“বিবেক” একটি সামাজিক সংগঠন। টরন্টো ভিত্তিক সংগঠন হলেও এর মূল কার্যক্রম এখন চলছে বাংলাদেশে। কয়েকজন বিবেকবান মানুষের একান্ত চেষ্টায় গড়ে ওঠা ফেসবুক ভিত্তিক এই সংগঠনের সদস্য সংখ্যা বর্তমানে ৫ হাজারেরও বেশি। মানবতার সেবায় আগ্রহী ব্যক্তিদের হাত ধরে গড়ে উঠেছে এই সংগঠন যার উদ্দেশ্য দুঃস্থ মানবতার সেবায় এগিয়ে আসা। হয়তো বা তা বিবেকের তাড়নায়।
আতিকুল ইসলাম ব্যক্তিগত জীবনে একজন প্রকৌশলী, বয়সে তরুণ হলেও সেই তারুণ্যের চঞ্চলতার মাঝেও নিজের বিবেকটাকে সচেতন করে রেখেছেন মানবতার সেবায়। বিবেকের একজন ফাউন্ডিং মেম্বার। কফির আড্ডায় বসে কথা হচ্ছিলো তার সাথে। নিজের আগ্রহে জানতে চাইলাম বিবেকটা কি?
বললেন নামটাই তাদের এই সংগঠনের পরিচয় । “আমাদের সবার মাঝেই বিবেক আছে । যে কিনা সবসময় আমাদেরকে খারাপ কাজ করা থেকে বিরত রাখে আর সেইসাথে ভালো কাজের জন্য উৎসাহিত করে।আমাদের মূলমন্ত্র – বিবেক থেকে যা আসে সেটাই করবো । যেমন যখন আমরা রাস্তা দিয়ে চলি, কোন বিপদগ্রস্থকে দেখলে স্বভাবতই আমাদের বিবেকে নাড়া দেয় তার জন্য কিছু করতে। সেই চেতনা থেকেই কিছু করার জন্য আমরা একত্রিত হয়েছি। আমাদের প্রথম পদযাত্রা শুরু হয়েছিল বাংলাদেশে রহিঙ্গা শরনার্থীদের এর কার্যক্রমের মধ্যে দিয়ে।”
বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সাহায্যার্থে এ পর্যন্ত দুইটি প্রকল্প সম্পন্ন করেছেন তারা । তার প্রথমটি ছিল টরন্টোতে অর্থ সংগ্রহ করা এবং সেই টাকাটা বিবেকের নিজস্ব প্রতিনিধি যিনি বাংলাদেশ আছেন তার মাধ্যমে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে বিতরণ করা। এছাড়াও আরেকটি প্রকল্প ছিল যেখানে অর্থ সংগ্রহ করা এবং সেটি কানাডিয়ান একটি সংস্থার সাথে যুক্ত হয়ে সেই টাকাটা বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য পাঠানো।
জিজ্ঞাসা করলাম আপনাদের বিবেকের উদ্দেশ্য কি?
বললেন “আমাদের উদ্দেশ্য হলো মানুষের মধ্যে ঘুমিয়ে থাকা বিবেকটাকে লেখনীর মাধ্যমে জাগিয়ে তোলা । আমরা হয়তো বা সবাইকে সাহায্য করতে পারবো না কিন্তু সবার মাঝে মানবতার সেবায় বিবেক বোধ জাগিয়ে তুলতে পারবো বলে আশাকরি । আমরা চেষ্টা করছি আমাদের খবরটা সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেবার জন্য। এজন্য সব সময় আমরা আমাদের সদস্য সংখ্যা বাড়াবার চেষ্টা করছি। কন্তু সময় স্বল্পতার কারণে আমাদের বর্তমান কার্যক্রম সীমিত। কিন্তু ভবিষ্যতে এর পরিধি আরো বাড়বে বলে আমি আশা রাখি ।”
আরো বললেন বিবেকের বর্তমান কার্যক্রমের মূল স্থান বাংলাদেশে, গত রোজার ঈদে বিবেক তার নিজস্ব প্রতিনিধির মাধ্যমে ৪০০ দুস্থ শিশুর মধ্যে এক বেলার খাবার বিতরণ করেছে । উনারা পুরাতন কাপড় সংগ্রহ করে অন্য একটি কানাডিয়ান সংস্থার সাথে যুক্ত হয়ে সেগুলি বাংলাদেশ পাঠাবার ব্যবস্থা করছেন।
জিজ্ঞাসা করলাম বাংলাদেশ কমিউনিটির সাথে বিবেকের সম্পৃক্ততা কতটুকু?
জানালেন সময় স্বল্পতার জন্য তাদের কার্যক্রম বর্তমানে সীমিত ভাবে চলছে। তবে অদুর ভবিষ্যতে বিভিন্ন সংগঠনের সাথে যোগসূত্র স্থাপনের পরিকল্পনার কাজ চলছে বলে জানালেন তিনি । আরো বললেন সবার সাথে মিলেমিশে কাজ করতে চান তারা এবং এ ব্যাপারে তিনি আশাবাদী । আশা প্রকাশ করলেন হয়তো সমাজের সকল বিবেকবান মানুষ এই প্রকল্পের সাথে তাদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবেন। আর তখনই বিবেকের সাফল্যের একটি নতুন দিক উন্মোচিত হবে বলে মনে করেন । বিবেকের ভবিষ্যৎ নিয়ে যথেষ্ট আশাবাদী জনাব আতিকুল ইসলাম।
আমাদের সবার মাঝেই বেঁচে থাক আমাদের বিবেক-বোধ । এই শুভকামনা জানিয়ে বিদায় নিলাম আতিকুল ইসলামের কাছ থেকে।