ফ্লোরিডা থেকে:-
তুমি বিশ্বাস করবে না, আমি যখন নারায়নগন্জ যাই এবং বাস যখন চাষাঢ়ায় পৌঁছায়, আমার বুকের ভিতরে হৃৎপিন্ডটা লাফাতে শুরু করে।
বাপের বাড়ি তো!
আমি তোমাকে বুঝাতে পারবো না।
পূর্ব পারে আমার জন্ম।
সেখানে ফাঁকা ফাঁকা মাঠ। আর শরতে কাঁশের ফুল আর ফুল । যেন মাঠ নয়, যেন সাদা মেঘের আকাশ।
চার বছর মাত্র বয়েস যখন নদীর এপারে চলে আসি।
থানার পুকুর পারে বড় হয়েছি।
সেখান থেকেই মরগ্যান স্কুলে যেতাম।
স্কুল পাশ করার পরে বিয়ে হয়ে গেল। নারায়নগন্জ ছেড়ে গেলাম ঢাকায় , সেখানেই কলেজ শেষ করে ঢাকা ভার্সিটিতে দর্শনে মাস্টার্স করেছি।
স্বামী আর্মিতে।বিভিন্ন জায়গায় বদলী হয়েছে। সারা দেশ টৈ টৈ করেছি। কোথাও থিতু হয়ে বসতে পারি নি।
কোথাও নিজেকে ঘরে মনে হয় নি।
শুধু নারায়নগন্জই একমাত্র স্থায়ী আমার মনে, মা-বাবা নারায়নগন্জের গোরস্থানেই শুয়ে আছে।
এখন বিদেশে থাকি। অথচ মনটা কোথায় জানো?
জানো, একবার ঢাকায় বাসে চড়ে বসেছি, কোথাও যাবো। দেখি পাশেই নারায়নগন্জের বাস। মনটা খুশীতে নেচে ওঠে ময়নার মত, স্বামীকে বলি,
“দেখো দেখো নারায়গন্জের বাস!”
“নারায়নগন্জের বাস তো কি হয়েছে?”
মেজর সাহেব শীতল দৃষ্টিতে তাকায়।
আমি থতমত খেয়ে কুকড়ে যাই,
না মানে … বাসটা… ঢোক গিলি.. কথা খুঁজে পাই না….
…..নারায়নগন্জ যাচ্ছে তো!
সেপ্টেম্বর ১,২০১৮