ভালোবাসাটা কি একটা বিশ্বাস ? যে ঘুম থেকে উঠলে চোখ খুললে একটা সুন্দর সকাল দেখতে পাবো। আধো আলো আধো ছায়ায় ভোরের আলোয় শক্ত করে হাঁতটা ধরতে পারবো। অদ্ভুত একটা বিশ্বাসে হাতটা ধরে অনেকটা পথ হেটে যেতে পারবো। নাকি সেই বিশ্বাস প্রিয় শিউলি ফুল গাছে আরো কিছু আধ ফোঁটা শিউলি ফুটবে। আলো-আধাঁরে শিউলি ফুল হাতে দাঁড়িয়ে থাকবে। ভালোবাসা কি সেই বিশ্বাস যে হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে রাস্তার পাশে ফুচকা খাবে / বৃষ্টির দিনে হাত বাড়িয়ে ভিজতে ভিজতে পাশে দাঁড়িয়ে আারেকটা হাত বাড়িয়ে দিবে। কথা না বললেও তার মাঝে সব বলা হয়ে যাবে। কিছু বলার আগেই দুজন মানুষের চারটি চোখ সব ভাষা বুঝে ফেলবে। সমস্যার মাঝেও একে অপরের প্রতি আস্থা স্থাপন করবে। রাগ- অভিমানের খুঁনশুটিতে শিশিরবিন্দুরর মত হঠাৎ বিলিন হয়ে আলোর ঝলকানি উঠবে।
বিশ্বাস বড়ই অদ্ভুত। একজন নিজেকে গুটিয়ে গন যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ করেছে তাকে দেখে তার প্রিয় মানুষটিও নিজেকে আড়াল করেছে। হয়ত এটাই বিশ্বাস।
একজন সারাদিন বাসায় অপেক্ষা করছে কখন অফিস শেষ হবে বাসায় চলে আসবে কোথাও সময় নষ্ট না করে, আর আরেক জন অফিস শেষ করে চিন্তা করছে কখন বাসায় যাবে একসাথে বসে খাবে আর সারাদিনের গল্প আর খুঁনশুটি। হয়ত এটাই বিশ্বাস। রাতের আধাঁরে চোখ বন্ধ করলেও পাশে আছে মনে করবে, হয়ত এটাই ভালোবাসা, এটাই বিশ্বাস। অতি মাত্রায় শরীরের যত্নে মনোযোগ স্থাপন করবে হয়ত এটাই বিশ্বাস। একজন ধূমপানে আসক্ত কিন্তু অন্যজন এর কাছে বিরক্ত। কিন্তু একদিন সেটা ছেড়ে দিবে হয়ত এটাই বিশ্বাস। সকালে উঠে লেবুর রস, চেরতার রস, বেলের রস না খেতে চাইলেও একটু বকুনি দিয়ে খাওয়াবে হয়ত ধুমপান ছেড়ে দিবে, হয়ত এটাই বিশ্বাস। মনের মায়াজালে একে অপরের কন্ঠ শুনার জন্য ব্যাকুল থাকবে হয়ত এটাই ভালোবাসা। দিন শেষে কাজ করে বাসায় ফিরে একজন অপরজনকে প্রশ্ন করবে, তুমি কি নামাজ পড়েছো / চল নামাজ পড়ে নেই কারন ঐ জগতেও একসাথে থাকার আশা। হয়ত এটাই বিশ্বাস। ঘরে সবজি নাই, কাজ শেষে সবজি আনবে হয়তো এটাই বিশ্বাস 🙂 ।
দরিদ্র ঘরে বাবা রাতে অন্ন হাতে ফিরবে হয়ত এটাই বিশ্বাস। শত কষ্টেও মা সন্তানকে আগলে রাখবে হয়ত সন্তানের এটাই বিশ্বাস। অন্ধ মানুষটিকে রাস্তায় পাড় করার সময় সেই মানুষটি মনে করে মাঝ রাস্তায় আমায় ফেলে চলে যাবে না, হয়ত এটাই বিশ্বাস। মা-বাবা কষ্ট করে সন্তানের জন্য আর মনে করে এরাই আমার সম্বল এরা কখনও আমাদের ছেড়ে যাবে না হয়ত এটাই বিশ্বাস।
মধ্য রাতে গভীর ঘুমে মগ্ন ওমন সময় যখন কানে কন্ঠ আসে আমি যে উঠতে পারিনা তুই আমার কাছে আয়, আমারে উঠা। নাম ধরে ডাক দেয় / কারন মনে করে ডাকলেই চলে আসবে তার কাছে। হয়ত এটাই বিশ্বাস।
এই বিশ্বাসটাই ভালোবাসার সৃষ্টিধর। তিলে তিলে তুষের মত একটু একটু করে বৃদ্ধি পায়।
আর কোন কারনে এই বিশ্বাস হারালে সব ছিন্নভিন্ন, কাঁচের মত চূর চূর হয়ে ভেঙে যায়। ভালোবাসাটাও হারিয়ে যায়। গাছ থাকে হয়ত বিশ্বাসের অভাবে ফুলের শোভা সৌন্দর্য হারিয়ে যায়।