করোনা ভাইরাস সারা পৃথিবীতে বিরাজ করছে। পৃথিবীর সকল প্রান্তের মানুষই এখন গৃহবন্দী। প্রতিদিন জানতে পারছি নানাবিধ তথ্য ঘটনাবলী। সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে ভাইরাস থেকে পৃথিবীর মুক্তির খবর জানতে। জানিনা কবে হবে অবস্থার অবসান। 

করোনা ভাইরাস যেমন পৃথিবী ব্যাপী তার তান্ডব চালিয়ে যাচ্ছে তেমন পাশাপাশি জন্ম দিচ্ছে অজস্র ঘটনা প্রবাহ। এতো আতঙ্ক ভয় ভীতির মধ্যেও  অনেকে  অভ্যাস স্বভাবের কারণে কিংবা সময় কাটানোর জন্য  নিত্য নুতন কৌতুক তামাশায় লিপ্ত রয়েছে।  ফেসবুক ,টুইটার বা অন্যানো সামাজিক মিডিয়ায় প্রতিদিন এসব দেখতে পারছি। সব দেখে ভয় ভীতি দুশ্চিন্তার মধ্যেও অনেক সময় না হেসে পারছি না।

প্রতিদিনের মত আজও সকালে ল্যাপটপ ওপেন করে দেখতে পেলাম আমার ফেসবুকের নিউজ ফিডে বেশির ভাগ লেখাই করোনা ভাইরাস নিয়ে। পৃথিবীতে করোনা বিস্তারের সংবাদ,কোন দেশে কি পরিস্থিতি ,বাংলাদেশে চুরিচামারি আরো কিছু মৃত্যুর সংবাদ। সেই সাথে করোনা প্রতিরোধের উপদেশ। পরামর্শ ইত্যাদি ইত্যাদি। অনেকে তাদের স্বভাব সুলভ কৌতুক করেছেন মানুষের বিভিন্ন কর্মকান্ড নিয়ে।

আমি অবশ্য সব কিছু আজকাল ঠিক মত পড়ি না। শুধু মাত্র স্ক্রল করে বেশির ভাগ করোনা সংবাদ স্কিপ করে চলে যাই। তবে আমার কিছু কিছু সাবেক সহকর্মী বন্ধু বান্ধবের জ্ঞানগর্ভ স্টেটাস গুলি আমি মনোযোগ সহযোগে পড়ি এবং লাইক দেই বা মন্তব্য করি।

আজ সকালে সেহরি ফজর নামাজ শেষে বর্তমান সময়ের দৈনন্দিন রুটিন মোতাবেক ফেসবুক ওপেন করে একই ভাবে দেখতে পেলাম বিভিন্ন বিষয়ে বিভিন্ন জনের স্টেটাস ,মন্তব্য ,কৌতুক ইত্যাদি। সেগুলির মধ্যে দুএকটি উল্লেখ করছি। 

আমার এক বন্ধু করোনা ভাইরাস ভ্যাকসিন আবিষ্কারের বিষয়ে ব্রিটেনে মানবদেহে যে টেস্ট করা হয়েছে সেবিষয়ে লিখেছে ,” Elisa Granato বয়স ৩২ ,
নাম জানার কথা নয়। অক্সফোর্ডের নতুন ভ্যাকসিনটা প্রথম তার শরীরে দেয়া হয়। শরীরে এন্টিবডি তৈরি হলে তাকে দেয়া হবে করোনাভাইরাস। ভ্যাকসিন কাজ না করলে তার মৃত্যুও হতে পারে। কোনদিন দেখা বা চেনা হবেনা এমন লাখো মানুষের জন্য সে নিয়েছে এই ঝুঁকি।
এই মহামারীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা অনেক বীরের নাম আমরা কোন দিনই জানবোনা।
নাম না জানলেও যেন না ভুলি, মানুষ মানুষের জন্য এই চেতনায় অনেকে কাজ করে বলে আমরা এখনো দিন বদলের স্বপ্ন দেখি।

আমার এক প্রাক্তন সিনিয়র সহকর্মী করোনা ভাইরাসের কারণে দেশ থেকে এসে যুক্তরাষ্টের টেক্সাসে তার ছেলের বাসায় আটকে পড়েছেন। অবসরের পর থেকে তিনি বিভিন্ন বিষয়ে অনেক লেখা লেখি করছেন  এবং ইতোমধ্যে তার প্রচুর পাঠক সংখ্যাও সৃষ্টি হয়েছে। তার লেখায় বাস্তব অনেক বিষয় তিনি বেশ রসাত্মক বর্ণনা দিয়ে থাকেন। আজ ফেসবুকে তার একটি লেখার অংশবিশেষ নিম্নরুপ ,”

আমার বউয়ের (ছেলের বৌ) এক খালা থাকেন কানাডা। স্বামী স্ত্রী দুজনেরই পান খাওয়ার ভয়ানক নেশা। পান ছাড়া তাদের চলেই না। কানাডা হল ঠান্ডার দেশ, পান টান জন্মায় না। আমেরিকায় আবার ফ্লোরিডা, হাওয়াই এসব জায়গায় নাকি পান জন্মায়, তাই আমেরিকায় এখনও পানখোরদের (পানাসক্ত অর্থে নয়) পানের জন্য হাহাকার পড়েনি। কিন্তু কানাডার লকডাউন মানে সত্যই লকডাউন। ট্রাম্প যেমন লকডাউন উঠানোর ফাঁক ফোঁকড় খুঁজে হয়রান, জাস্টিন ট্রুডো তেমনি ফাঁক ফোঁকড় বন্ধ করার জন্য মরিয়া। কাজেই কোন প্লেনই কানাডায় নামার অনুমতি নাই। পান আসবে কেমনে!আমার বউয়ের খালা এবং খালু দুজনের তাম্বুল বিহনে অবস্থা ত্রাহি মধুসুদন। ভাত ছাড়া যদিও বা চলে, পান ছাড়াতো চলেই না। দুইজনের পান বিহনে কোন কিছুই হজম হয় না! পেট ফেঁপে চোঁয়া ঢেকুর উঠতে লাগল। খালি সুপুরি জর্দা চুন খেয়ে দেখতে গেলেন, তাতেও বিশেষ সুবিধা হল না। তখন টেকসাসে থাকা আরেক বোন পরামর্শ দিলেন লেটুস পাতা দিয়ে পান বানিয়ে খেতে। কাল যখন ভিডিও কল করে বোন বোনাইয়ের সাথে কথা বলছিলেন, তখন দেখলাম লেটুস পাতার পানে চুন জর্দা সুপুরিসহ দিব্যি খিলি বানিয়ে খাচ্ছেন। ঘটনাটি আপনাদের জানাচ্ছি একারণে যে বিদেশে যারা পান বিহনে মতিভ্রম হবার দশা হয়েছে তারা টেকনিকটা ট্রাই করে দেখতে পারেন।

ধরণের আরো অনেক বন্ধুবান্ধবের স্টেটাস দেখলাম। সময় কাটানোর জন্য এখন সব দেখা লেখা ছাড়া আর কি করার আছে ??

 

আপনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন