অনেক জল্পনা- কল্পনার পর ঢাকা-১৭,বাংলাদেশ উপনির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন ।
নিম্নে ভোটার ফলাফল দেয়া হলো :
মোহাম্মদ এ আরাফাত ২৮,৮১৬, আশরাফুল আলম ৫,৬০৯, সিকদার আনিসুর রহমান ১,৩২৮, মোঃ রাশিদুল হাসান ৯২৩ , শেখ হাবিবুর রহমান ২০২, মোঃ আখতার হোসেন ৬৪, মোঃ তরিকুল ইসলাম ভূঁইয়া ৫২,রেজাউল ইসলাম স্বপন ৪৩ ,মোট ভোট দান = ৩৭,০৩৭, শতকরা হিসাবে ভোট সংগ্রহ = ১২% , নিবন্ধিত ভোটার = ৩,২৫,২০৫,(তথ্য সংগ্রহ ইন্টারনেট) ।
উপরে ভোট সংগ্রহের হিসাব থেকে দেখা যায় যে মোহাম্মদ এ আরাফাত ২৮,৮১৬ ভোট পেয়ে প্রথম এবং রেজাউল ইসলাম স্বপন ৪৩ ভোট পেয়ে সর্ব নিম্নে রয়েছেন । ভোটে হার-জিত অবশ্যই থাকবে,তাছাড়া বাংলাদেশে আজকাল ভোট কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি যে ভাবে হ্রাস পাচ্ছে তা দেখে মনে হয় জনগণ নির্বাচনের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে।
মোহাম্মদ আরাফাত(২৮,৮১৬) ও নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আশরাফুল আলম (৫,৬০৯ ); দুইজনের ভোটের ব্যবধান অনেক, এ ছাড়া ৮৮ % ভোটার ভোট কেন্দ্রে যায় নি। বাকিদের প্রাপ্ত ভোটের পরিমান উপরে দেয়া হলো,যা নিয়ে আর আলোচনা নাইবা করলাম।
ভোট কেন্দ্রে দুর্ঘটনা প্রসঙ্গ :
একজন প্রার্থী সে যে কেউ হোক,যখন সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে, সে দেশের একজন নাগরিক ,তার সন্মান রক্ষা করা তৃণমূল জনতা থেকে দেশের আইন শৃঙ্খলাবাহিনী সবার দায়িত্ব। যে ভাবে ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করতে গিয়ে আশরাফুল আলম ( হিরো আলম) নির্যাতিত হলো, তা যে কোনো বিবেকবান লোক ধিক্কার দেবে। আশরাফুল আলমের (হিরো আলম) ছবি সহ মিডিয়াতে এসেছে, এই জাতীয় খবর কোনো জাতির জন্য সু-খবর বহন করে না। এটা সম্পূর্ণ অমানবিক এবং কোনো বিবেকবান লোক স্বীকৃতি দেবে না। যে কোনো প্রার্থীই ভোট কেন্দ্রে পরিদর্শন করতে যেতে পারে, এ ভাবে অত্যাচারিত হবে কেন ? মিডিয়াতে দেখানো হয়েছে, ভোট কেন্দ্র থেকে বের হওয়ার পর ওকে একটি সংঘবদ্ধ দল আক্রমণ করে রাস্তায় প্রকাশ্যে মারধর করেছে । ভোট কেন্দ্র প্রহরারত পুলিশ ওর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কী উচিৎ ছিল না ? এ জাতীয় ঘটনা দেশের ভাবমূর্তি ব্যাহত করে, পৃথিবীর কোনো সভ্য দেশেই এ জাতীয় ঘটনা হওয়া উচিৎ না। দেশ বিদেশের পত্র-পত্রিকা,ফেইসবুক যেভাবে ফলাও করে এই খবর দিয়েছে ; তাতে ১০০% সুষ্ঠু নির্বাচন হয়ে থাকলেও তা কেউ বিশ্বাস করতে চাইবে না। এই ঘটনার সঙ্গে কে বা কাহারা জড়িত ছিল, নির্বাচন কমিশন খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আশা উচিৎ,যাতে ভবিষ্যতে এর পুনরাবৃত্তি না ঘটে ।
হিরো আলম অশিক্ষিত,শুদ্ধ বাংলায় কথা বলতে পারে না,নিম্নমানের মিউজিক বানায়, দেখতে স্মার্ট না । কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে কী চুরি,দুর্নীতি,কালোবাজারি,টেন্ডারবাজি,ঋন খেলাপি, অর্থ- আত্মসাৎ,টাকা পাচার,জমি দখল,এ জাতীয় রেকর্ড আছে ? সে একজন বিবেক সম্পন্ন মানুষ, বাংলাদেশের নাগরিক হিসাবে জনগণের প্রতিনিধি হওয়ার অধিকার রয়েছে, জনগণ চাইলে সে নির্বাচিত হবে, না চাইলে নির্বাচিত হবে না । কিন্তু তাকে জনসমক্ষে এ ভাবে অপমানিত করা বিবেকহীন লোকের কাজ। যে কোনো লোক রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে অংশ নিতে পারে,তার যোগ্যতা আছে কী নেই জনগণ বিচার করবে।
কানাডার মতো সভ্য দেশগুলিতে এ জাতীয় দুর্ঘটনা কখনই হতে দেখি নি। মারামারি তো দূরের কথা, জনগণ এ দেশে ভোট নিয়ে কারো সঙ্গে আলাপ করতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করে না। ভোটের ব্যাপারে কেউ কারো সঙ্গে দেখা করতে ও যায় না। আমাদের ছেলে-মেয়েরা শিক্ষিত হচ্ছে, দৈনন্দিন দেশ-বিদেশের খোঁজ-খবর রাখে, ওদের ধর্য্য ও সহনশীলতা শিক্ষা করা উচিৎ। একটা জাতি ৫২ বৎসর হলো স্বাধীন হয়েছে;দেশ ধীরে ধীরে উন্নতি করছে,এ সব দিকে খেয়াল রাখা উচিৎ। শিক্ষার সঙ্গে নিয়ম শৃঙ্খলা, ধর্য্য ও সহনশীলতা না থাকলে, এ শিক্ষা থেকে ভালো কিছু আশা করা যায় না।
সে বগুড়ার এক গ্রামে জন্ম নেয়া গরিবের ছেলে। পেটের টানে সিডি বিক্রি করত। কিন্তু সিডি বিক্রি করে তো আর সংসার চলে না , শেষে ডিশ ব্যবসায় নেমে পরিচিতি পান ‘ডিশ আলম’ নামে। তার আগে বাড়ার প্রবল ইচ্ছা ; কী ভাবে হবেন ? তার সমস্যা অল্প পড়াশুনা ,ঠিক ভাবে বাংলা ও বলতে পারে না, শরীর, চেহারা- কোনোটাই হিরো হওয়ার মতো নেই , সে কোনো দিন ভালো টিচার রেখে গানের প্রাকটিস ও করে নাই। রবীন্দ্র সংগীত,নজরুল গীতি, আধুনিক গান যা কিছু নিজের মতো করে গায়, মানুষ মনে করে ব্যাঙ্গ করে। এ নিয়ে পুলিশ হেফাজতে ও যেতে হয়েছে। কিন্তু কিছুতেই তাকে দমিয়ে দিতে পারে নি। মূলতঃ একজন লোক সৎভাবে বাড়তে চাইলে, তাকে সৃষ্টিকর্তা বাড়ার সুযোগ করিয়ে দেন।
বগুড়ার দুই আসন থেকে নির্বাচনে হেরে এবার ঢাকার অভিজাত এলাকা থেকে ভোটার লড়াই এ অত্যাচারিত,অপমানিত হলেন ; তাঁর এই বেড়ে উঠা অনেকে- ই হয়তো সহ্য করতে পারছেন না ;অথবা তাঁর মধ্যে হয়তো কিছু ত্রুটিবিচ্যুতি ও থাকতে পারে।
জনগণ তাকে সুযোগ দিলে হয়তো দেশের ভালো কাজ করতো । লেখাপড়া সবাই শিখে,সৎ সাহস কত জনের আছে ? ৫ হাজার ৬০৯ ভোট জনগণ ওকে সন্মান করে সংসদ সদস্য হিসাবে দেখতে দিয়েছে।
আজকাল বাংলাদেশের নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি অপ্রত্যাশিত ভাবে হ্রাস পেয়েছে ; লোকজন ভোট দেয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে । ভোট কেন্দ্রে যদি এ ধরণের অপ্রীতিকর অবস্থা হয়, লোকজনের মধ্যে হতাশা দেখা দেয় এবং এ জন্য অনেকেই ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকে। বাংলাদেশের মানুষ সব সময় ভোটে দাঁড়ানো, ভোট দিতে আগ্রহী। আমরা ছোটকালে ভোট দেয়া উৎসবের মতো মনে করতাম ; ভোটের দিন সব কাজ রেখে ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে ভোট কেন্দ্রে ঘোরাঘুরি করতাম। আমরা সবাই সবাইকে চিনি এবং কোনো না কোনো প্রার্থীর সাথে নাড়ির টানে আগ্রহ নিয়ে ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত হতাম।
কানাডার মতো দেশে লোকজনের অনেকেই ভোট দিতে চায় না,তাঁর কারণ অনেকেই প্রার্থীকে ব্যাক্তিগত ভাবে চিনে না এবং সে জন্য উৎসাহ পায় না। কিন্তু আমাদের দেশে সবাই সবাইকে চিনে এবং আগ্রহ সহকারে ভোট দিতে যায়। গত কয়েক বৎসরে লোকজন ভোট দেয়ার আনন্দ থেকে বিরত আছে ; অনেকে বলে থাকেন আজকাল ভোট দেয়া, জীবনের ঝুঁকি । বেশির ভাগ ভোটার জীবনের ঝুঁকি নিতে চায় না।
যুগের অনেক পরিবর্তন হয়েছে; সে যুগে দেশে এত এত দুর্নীতিপরায়ণ লোক ছিল না বা লোকজনের এত এত চাওয়া পাওয়া ও ছিল না। মানুষের গোলাভরা ধান,পুকুর ভরা মাছ,গোয়ালভরা গরু, যা পাইতো খেয়েদেয়ে রাত্র হলে মাটির ঘরে কেরোসিনের বাতি নিভিয়ে গভীর ভাবে ঘুমিয়ে পড়ত। আজকের মতো গ্রামে চুরি ডাকাতি ছিল না, অল্প খাইতো, অল্প অল্প চিন্তা ভাবনা নিয়ে বেঁচে থাকতো। একে অপরের প্রতি ছিল অকৃত্তিম ভালোবাসা, সবাই একে অপরের সুখ দুঃখে অংশ নিতো। ঈদ,পূজা বা কারও বিয়ে হলো, সবাই মিলে যতটুকু সম্ভব আনন্দ করতো; এ ছাড়া কারও মৃত্যু, বা দুঃখ সংবাদে সবাই এগিয়ে এসে দুঃখে অংশ নিতো, সীমিত চাহিদা,খেয়েদেয়ে সুখে ছিল। গ্রামের মানুষ লুঙ্গি পড়ে হাঁটে বাজারে যেত, মানুষে মানুষে ভেদাভেদ ততটা ছিল না ।
আমাদের সুদূর টরোন্টোতে ও প্রতিটি জেলার সংঘটন রয়েছে;তা ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ,ইঞ্জিনিয়ার্স , এগ্রিকালচার বিশবিদ্যালয় ও অনেক অনেক সমিতি রয়েছে। প্রতিটি দলের সমিতিতে কেউ প্রেসিডেন্ট ,কেউ সেক্রেটারি আরো ও কত কী পদবি, এ সব নিয়ে প্রতিযোগিতা তো আছেই। তবে প্রতি বৎসর আলাদা আলাদা সমিতি থেকে বনভোজনের আনন্দ ও রয়েছে।
এ ছাড়া এখানে ও অনেকে মিউনিসিপালিটি, প্রভিন্সিয়াল এবং ফেডারেল নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। টরোন্টোতে আমাদের বাংলাদেশিদের মুখ উজ্জ্বল করেছে মিসেস -ডলি বেগম ;উনি অন্টারিও প্রভিন্সিয়াল সংসদ সদস্য।
প্রায় ৩০ বৎসর আগের কথা, আমাদের কেউ একজন টরন্টো মিউনিসিপালিটি, কানাডা, ” স্কুল বোর্ডের ট্রাস্টি” হিসাবে ইলেকশন করতে গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করেছে ; বাসায় তার স্ত্রী বা ছেলেমেয়ে কেউ সমর্থন দিচ্ছে না। কি আর করা , শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছে । নাম বলতে নিষেধ, কয়েকবার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশে গিয়ে ইলেকশন করবে এবং দেশের জনহিতকর কিছু কাজ করবে । বাংলাদেশে ইলেকশন করতে হলে যে সব কোয়ালিটি দরকার তা কী আছে ?
ক) বহু দিন দেশের বাইরে, কেউ তাকে চিনে না। আজকাল ইলেকশন করার নাম করলে কোটি কোটি টাকা লাগে, আশা আছে,সমর্থ নেই- এক মাত্র স্বপ্ন নিয়ে বেঁচে থাকা।
খ) স্বতন্ত্র হিসাবে পাশ করলে ও সংসদে তেমন কোনো গুরুত্ব থাকে না।
গ) বাজেট, বিল অভিজ্ঞ সচিবালয়ে তৈরী করে সংসদে পাশ করার জন্য পেশ করা হয়, আলোচনা বা সমালোচনার পর হয়তো কিছু পরিবর্তন স্বাপেক্ষে হ্যাঁ বা না ভোটে পাশ করা হয়। বিল পাশ হলে সচিবালয়ে পরবর্তী বৎসরের জন্য কার্য্যকরী করে। সংসদে স্পীকার ,ডেপুটি স্পিকার,দলীয় নেতা, উপ -নেতা, মন্ত্রী,উপ-মন্ত্রী, এ জাতীয় সদস্যদের কাজ আছে।
স্বতন্ত্র হিসাবে আশরাফুল আলম (হিরো আলম) যদি পাশ ও করে ও কোনো কাজ করতে পারবে কী ? তিন বার সে ফেল করেছে ; এবার এ সবে ইস্তিফা দিয়ে নিজের চরকায় তেল দেয়া ভালো নয় কী ?
তিনি ইচ্ছা করলে বা পকেটে পয়সা থাকলে দেশের, এলাকার জনহিতকর কাজ করতে পারবেন। বহু ভালো মানুষ তাই করে এবং ভালো কাজের জন্য জনগণের ম্যান্ডেট দরকার হয় না।
ভুপেন হাজারিকার একটা গানের কলি মনে পড়ে :
“মানুষ মানুষের জন্যে, জীবন জীবনের জন্যে
একটু সহানুভূতি কী মানুষ পেতে পারে না, ও বন্ধু পেতে পারে না ? ”
দেশের দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়াতে চাইলে, ভালো মনের মানুষ দরকার।পৃথিবীতে যুগে যুগে “মাদার তেরেসার ” মতো বহু মানুষ জন্ম নিয়েছে। মাদার তেরেসা মেসিডোনিয়া জন্ম গ্রহণ করেন এবং সারা জীবন কলকাতা, ভারতে গরিব দুঃখী মানুষের সেবা করে জীবন শেষ করেন। তিনি একজন বিরল মহিলা যার কাজের স্বীকৃতি হিসাবে ১৯৭৯ সনে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
আমাদের দেশে, শহরে বস্তিতে,গ্রামে গঞ্জে বহু লোক না খেয়ে পড়ে থাকে।কত লোক বস্তিতে,রাস্তার ফুটপাতে,রেল লাইনের পাশে অবহেলিত অবস্থায় আছে , কে কার খবর রাখে ? ইচ্ছা করলে যে কেউ একটু সাহায্যে এগিয়ে আসা সম্ভব। দেশে কিছু ভালো মনের মানুষ রয়েছে, যারা দূঃস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ায়। অনেকে মৃত্যুর পূর্বে তার চক্ষ্যু, কিডনি,রক্ত দান করে দূঃস্থ মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে ।
আজকাল বাংলাদেশে অনেক ধনী হয়েছে। সে যুগে আমরা শুনেছি পাকিস্তানে ২২ পরিবারের গল্প, আজকাল বাংলাদেশে কয়েক হাজার ধনী পরিবার হয়েছে, এদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলে দেশের অনেক পরিবর্তন হবে। আমাদের ডাক্তার মোহাম্মদ ইউনুস বিশ্ববরণ্য ব্যক্তি, জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে নোবেল পুরস্কার পান নি। উনি দেশের জনগণের জন্য কাজ করে শান্তি পুরস্কার পেয়েছেন।
আমাদের সে যুগে সারা দেশে তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাকা,রাজশাহী ও চট্টগ্রাম )ছিল ; আজকের মতো সে যুগে ঘরে ঘরে শিক্ষিত লোক ছিল না। বতমানে বাংলাদেশে ১৫০টি একাডেমিক সংস্থা এর মধ্যে ৪৩টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, ১০৩টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, ২টি আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়, ৩১টি বিশেষায়িত কলেজ এবং ২টি বিশেষ বিশ্ববিদ্যালয় (উৎস ইন্টারনেট) । আগের তুলনায় দেশে পড়াশুনার যথেষ্ট সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে ; তবে শিক্ষা নিয়ে ভালো মানুষ হচ্ছে কী ? একদিকে পড়াশুনা করছে,ওপর দিকে উশৃঙ্খলতা , নেশা,চুরি,ডাকাতি,অপহরণ, দুর্নীতি বেড়েছে।
আমার সন বা তারিখ মনে নেই,একবার কানাডা থেকে লম্বা জার্নি করে বাংলাদেশ এয়ারপোর্ট গিয়ে বিপদে পড়ে ছিলাম ; রাস্তায় ভয়াবহ অবস্থা,এয়ারপোর্ট থেকে বাসায় যাওয়ার মতো কোন গাড়ি নাই,রাস্তা ফাঁকা, গাড়ি দেখলেই আগুন ধরিয়ে দেয়, ভয়ে কেউ গাড়ি নিয়ে এয়ারপোর্ট আসতে রাজি হয় নি। অনেকেই এয়ারপোর্ট থেকে রোগী সেজে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে বাসায় গিয়েছে ,আমি ঢাকা থেকে বাড়ি যাবো, কেউ ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি বের করতে চায় ন। শেষে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে রোগী সেজে গ্রামের বাড়ি গিয়েছি।
জীবনে প্রতিযোগিতামূলক কাজে হারজিত অবশ্যই থাকবে। ছোটকালে আমরা ধানকাটার পর খালি জমিতে দৌড়াদৌড়ি,ফুটবল এবং আরো অনেক ধরণের খেলাধুলা করতাম। এ সব খেলায় সবসময় হারজিত ছিল বা আছে। তার জন্য আমরা মন খারাপ করতাম না।
কচ্ছপ আর খরগোশের প্রতিযোগিতা আমরা সবাই জানি। মনে করেন কচ্ছপ আর খরগোশের প্রতিযোগিতায় পথের মাঝখানে খাল এবং পানি আছে , এবার কচ্ছপ আসতে আসতে পানিতে ঝাঁপ দিয়ে পার হয়ে গেলো, দ্রুত খরগোশ খালের পাড়ে দাঁড়িয়ে নিজের পরাজয় মেনে নিলো।
রাজনীতিতে ও জয় পরাজয়,আছে অনেক যন্ত্রনা পরাজয়ের গ্লানি , কচ্ছপের মতো এক সময় জনগণ ভোট দিয়ে পাশ করিয়ে দিতে ও পারে। কিন্তু সংসদে গিয়ে দেখবেন স্বতন্ত্র ভাবে পাশ করে সমর্থক ছাড়া কথা বলতে গেলে শত বাধা। শেষে ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি।
হিরো আলম বরং অভিনয় ,মডেলিং করে যা রোজগার করবেন, রোজগারের কিছু অংশ গরিব দুঃখী মানুষের জন্য দান করুন এর চেয়ে উত্তম কাজ আর কী হতে পারে ? অযথা পয়সা খরচ করে হয়রান হওয়ার চেয়ে গরিবদের পাশে দাঁড়ানো অনেক শ্রেয়।
সঠিক গণতন্ত্র কোনো দেশে আছে কি ? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে “বিশ্বের প্রাচীনতম গণতন্ত্রের দেশ বলা হয় । ” আমেরিকা সারা পৃথিবীকে আঙ্গুল দেখিয়ে গণতন্ত্র শিক্ষা দিয়ে থাকে । সাংবিধানিক গ্যারান্টি থাকা সত্ত্বেও এক সময় বেশিরভাগ কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকানরা নির্বাচনে ভোট দিতে পারতো না বা তাদের মৌলিক নাগরিক অধিকারও ছিল না। অন্যান্য অনেক দেশের মতো যুক্তরাষ্ট্র গণতান্ত্রিক আদর্শকে সুসংহত করতে বহুদিন যাবৎ কাজ করতে হয়েছে। এইতো গত ২০২১ সনের নির্বাচনের কথাই ধরা যাক, আজ ও প্রতি ৪ জনের ১ জন বলে ডোনাল্ড ট্রাম্প পাশ করেছিল,জো বিডেন জোর করে ক্ষমতা দখল করেছে। ডোনাল ট্রাম্প স্বীকার করছে না যে সে গত নির্বাচনে পরাজিত হয়েছিল, সে বলে জোর করে ফেল করানো হয়েছে।
আজ মিডিয়াতে দেখলাম, এক ব্যক্তি বলেছেন আশরাফুল আলম “হিরো আলম” হিসাবে খ্যাতি অর্জন করেছেন। বগুড়ার পাড়া গাঁ থেকে ১০০ মাইল দূরে ঢাকা এসে UNO এর সম্মানীত ব্যাক্তিদের খাতায় নাম লিখিয়েছেন ; “মাত্র নোবেল পুরস্কার পাওয়ার ১ গজ দূরে আছেন।“ উনি কী করে বুঝলেন যে ১ গজ দূরে আছেন ? এবার বুঝে দেখুন আমাদের মিডিয়া কী না পারে ?
নোবেল পুরস্কার তো পাবেই না ,যারা ফুলের মালা দিয়ে দ্রুত হিরো বানিয়েছে, সতর্ক না হলে,ওদের ই কিছু লোক “হিরো আলম”কে আরো ও অপদস্ত করিয়ে রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলে দিতে পারে, সর্বস্ব হারিয়ে, যেখান থেকে আর ফিরে দাঁড়ানোর কোনো সুযোগ থাকবে না।
সমাপ্ত