো তা অনেকের কাছেই অজ্ঞাত থেকে গেল।

বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে, মাস দুয়েক পরে পরিমল যখন সুস্থ হয়ে উঠল পরিমলের সাথে অর্চনার বিয়ে হলো। এই জগৎ বড়োই অদ্ভুত।

আরেকটি ভিন্ন ধরণের এক অদ্ভুত ব্যাপার আজ আমার ক্ষেত্রে ঘটলো। গতকাল আমার বাল্যবন্ধু আফসার আলীর ছেলে টরেন্টোতে ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট হিসেবে পড়তে আসা লিটন ওর ক্লাসমেট শম্পাকে নিয়ে ওদের অনুরোধে শম্পার থাকার জন্যে আমার এক বন্ধুর বাসার বেজমেন্ট দেখতে এসেছিলাম । ঝামেলা এড়ানোর জন্যে আমার এই বন্ধুটি শুধু মেয়ে’দের জন্যে এই বেজমেন্টের ভাড়ার ব্যাবস্থা করেছে। এটি তিন বেডরুমের বেজমেন্ট। প্রতিটি রুমে দুটি করে বেড পাতা। প্রত্যেকটি বেডের পাশে একটি করে রাইডিং টেবিল, একটি ড্রেসার। এই ধরণের রুমগুলোকে বলে ফার্নেসেড রুম অর্থাৎ বাড়িওয়ালার তরফ থেকে ফার্নিচার দেয়া হয়েছে। বাড়ির বাড়ার ক্ষেত্রে এই ফার্নেসেড রুমের জন্যে ভাড়া কিছুটা বেশি চার্জ করা হয়। আমরা যে রুমটি দেখতে এসেছিলাম সেই রুমে কলকাতার এক বাঙালি মেয়ে থাকে। মেয়েটির নাম অনুরাধা গাঙ্গুলি। অনুরাধা রুমেই ছিল। আমাদের দেখে মিষ্টি করে হাসলো। আমার বন্ধু অনুরাধার সাথে আমাদের সবার পরিচয় করিয়ে দিল। আমরা সবাই আমাদের নাম বললাম। খানিক্ষন কোথাও বললাম। অনুরাধার কাছে শুনলাম বাকি রুমের মেয়েরাও ভারতীয়। ওরা অবশ্য বাঙালি না, পাঞ্জাবি। আমার বন্ধুর সাথে কথাবার্তা বলে সব ঠিক করে এলাম। শম্পার জন্যে আমি গ্যারান্টর হলাম।

অদ্ভুত, ব্যাপার হচ্ছে, আজ একটু আগে আমার বন্ধু ফোন করে জানালো, ‘ দোস্ত, সরি, সমস্যা হয়ে গেল, সবই ঠিক ছিল কিন্তু আমার বেজমেন্টের বাকি টেনেন্ট মেয়েরা আসলে তোর সেই মেয়েটিকে নিতে চাচ্ছে না’। আমি বললাম, ‘ নিতে চাচ্ছে না মানে, তুই হচ্ছিস বাড়ি ওয়ালা, ওরা না নেবার কে ? বন্ধুটি কাচুমাচু করে বললো, ‘বুঝিস তো দোস্ত, ওদের দিকটাও তো দেখতে হবে’, সবাইকে তো একই কিচেন শেয়ার করতে হবে, মনে কর, তোর সেই মেয়েটি গরুর মাংস রান্না করলো, ওদের গন্ধ লাগলো , এই আরকি। আমি বললাম, তোরা বাসায় গরুর মাংস রান্না করিস না ? আর মেয়েটি যদি গরুর মাংস না রান্না করে, তা হলে কি ওকে রুম ভাড়া ডিবি? বন্ধুটি বললো, ‘দোস্ত প্লিজ অন্য কোথাও দেখ, ওর একজনের জন্যে বই টেনেন্টদের লুজ করতে চাই না। আমি বন্ধুর ফোন পেয়ে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে ভাবলাম, আগস্ট ৫ এর পরে শুধু বাংলাদেশ ভারতের সম্প্যর্ক্যের অবনতি ঘটেনি, দেশ ও প্রবাসেও বাংলাদেশী ও বাংলাভাষী হিন্দু ও মুসলমান লোকজনের মধ্যেও এই সম্পর্ক্য অবনতির ঢেউ এসে আঘাত হেনেছে !!

চলবে।
আগের পর্ব গুলির জন্য নিচের লিংক ক্লিক করুন।

পর্ব ১-পর্ব ১ / পর্ব ২-পর্ব ২ / পর্ব ৩-পর্ব ৩ / পর্ব ৪-পর্ব ৪ / পর্ব ৫-পর্ব ৫ / পর্ব ৬-পর্ব ৬
পর্ব ৭-পর্ব ৭ / পর্ব ৮-পর্ব ৮ / পর্ব ৯-পর্ব ৯ / পর্ব ১০-পর্ব ১০ / পর্ব ১১-পর্ব ১১ /  পর্ব ১২-পর্ব ১২

পর্ব ১৩-পর্ব ১৩ / পর্ব ১৪- পর্ব ১৪

পূর্ববর্তী নিবন্ধ“জেন-জি” : এ জার্নি ফ্রম এক্স টু জেড -পর্ব ১৪
জাকারিয়া মুহাম্মদ ময়ীন উদ্দিন
জাকারিয়া মুহাম্মদ ময়ীন উদ্দিন (জন্ম: ১৯৬৬ ), বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়ে উন্নয়ন কর্মী হয়ে দেশীয় ও আন্তজার্তিক অবাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে চাকুরী শুরু করেন এবং তখন থেকেই লেখালেখিতে মনোনিবেশ। তবে লেখালেখি শুরুটা ছিল সেই হাইস্কুল জীবনে পাড়ার বড় ভাইদের প্রকাশিত ম্যাগাজিন 'অবসর' নামক পত্রিকার মাধ্যমে। ২০০৩ সালে কানাডায় সপরিবারে স্থায়ী ভাবে বসবাস শুরু করে, আবারও পড়াশুনা, প্রথম Humber College থেকে সোশ্যাল সার্ভিস বিষয়ে দুই বছরের ডিপ্লোমা, পরে University of Guelph থেকে ফ্যামিলি & কমিউনিটি সোশ্যাল সার্ভিস বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে আবারও উন্নয়ন কর্মী হিসাবে রেজিস্টার্ড সোশ্যাল সার্ভিস ওয়ার্কার হিসাবে ২০১০ সাল থেকে অদ্যাবধি টরেন্ট ভিত্তিক বিভিন্ন অবাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে চাকুরীর করছেন । লেখকের কয়েকটি জনপ্রিয় ধারাবাহিক গল্পপ্রবাসী ব্লগ, কানাডা ভিত্তিক একটি সাপ্তাহিক বাংলামেইল পত্রিকায় এবং মাসমিডিয়াতে ব্যাপক সাড়া পাওয়ার পরে ঢাকায় ২০২৩ সালের একুশে বইমেলায় লেখকের তিনটি বই হোমলেস, সিঙ্গেল মাদার, জোসনা ম্যানশন উপন্যাস আকারে প্রকাশিত হয় । বর্তমানে হাউজ হাজব্যান্ড নামে লেখকের আরেকটি জনপ্রিয় ধারাবাহিক কে উপন্যাস হিসাবে ২০২৪ সালের ঢাকা একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হওয়ার অপেক্ষায় আছে । মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক লেখকের একটি জনপ্রিয় গল্প 'শেকড়' ২০২১ সালে বাংলাদেশের বুকল্যান্ড প্রকাশনা থেকে ৫০ লেখকের ভাবনা নিয়ে পঞ্চাশে বাংলাদেশ গ্রন্থে প্রকাশিত হয়েছিল। গল্প/উপন্যাসের পাশাপাশি কবিতা, প্রবন্ধ লেখা ছাড়াও খেলাধুলা নিয়েও লেখকের অনেক লেখা রয়েছে।

আপনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন