যখন পেশাগত জীবনে খুব ব্যস্ত থাকি, তখন দেহ মন একটু ছুটি চায় । কিন্তু পাঁচদিনের ছুটিতেই হাঁপিয়ে উঠেছি । উফফ !! কাজ ছাড়া কি বাঁচা যায় ? তাই তো দেখি তরতাজা মানুষগুলো অবসর জীবনে পা দিয়েই কেমন যেন দ্রুত বুড়িয়ে যায় । হয় ফুরিয়ে যায়, নয়তো ধুঁকে ধুঁকে বাঁচে অর্থহীন জীবন আর মহা প্রস্থানের অনিশ্চিত সময়ের অপেক্ষায় । আর যদি সে একা হয় । কাউকে না কাউকে তো একসময় একা হতেই হয় ।
নির্ঘুম রাত, অলস দুপুর অথবা বিষন্ন বিকেলে । বুকের ভেতর সযতনে সংরক্ষিত স্মৃতির সিন্দুকটা সাবধানে খোলে । কতকিছু সেখানে একান্ত আত্মগোপনে । দুরন্ত ছেলেবেলা অথবা মেয়েবেলা । এক্কাদোক্কা, আড়ং মেলা, রেশমী চুড়ি, রঙিন ফিতা, মাটির পুতুল, পুরাতন জুতার বাক্সে মিছেমিছি সংসার সংসার খেলা । অথবা সেই ডাংগুলি, সাতচাড়া, ফুটবল, পুকুরে ডুবিয়ে ডুবিয়ে চোখ লাল করে ঘরে ফিরে মায়ের হাতে তালপাখার পিটুনি । আরো কতো কি !!!
স্মৃতির সিন্দুকের তাকে তাকে সাজানো হাজারো স্মৃতি । আজো উঁকি দেয়, বয়ঃসন্ধি কালে অজানা এক ভাললাগা সেই মায়াবী চোখের কিশোরী অথবা ঝাকড়া চুলের সেই দুরন্ত যুবক !!
সারি সারি তাকের সবচেয়ে নীচে একটা তালা বন্ধ ড্রয়ার । সেখানে শুধু একজনই থাকে, নিরবে নিভৃতে । সে তালার চাবির খোঁজ সেই শুধু জানে । ভাললাগা অতঃপর ভালোবাসা, হোক না তা বিয়ের পিঁড়িতে বসার আগে অথবা পরে । সুখে দুঃখে জীবন কেটেছে বহতা নদীর মতো । আবারো সেই বর বউ খেলা । তবে এ খেলা মিছেমিছি নয় । ভালবাসাবাসি, হাসাহাসি, খুনসুটি, হাড়ি কড়াই, ঘরকন্যা, আদরের সন্তান, আরো কত কি !!!
স্মৃতির সে ড্রয়ারের হাতলে হাত থেমে যায় । এই তো সেদিন, সে অথবা তিনি । নিয়তির বানে গেল ভেসে, সফেদ বসনে, অজানা কোন এক দেশে ।
বলে গেলো ,,,,,
নশ্বর দেহটা যাবে মিশে,
আত্মাটা রয়ে যাবে তোমার সাথে,
আবারো আসবো ফিরে,
তোমার আকাশে শঙ্খচিল হয়ে ।।।।
ছবি: সৌজন্যে:-Pinterest