বেদনার স্মৃতি তুমি, বিষন্ন চাঁদে বিম্বিত ছবি।
নববর্ষের প্রথম দিনে তোমাকেই পড়ে মনে।
এলোমেলো হয়ে যাই
মাতাল চিত্ত নিয়ে বসে থাকি আজও,
মিহিদানা কান্না ভাসে বাতাসে বাতাসে।
সেই কবে যাত্রা ছিল দিগ্বিদিক,
সূর্যকে ডুবতে দেখেছি নষ্ট মানুষের ভিড়ে,
দেখেছি শতাব্দীর গভীর ক্রন্দন বিষন্ন নির্জনে।
নিত্যনতুন যনত্রণায় কাতর হয়েছি শুধু,
ঘুমের ভেতরেই ক্লান্ত হয়েছি কতবার!
বয়সী পৃথিবীর হাতে আশীর্বাদের কোন চিহ্ন নেই,
বৃক্ষের ছায়ায় ভয়ংকর খরা, নিঝুম চৈত্রের দুপুর।
মেঘে ঢাকা যৌবনের পড়ন্ত বিকেলে
সময় যেন আমাকেই খাচ্ছে খুঁটে খুঁটে।
এ কেমন জীবন-যাপন!
নিঃশ্বাসের উঠা-নামায় মৃত্যুর আকুতি।
জীবনের শ্রেষ্ঠকাল কেটে গেছে এইভাবে।
সকল ইচ্ছার বিরুদ্ধে
তবু আজ বৈশাখের প্রথম দিবসে
ঝাঁঝালো রোদের ফাঁকে ছায়া দেখতে পাই।
ঈষৎ স্পন্দিত হই। পরম সৌভাগ্য আমার,
তবুতো পেলাম দেখা
একটি লাল সবুজ পতাকা আর একটি দেশের
যে দেশে শাপলা-শালুক ঝিলের জলে নাচে।
এই ভেবে উন্মুক্ত হই সাগরের বুকে,
উথাল-পাতাল পূর্ণিমা দেখি সমুদ্র-সৈকতে।
জীবনে একবার আসে বুঝি এমন জোছনা রাত।
*** ডক্টর মুহম্মদ আব্দুস সামাদ সিকদার, কবি-প্রাবন্ধিক ও গবেষক। অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মকর্তা ও মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের একজন মুক্তিযোদ্ধা। বাংলা একাডেমীর জীবন সদস্য ও অবসর সমিতির আজীবন সদস্য।
প্রকাশিত গ্রন্থ সংখ্যা ১৩ ।।