স্যার ফজলে হাসান আবেদ – বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নের ইতিহাসে যুগান্তকারী এক কিংবদন্তির নাম. ১৯৩৬ সালে জন্মগ্রহণকারী স্যার আবেদ একাউন্টেন্সি নিয়ে লন্ডনে পড়াশুনা করে কস্ট ম্যানেজমেন্ট একাউন্টটেন্ট হিসেবে পেশাগত জীবন শুরু করেন। Shell কোম্পানীর উর্ধতন কর্পোরেট নিবার্হী হিসাবে চাকুরী করাকালীন সময়ে ১৯৭০ সালে ঘটে যাওয়া সাইক্লোন এবং ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা সংগ্রাম তাকে দারুণভাবে প্রভাবিত করে. নিজের সমৃদ্ধ পেশাগত জীবনকে জলাঞ্জলি দিয়ে তিনি যুদ্ধবিদ্ধস্ত বাংলাদেশের পুনর্গঠনে মনোনিবেশ করেন। প্রতিষ্টা করেন বাংলাদেশ রুরাল এডভান্সমেন্ট কমিটিতে বা BRAC. দারিদ্র বিমোচন ও দরিদ্র মানুষের ক্ষমতায়নের লক্ষ্য নিয়ে ব্রাকের কার্যক্রম শুরু হয়. সুনামগঞ্জের শাল্লাতে ত্রান ও পুনর্বাসন নিয়ে কাজ শুরু করলেও ব্র্যাক আজ বাংলাদেশ ৬৪টি জেলার প্রায় ৭০০০০ গ্রামে দারিদ্র বিমোচন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে কাজ করে যাচ্ছে। এশিয়া, আফ্রিকা ও আমেরিকার ১৪টি দেশেও ব্র্যাকের কার্যক্রম ছড়িয়ে পড়েছে। প্রায় লক্ষাধিক কর্মী ব্র্যাকে কাজ করেন। দারিদ্র বিমোচন ও নারীর ক্ষমতায়নে অসামান্য অবদানের জন্য অসংখ্য আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন স্যার ফজলে হাসান আবেদ ও ব্র্যাক। ১৯৮০ সালে ম্যাগসেসে পুরস্কার পাওয়া ফজলে হাসান আবেদ যে সমস্ত সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন, তার মধ্যে রয়েছে বিশ্ব খাদ্য পুরস্কার, স্পেনিশ অর্ডার অব সিভিল মেরিট, অফিসার ইন দ্য অর্ডার অফ অরেঞ্জ-নাসাউ, লিউ টলস্টয় ইন্টারন্যাশনাল গোল্ড মেডেল ইত্যাদি। বাংলাদেশে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দারিদ্রের বিরুদ্ধে সংগ্রামে অসামান্য অবদানের জন্য তিনি ব্রিটিশ সরকারের নাইট হুড উপাধি লাভ করেন ২০১০ সালে।
জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক উন্নয়ন পরিমণ্ডলে বাংলাদেশকে এক অনন্য উচ্চতায় তুলে ধরা এই নিভৃতচারী, প্রচারবিমুখ ব্যক্তিত্ব সম্প্রতি পরলোক গমন করেন। তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে গত শনিবার ২৮ই ডিসেম্বর একটি স্মৃতি সভার আয়োজন করা হয়, টরন্টোর ডানফোর্থের এক্সেস পয়েন্টে। ডঃ নাসিমা আখতার এর পরিচালনায় এই স্মরন সভায় উপন্থিত ছিলেন ব্র্যাকের প্রাক্তন কর্মচারীবৃন্দ ও টরন্টোতে বসবাসকারী জনাব আবেদের সকল ভক্ত বৃন্দ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্যার ফজলে হাসান আবেদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর জনাব আবেদের বর্ণালী কর্মজীবনের উপর ভিত্তি করে নির্মিত একটি প্রামান্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্টানের পরবর্তী পর্বে ছিল আলোচনা পর্ব। এতে অংশগ্রহণ করেন জনাব ফজলে হাসান আবেদের গুণগ্রাহী ও টরন্টোর বিশিষ্ট ব্যাক্তি বর্গ।
অনুষ্ঠানটি আয়োজনের কৃতিত্বটি ছিল বিসিএস এর ।