সন্ধ্যায় একটি চায়ের আড্ডায় বসেছিলাম বাঙালীর প্রাণকেন্দ্র ডানফোর্থের একটা রেস্টুরেন্টে। পাশের টেবিলে চলছিল আসন্ন নির্বাচনী আলোচনা। আড্ডার মাঝেমাঝে পাশের টেবিলের কথাগুলো কানে আসছিলো -“কোনো বাঙালী প্রার্থীকে ভোট দিবো না , অন্যদেশী প্রার্থীকে ভোট দিবো। কারণ তারা জিতলে তার কাছে কোনো কাজে গেলে সে হেল্প করবে। আর যদি বাঙালী প্রার্থী জিতে যায় -তার কাছে কাজে গেলে সে ভাব নেবে , ইচ্ছাকৃত ভাবে কাজে দেরী করবে। ” কথাটা মানতে পারলাম না , যদিও আলোচনাকারীদের কাউকেই আমি চিনিনা , অনেকটা অবাঞ্চিত আগন্তুকের মতোই জিজ্ঞাসা করলাম “কথাটা কতটুকু সত্য।? ” উনি বললেন “হ্যা বাঙালীরা এটাই করে।” বাঙালিরা কি করে বা না করে তা প্রতিটা মানুষের নিজস্ব এবং স্বতন্ত্র মতামতের বিষয়। যেহেতু ওনাকে আমি চিনিনা তাই আর কথা না বাড়িয়ে শুধু একটা প্রশ্ন করলাম , “তা হোলে কি আমরা (বাঙ্গালীরা) এই প্রবাসে চিরদিন পিছনেই পেড়ে থাকবো ?” যদিও ওনার কাছ থেকে কোনো উত্তর পাইনি।
আগামী ২২শে অক্টোবরে টরন্টো সিটি কাউন্সিলের নির্বাচন। স্কারবোরো সাউথ ওয়েস্ট ওয়ার্ড ২০ থেকে নির্বাচন করছেন মহসিন ভূঁঞা। একমাত্র বাংলাদেশী প্রার্থী, স্বভাবতই একজন বাঙালি হিসাবে আমরা তার বিজয় কামনা করছি। কিন্তু এখানে গাণিতিক হিসাবের প্রয়োজন , আবেগের নয়। ওই এলাকায় ভোটার সংখ্যা প্রায় ৭৪০০০ যার মধ্যে প্রায় ৯০০০ বাংলাদেশী ভোটার (করো কারো মতে এই সংখ্যা ৬০০০) ।অতীতের পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায় মাত্র ৩০% – ৪০% ভোটার ভোট দেন। সেই হিসাবে প্রদান করা ভোটের আনুমানিক সংখ্যা ২৫/৩০ হাজারের কাছাকাছি একটা সংখ্যা।
আমার জানামতে আরো ২জন প্রার্থী (যারা বাঙালী নন ) এই পদে প্রার্থিতার প্রতিযোগিতায় দৌড়ে সমান ভাবে আগায়ে আছেন। যদি মনে করি প্রতিযোগিতা ৩জনের মধ্যে হয় এবং জন সমর্থন সবার জন্য সমান হয় , তবে প্রতি প্রার্থী ভোট পাবেন ৮ থেকে ১০ হাজার। আর মধ্যে বিজয়ী প্রার্থীর ভোটার সংখ্যা অবশ্যই বেশি হতে হবে। বাংলাদেশী ভোটার সংখ্যা ৯০০০, এখানেই প্রশ্ন তার মধ্যে কতজন ভোট কেন্দ্রে যাবেন ? আর তার পরেও যদি এই বিভাজন আর ভাগাভাগির প্রক্রিয়া চলতে থাকে , সেটা হবে আশংকার অন্যতম কারণ। এজন্য প্রয়োজন একটা ঐক্যের আর সেটা হতে হবে একটা “জাতীয় (বাংলাদেশী ) ঐক্য।