কারো কারো মতে, বৈদিক ব্রাহ্মণরা ছিলেন শ্রেষ্ঠ পুরোহিত। ব্রাহ্মণদের দ্বারা এই লিপি আবিষ্কৃত হয়েছিলো বলেই এর নাম ব্রাহ্মীলিপি। তবে বিতর্ক যাই থাক, এটা নিশ্চিত যে তদানীন্তন ভারতবাসী নিজেরাই সৃষ্টি করেছিলেন ব্রাহ্মীলিপি।
ব্রাহ্মীলিপির পেছনে ফিনিশীয় লিপির প্রভাব রয়েছে বলে দাবি করা হলেও তার কোন গ্রহনযোগ্যতা নেই- কারণ ফিনিশীয় লিপি আর ব্রাহ্মীলিপির পার্থক্য অনেক। খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতক থেকে ৩৫০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ভারতবর্ষে ব্রাহ্মীলিপি প্রচলিত ছিলো। এরপর ব্রাহ্মীলিপি “অশোক লিপি” বা ” মৌর্য লিপি ” তে এর বিবর্তন শুরু হয়। এর পরের ধাপ আসে ” কুষাণ লিপি”, কুষাণ রাজাদের আমলে এই লিপির প্রচলন ছিলো। পরবর্তিতে ব্রাহ্মীলিপি উত্তরী ও দক্ষিণী- এই দুইভাগে ভাগ হয়ে যায়। উত্তরী লিপিগুলির মধ্যে পূর্বদেশীয় “গুপ্তলিপি” উল্লেখযোগ্য। ৪র্থ ও ৫ম শতাব্দীতে গুপ্তলিপির প্রচলন ছিলো।
গুপ্তলিপি থেকে আবির্ভাব হয় “কুটিল লিপি”, যা ৬ষ্ঠ থেকে ৯ম শতক পর্যন্ত প্রচলিত ছিলো। কুটিল লিপি থেকে উদ্ভব হয় “নাগরী লিপি”। প্রাচীন নাগরী লিপির পূর্ব শাখা ১০ম শতকের শেষভাগে এসে উৎপত্তি হয়েছে বাঙলা লিপির। অর্থাৎ ব্রাহ্মীলিপি>অশোক লিপি বা মৌর্য লিপি> কুষাণ লিপি >উত্তরী গুপ্তলিপি (পূর্বদেশীয়) > কুটিল লিপি> নাগরী লিপি> বাঙলা লিপি।
-চলবে * তথ্য সূত্র:-উইকিপিডিয়া > কত নদী সরোবর বা বাঙলা ভাষার জীবনী – হুমায়ুন আজাদ। উচ্চতর স্বনির্ভর বিশুদ্ধ ভাষা শিক্ষা। -ড.হায়াত মাহমুদ।