বাংলাদেশের কোটাবিরোধী আন্দোলনের উত্তাপ দেশের সীমানা ছাড়িয়ে প্রবাসে বাংলাদেশী কমিউনিটিগুলোতেও আঘাত হানছে। দেশের মতো প্রবাসেও বাংলাদেশী কমিউনিটিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুটি ধারা যথাযত স্বকীয় মহিমায় উজ্জীবিত হয়ে নিজনিজ পার্টির বন্দনায় ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়। সামাজিক কর্মকান্ড যেমন উইকেন্ডে কারো বাসায় হাউজ ওয়ার্মিং পার্টি, বার্থডে পার্টি, ম্যারেজ এনিভার্সারি পার্টি অথবা আরো বড়ো সোস্যাল গ্যাদারিং প্রভৃতি ক্ষেতে দেখা যায় মাঝে মাঝে নৌকা ও ধানের শীষপন্থীদের মাঝে হঠাৎ হঠাৎ করে কথা কাটাকাটি লেগে গেল। পরিস্থিতি হয়তো এক পর্যায়ে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার পরে সাদা জাতির পুলিশবাহিনীর সহায়তায় হয়তো একসময় মিটেও গেল। তারপরে, আবারো একসাথে আড্ডা। আমি যেহেতু আওয়ামী লীগ বা বিএনপি দুটোই করি না, তাই নিজেকে এসব রাজনৈতিক হট্টগোল থেকে দূরে থেকে লেখালেখিতে মনোনিবেশ করি।
তবে, পৃথিবীর কেউই রাজনীতির উর্ধে না। আমিও হয়তো না । একসময়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহে লেখাপড়া করা অবস্থায় আমি একটি প্রগতিশীল বাম ছাত্র সংগঠনের সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলাম। আমার লেখায় বাম রাজনীতির প্রভাব আপনারা হয়তো খেয়াল করে থাকবেন । অদ্ভুত ব্যাপার হচ্ছে বাংলাদেশের অধিকাংশ জনগণ খেঁটে খাওয়া শ্রেণীকে প্রতিনিধিত্ব করলেও এবং অধিকাংশ বাংলাদেশের জনগণ বাম দলগুলোর ছোট ছোট অর্জন থেকে সুবিধা পেলেও জাতীয় ক্ষেত্রে এই বাম দলগুলোর উপর কখনোই বাংলাদেশের আপামর জনতা অতীতে আস্থা রাখতে পারেনি। ২০১৩ সালে সেপ্টেম্বর মাসের এক সোমবারের রাতে লন্ডনে সফররত তদানীন্তন বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর উপর যে হামলা হয় তা প্রবাসী বাংলাদেশী কমিউনিটিতে বামরাজনীতির উপর যে অশ্রদ্ধা রয়েছে তাই প্রকাশ পায়। চোর, চুরি করবে, ডাকাত ডাকাতি করবে, এ হচ্ছে জগতের নিয়ম। কিন্তু লোক ভুলানো নীতি নৈতিকতার কথা বলে যারা চুরি করবে, ডাকাতি করবে তাই বা জনগণ মেনে নিবে কীভাবে!! সেই সংগ্রামী জাসদ নেতা ইনু সাহেব এবং ওয়াকার্স পার্টির রাশেদ খান মেননদের পেছনে একসময়ে কোমলমতি মেধাবী তরুণরা কাস্তে-হাতুড়ির ঝান্ডা উড়িয়ে ক্যারিয়ার উৎসর্গ করেছেন সেসব প্রসঙ্গ সময়মতো আমার লেখায় আরো বিস্তারিত নিয়ে আসার চেষ্টা করবো ।
বাংলাদেশে প্রতিদিন বাচ্চা ছেলেয়েদের গুলি করে মেরে ফেলা হচ্ছে। আমার মন একেবারেই ভালো নেই। ভাড়াটিয়ারা ভাড়া দিচ্ছে না। পকেটের পয়সা দিয়ে মর্টগেজ টানতে হচ্ছে। এসব ব্যাপার নিয়ে এক বিকেলে যখন উথাল পাতাল ভাবছি, এরকম সময়ে কলিং বেল বেজে উঠলো। দরজা খুলতেই দেখি লিটন, তার পাশে একটি লম্বা ফর্সা মেয়ে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে। আমি ওদেরকে ভেতরে বসতে বলে কাপড় চেঞ্জ করে ওদের সামনে বসলাম। লিটন আমার পরিচিত এক বন্ধুর ছেলে। বগুড়ায় আমাদের পাড়ায় বাসা। এখানে ইয়র্ক ইউনিভার্সিটিতে ডিজিটাল মিডিয়া সাবজেক্টে আন্ডারগ্রাজুয়েট প্রোগ্রামে সেকেন্ড ইয়ারে পড়ালেখা করে । লিটন মেয়েটিকে পরিচয় করিয়ে দিল। মেয়েটির নাম নাম শম্পা, লিটনের সাথেই একই ভার্সিটিতে একই প্রোগ্রামে একসাথে পড়ে। পরিচয় পর্বের পরে আমি ওদের বসিয়ে রেখে কফি বানিয়ে নিয়ে এলাম। বাসায় মিতা নেই, কাজে আছে। বাচ্চারাও নিজ নিজ কাজ নিয়ে ব্যস্ত।
আমাদের সংস্কৃতিতে পরিচিত স্টুডেন্টদেরসাথে দেখা হলেই জিজ্ঞাসা করার নিয়ম হচ্ছে, প্রশ্ন করতে হয় লেখা পড়া কেমন হচ্ছে, চোখমুখ সুখনা দেখাচ্ছে, পড়াশুনার চাপ বুঝি বেড়েছে, ইত্যাদি। আমাকে সেই জাতীয় প্রশ্ন করতে হচ্ছে না, কারণ টরেন্টোতে এখন সামার চলছে। সাধারণতঃ ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্টরা সামারের ছুটিতে সামার কোর্স না নিয়ে চুটিয়ে কাজ করে ব্যায়বহুল টিউশন ফি’র জন্যে দুটা পয়সা জমিয়ে রাখে। তেমন কোনো কথা খুঁজে না পেয়ে আমি বললাম, ‘তোমার বাবা মা কেমন আছেন? এর মাঝে কথা হয়েছে? লিটন বললো, ‘ আংকেল দেশের যে অবস্থা, এর মধ্যে আর কেমনই বা থাকবে, যেভাবে প্রত্যেকদিন দেশে মানুষদের মেরে ফেলছে।‘ দেশের বর্তমান কোটাবিরোধী আন্দোলন নিয়ে আরো কিছুক্ষন লিটনের সাথে আলাপ করলাম। লিটন বললো, ‘আংকেল আমরা এখানেও প্রতিদিন বিকেলে ড্যানফোর্থে প্ল্যাকার্ড দেশের কোটাবিরোধী মিছিল করি। আমার উৎসাহ দেখে লিটন ফোস করে আমাকে প্রস্তাব দিয়ে বসলো, এইতো আংকেল কাল শনিবার, উইকেন্ডে আমাদের একটি বড়োসড়ো প্রোগ্রম করার প্ল্যান আছে, আপনেও আসেন, অনেকেই তো মিছিলে আমাদের সাথে থাকে। আমি ‘আচ্ছা যাবো’ বলায় লিটনের চোখে মুখে খুশির আভা দেখে বেশ ভালো লাগলো। যুবক বয়স হচ্ছে আন্দোলনের বয়স। বাংলাদেশের অধিকাংশ বড়ো বড়ো অর্জন এই যুবকদের হাত ধরেই এসেছে। ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্টদের শত ঝামেলার মধ্যেও, দেশে না থেকেও দেশের স্টুডেন্টদের জন্যে লিটনের এই ভালোবাসা আমাকে মুগ্ধ করল।
একসময়ে, প্রসঙ্গ ঘুরিয়ে আমি বললাম, কাজ টাজ কিছু করছো নাকি শুধু এসব মিছিল/মিটিং করে বেড়াচ্ছ ? লিটন কাচুমাচু করে বললো, ‘ না আংকেল, আমিতো ওভার নাইটে একটি গ্যাস স্টেশনে কাজ করি আর সপ্তাহে তিন দিন করে একটি রেস্টুরেন্টে কাজ করি। ‘ আরো কিছুক্ষন গল্প শেষে ওঠার আগদিয়ে লিটন উসখুস করছিলো। আমি বললাম, ‘কিছু বলবে ?’ লিটন বললো, ‘আংকেল এই শম্পা যেখানে থাকতো সেই বাসার মালিক হঠাৎ বাড়ি ছাড়ার নোটিস দিয়েছে, বাড়িটি বিক্রি করে দিবে। আপনার জানাশোনার মধ্যে মেয়েরা থাকে এমন কারো বেজমেন্টে একটি রুম যদি ওর জন্যে ম্যানেজ করে দিতেন, খুব ভালো হতো।’
আমার নিজেরও কিছুটা লজ্জা লাগলো। এতক্ষন মেয়েটি বসে আছে, ওর সাথে কোনো কথাই বলা হয়নি। এটি অভদ্রতা। আমি লিটনকে ‘আচ্ছা দেখবো ‘ বলে এবার শম্পা মেয়েটির দিকে তাকিয়ে দেখলাম, মেয়েটি তখনও মাথা নিচু করে বসে আছে। আমি ওকে সহজ করার জন্যে বললাম, ‘ বাংলাদেশে তোমাদের বাসা কোথায় মা ? শম্পা বললো, ‘আংকেল আমাদের বাসা বগুড়ার সারিয়াকান্দি এলাকায় ।’ দেশের একপ্রান্তে ছোট্ট একটু মফস্সল বড় বগুড়া। সেই শহরের আরো ভিতরের গ্রাম এলাকার একটি মেয়ে কানাডায় পড়তে এসেছে, এটি এই বার্তায় দেয় যে মানুষ যতই বলুক, দেশের অনেক উন্নতি হচ্ছে।
উন্নতি সত্যিই হচ্ছে। পদ্মা নদীতে ব্রিজ হয়েছে। ঢাকা শহরে মেট্রো ট্রেন চালু হয়েছে। দেশে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির সংখ্যা বেড়েছে। গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিগুলো প্রবল উদ্দমে তৈরী পোশাক দেশের বাইরে পাঠিয়ে দেশে জিডিপির চাকা সচল রেখেছে। সংবাদ পত্র এবং সরকারি টেলিভিশনের চ্যানেলগুলোতে তোতা পাখির মতো এসব উন্নতির কথা আওয়ামী লীগ সরকারের গুণকীর্তনের কথা অহরহ বলতে শোনা যায়। কেবল শোনা যায় না এসব উন্নতির ফাক গোলে কিভাবে মন্ত্রী-আমলা এবং তাদের চেলাদের ব্যাংকগুলোতে দিনের পর দিন কোটি কোটি টাকা জমছে সেসব কথা। তবে আশার কথা হলেও কদাচিৎ কিছু কিছু খবরের কাগজের তৃতিয় পাতায় কানাডার বেগম পারার কথা কালে ভদ্রে ছাপানো হয়। সেসব খবর পরে কিছু মানুষ তাৎক্ষণিক কিছু সময় ধরে হইচই করে। আবার সেই নীরব দর্শক। তবে, এবারের ব্যাপারটা কিছুটা ভিন্ন মনে হচ্ছে। ছাত্রদের এবারের আন্দোলনের সমর্থন দিয়ে দেশে-প্রবাসে অনেকেই সোচ্চার হয়ে উঠেছেন।
শনিবারের বিকেলে আমি আমার পরিবার নিয়ে ড্যানফোর্থে এসেছি। ড্যানফোর্থ হচ্ছে টরেন্টোতে খোদ বাঙালি পাড়া। আশেপাশে দোকান, রেস্টুরেন্টগুলোর সামনে বড়ো বড়ো করে বাংলায় সাইনবোর্ড দেখে সহজেই এই বাঙালি পাড়াকে চেনা যায়, বোঝা যায়। প্রবাসী বাংলাদেশিরা এখানে কেনাকাটি করে , জটলা করে, আড্ডা দেয়। সন্ধ্যার পরে বিশেষ করে উইকেন্ডে এসব আড্ডা বেশ জমে ওঠে। যেন মনে হয় এক টুকরো বাংলাদেশ। ড্যানফোর্থের পেছনে ড্যান্টোনিয়া পার্কে বছর কয়েক আগে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে। বাংলাদেশিদের নানান রাজনৈতিক কর্মকান্ড , মিছিল ডানফোর্থ থেকে শুরু হয়ে এই শহীদ মিনারে জমায়েত শেষে সমাপ্তি টানা হয়।
গাড়ি পার্ক করে ড্যানফোর্থের জটলার দিকে আমি ও আমার পরিবার নিয়ে এগুচ্ছি। খানিক পরেই লিটন আর সেই শম্পা মেয়েটিকে দেখলাম মাথায় লাল সবুজের জাতীয়পতা বেঁধে চিৎকার করে স্লোগান দিচ্ছে। তারুণ্যের এই তেজ, স্বদেশ প্রেমে আচ্ছন্ন হয়ে ছাত্রদের সাথে উৎসাহী কিছু জনতাও মিছিলে গলা মেলাচ্ছে। এক সময় নিজেকে আবিষ্কার করলাম, আমিও ছাত্র-জনতার সাথে মিলে মিশে ওদের সাথে স্লোগান দিচ্ছি ‘জেগেছে রে জেগেছে বাংলাদেশ জেগেছে , আমি কে তুমি কে রাজাকার , রাজাকার . কে বলেছে কে বলেছে স্বৈরাচার, স্বৈরাচার …।’ ২০২১ সালে প্রচন্ড ঠান্ডার মধ্যে টরেন্টোর এই ড্যানফোর্থেই একবার আমি এবং আমার পরিবার সে সময়ের লুটেরা বিরোধী আন্দোলনে সামিল হয়েছিলাম। সে সময় টেম্পারেচার ছিল শূন্যের অনেক নিচে। তাতে কি ! বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রার সাথে পাল্লা দিয়ে তখন যে আমাদের রক্তের টেম্পারেচার বহুমাত্রায় বেশি।
গত কয়েকদিন ধরে সারা দেশে থম থেমে পরিবেশ বিরাজ করছে। গত দুদিন ধরে দেশে ইন্টারনেট বন্ধ। সারা দেশে ছাত্রদের কোটাবিরোধী আন্দোলনে সরকারি বাহিনী ও সরকার সমর্থিত বাহিনীর সহিংস হামলায় শত শত মৃত্যুতে সারা দেশ স্তম্ভিত। জুলাই মাসের ১৯ তারিখে, শুক্রবারতের রাতে আন্দোলনের সমন্বয়কেরা তাদের নয় দফার দাবিতে অটুট থাকার ঘোষণা দিলেন । দেশের ঠিক এরকম এক পরিস্থিতির মুখে দেশ থেকে বহুদূরে কানাডার টরেন্ট শহরের কৃষিবিদ এসোসিয়েশন পরের দিন শনিবারে স্কারবোরো এলাকায় এডামস পার্কে পিকনিক উজ্জাপনের প্রস্তুতিমূলক এক সভায় আমি মুখ কালো করে বসে আছি। সভায় গানের রিহার্সেল হচ্ছে কিন্তু কারো মুখে গানের সুর আসছে না।
জুলাই মাসের ২০ তারিখে শনিবারে টরেন্টোতে যখন কৃষিবিদগণের পূর্ব নির্ধারিত পিকনিক উজ্জাপন হচ্ছে একই সময়ে বাংলাদেশের কাপাসিয়ার বারিষাব ইউনিয়নের চরদুর্লভখা গ্রামের দরিদ্র কৃষক আব্দুস সামাদের স্ত্রী ৫৫ বছর বয়সী চার সন্তানের জননী মোমেনা বেগম ছটফট করছেন। বড় ছেলে জাকির হোসেনের জন্যে উতালা হয়ে মোমেনা বেগম ছেলেকে ফোন দিয়ে বললেন, ‘বাবা, তুমি এখন কোথায়?’ ওপর প্রান্ত থেকে জাকির হোসেন বললেন ‘অফিসেই আছি’। মায়ের মন অজানা আশংকায় দুলে উঠলো । মোমেনা বেগম ছেলে কে হুশিয়ার করে বললেন, ‘বাবা, আজ তুমি কোথাও বের হবা না, বড় রকমের বিপদ হতে পারে।’ মাকে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে জাকির হোসেন ঢাকার আব্দুল্লাহপুরে গাড়ি থেকে নেমে অন্য গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। সে সময় সেখানে পুলিশ ও কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের ধাওয়া-পালটাধাওয়া চলাকালে মায়ের সাথে কথোপকথনের মাঝেই পরপর দুটি গুলি এসে জাকির হোসেনের পিঠে ও পেটে লাগলে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি।
পরের দিন এই মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে প্রধান প্রধান সংবাদপত্রের শিরোনাম হলেন মৃত জাকির হোসেন । পত্রিকার মাধ্যমে জানা গেল নিহত জাকির হোসেনের পিতা আব্দুস সামাদ (৬৫) এর দুই ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে সবার বড়ো ছিল এই জাকির হোসেন। বড়ো ছেলে হিসেবে হত দরিদ্র বাবার সংসারের অভাব অনটন ঘুচাতে এসএসসি পাশের পরে ২০০৩ সালে গাজীপুর সদরের ভাওয়াল মির্জাপুর এলাকায় একটি তৈরি পোশাক কারখানায় শ্রমিক হিসাবে কাজ শুরু করেন জাকির হোসেন। পরিশ্রম, সততার সাথে কাজ করে পুরস্কার হিসেবে কয়েক বছর আগে সহকারী প্রোডাকশন ম্যানেজার হিসেবে পদোন্নতিও পেয়ে ছিলেন এই জাকির হোসেন । মাত্র ৬ মাস আগে জাকির হোসেন এক বন্ধুকে সাথে নিয়ে ছোট পরিসরে ‘কাজী ভিআইপি গার্মেন্টস, নামে একটি পোশাক তৈরির কারখানা গড়ে তুলেছিলেন । ঘটনার দিনে উত্তরা থেকে একজন বায়ারের সাথে দেখা করতে যাওয়ার পথে মায়ের সাথে কথা বলতে বলতেই স্তব্ধ হয়ে যায় জাকির হোসেনের কণ্ঠ। মোমেনা বেগমের আহাজারি কাপাসিয়ার আকাশে -বাতাসে ভাসতে থাকে, “আমার পোলারে যারা মারছে আল্লাহ তাদের বিচার করবে”!!!!
বিচার করেছিলেন মহান আল্লাহতায়ালা। আজ যখন আমি এই লেখা লিখছি আপনারা সবাই সেই বিচারের রায় জেনে গিয়েছেন। তবে লেখক হিসেবে ৩৬ দিনের এই সফল আন্দোলনের অনেক অনেক জানা অজানা কথা নিয়ে প্রতি পর্বে গল্পের ঢঙে পরিবেশিত করে যাবো। এক দুঃখিনী মা জননীর কথা লিখে যাবো। সঙ্গেই থাকুন।
(চলবে)
———————–
আগের পর্বের লিংক :পর্ব ১
আগের পর্বের লিংক :পর্ব ২