বৃষ্টি ঝরতে ঝরতে থেমে যায়।
ডানায় যত ঝাপটাই থাকুক না কেন, ঝড় সময়ে ঠিকই গুটিয়ে নেয়।
ভেবেছি তীব্রতাটা কমে যাবে, দেখা দেবে উপশমের দিগ্বলয়।
আর সেখানে পৌঁছানোর শিশির-স্নাত আলপথ।
জলের দিকে তাকিয়ে থাকি, জল দেখতে পাই না, কাঁপা কাঁপা নিজের অবয়ব দেখি। আমি যেন জলে নিমগ্ন হিজল গাছ, ডালপালা বিছিয়ে দিয়েছি। কটালের নখর-আঁচড় আমার শরীরে। কচি কচি কচুরি-কন্যারা স্রোতে ভেসে ভেসে এসে গা ঘেঁষে দাঁড়ায়। আমি তাদের স্পর্শ টের পাই, কিন্তু বুকে কোন অনুভূতি জাগে না।
বলে, “ভোরের জানলা গলে যেমন রোদ ওঠে, তেমনি তোমার শীতের কম্বলের নীচে ডেকে নিও।”
বলি, “আমি হিজল গাছ, ডুবে আছি।”
ওরা আমার ফুলে নাক ঘষে, তারপরে মালাগুলো বা মালার মত ফুলগুলো ছিড়ে নেচে নেচে চলে যায়।
বলে, “তুমি হয় বোকা, নয় অতিরিক্ত চালাক, কিছু বোঝ কি বোঝ না বোঝা মুশকিল।”
আমি দাঁড়িয়ে থাকি বোবা-স্ফিংসের মত।
দীর্ঘশ্বাস কষ্ হয়ে টুপ্ টুপ্ করে।
কচুরী মনে হয়, আসলে ওরা ফুল।
কেউ প্রশ্ন করে, “কোন বাগান? কার বাগানের ফুল?”
আপন মনে বলি, “ফুল ফুলই, এই সব মালিকানার প্রশ্ন। ফুলের মালী থাকে, মালিক থাকে না।”
একজনের পায়ের শব্দ চিনি,দেবমায়ার দ্রাবিড় দুহিতা সে। কপোল কল্পনার সিঁড়ি বেয়ে হেঁটে যায়, ফিরেও তাকায় না। অথচ…….
কন্ঠস্বর চিনি, গানের অন্তরা সড়কীর মত বিঁধে।
তীব্র তৃপ্তির শৈল শিখরে যখন তার হৃৎপিন্ড অশ্বের মত দৌঁড়ায় আমি তার চিঁ হি হি ডাক শুনি। ভাবি সয়ে যাবে, সয় না। বুকের ভিতরে ধুপ ধাপ কূল ভাঙ্গে।
উপশমের চিহ্নমাত্র দেখি না।
ভাবি হিজলগাছ, আমি হিজলগাছ নই।
অথচ ডুবে আছি……
(ছবি:-youtube)
নভেম্বর ৪, ২০১৮ অরল্যান্ডো