টরন্টো থেকে:-
ভাবছি কি বিষয় নিয়ে লিখব? বিজ্ঞান, রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজনীতি, ধর্ম, ক্ষুধা, দারিদ্র্যতা, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি, প্রেমপ্রীতি এ সব নিয়ে যারা গবেষক বা প্রফেসনাল তারা লিখবে। আমি একজন এমেচার বা অকেশনাল লেখক। মানব জীবনের জন্য এ সব উত্থান পতন বা নৈর্বক্তিক বিষয় নিয়ে লেখার দু:সাহস না করাই ভালো।! অনেক ভাবার পর মনে হলো আজ নিজের ছাত্র জীবনের একটি বিষয়কে নিয়েই লিখি।
১৯৮0 সালের মাঝামাঝি সময়। ঢাকা বিশবিদ্যাললয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের (সম্মান) দিতীয় বর্ষের ছাত্র। জহুরুল হক হলের ( ইকবাল হল ) ২৭০ নম্বর রুমে থাকি। আমার এক বছর আগে এসে আমার সবচাইতে ঘনিষ্ট বন্ধু (আমার স্ত্রীর সেজ ভাই) আইন বিভাগে ভর্তি হয়েছেন। আমরা স্কুল জীবনের পর আবার উনিভার্সিটিতেও একসাথে থাকা ও লেখা পরার সুযোগ পেয়েছিলাম। আমাদের এই ২৭০ নম্বর রুম উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত। অর্থাৎ আমার ঐ বন্ধুর মামা ঐ রুমে থাকতেন। তত্কালীন সময়ে জহুরুল হক হলের কর্তৃত্ব ছিল বরিশাল ও গোপালগঞ্জের ছাত্রদের নিয়ন্ত্রণে। আমাদের ঐ মামা বরিশাল গ্রূপের একজন নেতা ছিলেন। তিনি দুই সিটের ঐ ২৭০ নম্বর রুমে একাই থাকতেন।
মামা লেখাপড়া শেষ করে জার্মানি চলে গেলে ঐ রুমের মালিকানা আমাদের হয়। ঐ মামার ভাগ্নে হওয়ার সুবাদে হলে আমাদের বেশ জানাশুনা ছিল। মামা চলে গেলেও তার বন্ধু বান্ধবরা আমাদের অনেক লক্ষ্য রাখতেন। তবে ২৭০ নম্বর রুমের দটি সিটের বৈধ মালিকানা আমাদের ছিল না, একটি সিট আমার বন্ধুর নামে ও আর একটি সিট্ এমনি জোর দখল করে আমরা থাকতাম। মামার জার্মানি যাওয়ার পরে তাই একদিন আমাকে ডেকে আমাদের হাউজ টিউটর স্যার বললেন ,তোমাদের রুম দুজনের নামে আলোট মেন্ট নাই, যে কোনো এক সিট ছাড়তে হবে। তিনি আর একজন নুতন ছাত্রকে একটি সিট আলোটমেন্ট দেবেন। সে মাত্র একবছর থাকবে। তারপর আবার আমাদের রুম আমাদেরই থাকবে। তোমরা তার সাথে ভালো সম্পর্ক রাখলে তার সাথে একজন থাকতে পারবে। এভাবে না করলে তোমাদের রুম বেদখলে চলে যাবে। আমাদের মামা ও তার বন্ধুদের বিষয়ে হাউজ টিউটর স্যার খুব ভালো মতই জানতেন। তাই তিনি আমাদের এ অপসন দিলেন যাতে আমরা ঐ রুমে থাকতে পারি।
কয়েকদিন পর একজন হুজুর আমাদের রুমে আসলেন। তিনি ইসলামিক স্টাডিস এর প্রিলিমিনারী ফাইনাল ইয়ারের ছাত্র। ৮/৯ মাস পরে তিনি ফাইনাল পরীক্ষা দিয়ে চলে যাবেন। বয়স আমাদের থেকে ৩/৪ বছর বেশি। তিনি বিবাহিত ও কয়েকটি (সঠিক সংখা মনে নাই) সন্তানের জনক। তিনি ছিলেন একজন বিনয়ী ও নম্র ভদ্রলোক । মধুপুরের আঞ্চলিক টানে কথা বলতেন বেশ ধীরে ধীরে। বাড়ি টাঙ্গাইলের মধুপুরের প্রত্যান্ত অঞ্চলে। তিনি পীর বংশের লোক। তার চাচা শশুর এখন তার ঐ এলাকার গদ্দিনশীন পীর।
প্রথমে তাকে দেখে খুব হতাশ হলাম। শেষ পর্যন্ত হাউজ টিউটর স্যার আমাদের রুমে একজন পীর সাহেব কে দিলেন ! যদিও আমার রুমমেট বন্ধুর এ নিয়ে খুব একটা মাথাব্যাথা ছিল না। কারণ সে ২৪ ঘন্টার মধ্যে মাত্র ৫/৬ ঘন্টা রুমে থাকতেন শুধুমাত্র ঘুমানোর জন্য। এদিকে আমদের রুমে তখন আমার আরেক স্কুল জীবনের বন্ধু সুব্রত (যাকে আমরা শুনু বা উচ্চারণের অযোগ্য আর একটা নামে ডাকতাম) ও আমার আরো কয়েকজন আত্তীয় বন্ধুবান্ধব থাকতেন। এ সব আত্তীয় বা বন্ধুদের মধ্যে পরবাসী ব্লগের একজন ঘনিষ্ট ব্যাক্তি ও আমার আরেক বন্ধু ,আমার স্ত্রীর এক ফুপাত ভাই ও আমার আর এক স্কুল জীবনের বন্ধু অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। মাঝে মাঝে বরিশালের গুল গুল এন আলম ভাই (প্রকৃত নাম গোলাম এন আলম সেন্টু) এসে থাকতেন। তিনি আমার শাশুড়ির পীর ভাইয়ের ছেলে। অর্থাৎ দুইজনের রুমে ঐ সময় আমরা ৫/৬জন থাকতাম। তত্কালীন সময়ে প্রয়োজনের তুলনায় আবাসিক হলের সংখা কম থাকায় প্রতি রুমে এরকম ৪/৫ জন করে ছাত্র থাকতো। আমার রুমে যারা থাকতো তাদের চার জন দুই সিঙ্গেল বেডে ডাবলিং করে ঘুমাতো আর বাকিরা ফ্লোরিং করত। সবাই খুব মজা করে হাসি ঠাট্টার মধ্য দিয়ে সময় কাটাতাম। এখন হুজুর আসার ফলে প্রথম সমস্যা হুজুরকে এক বেড ছেড়ে দিতে হলো। তাতে করে আমাদের রাতে ঘুমাতে আরো একটু কষ্ট স্বীকার করতে হলো। আমার রুমমেট বন্ধুকে নিয়ে চিন্তা নাই ,সে এসে যেখানে একটু জায়গা পেতো সেখানেই ঘুমিয়ে যেতো। আমার বন্ধু শুনু আর আমি একসাথে ফ্লোরিং করতাম। বাকিরা অন্য বেডে ডাবলিং ও কেহ ফ্লোরিং করে রাতে ঘুমাতো। কয়েকদিন আমাদের এ অবস্থা দেখে হুজুর একদিন তার স্বভাব সুলভ মধুপুরী টানে আমাকে বললেন, মুনির ভাই আপনি আমার সাথে ডাবলিং করতে পারেন। আপনাদের এভাবে থাকতে দেখে আমার কষ্ট হয়। তার কথায় আমি ও আমার বন্ধুরা বেশ চমকিত হয়ে গেলাম। যাইহোক, তার সাথে ডাবলিং করতে শুরু করলাম। প্রথম দিন দেখলাম তিনি বেডের মাঝ বরাবর একটা কাঁথা দিয়ে তার সাথে আমার সীমানা নির্দিষ্ট করে দিলেন। পরে আরো দেখলাম তার অংশে একটি গামছা বিছিয়ে নিলেন। এভাবে তার সাথে আমার বেডে ডাবলিং শুরু হলো।
হুজুর ছিলেন একজন নিতান্ত ধার্মিক লোক। কোনো বাজে খেয়াল আমি অত্র মধ্যে দেখি নাই। সব সময় তিনি গুন গুন করে পবিত্র কোরানের কোনো সুরা বা দোয়া পরতেন। তার সবচেয়ে পছন্দের দোয়া ছিলো….. “আস সুব হু বাদা মিন সরিয়াতিহি ,অল লইলি দুজা বি……” । আবার কোনো কোনো সময় গাইতেন, “বালাগাল উলা বে কামালিহি কাশাফাত দুজা বে জামালিহি হাসনাত জামিউ ওয়া খিছালিহি ……”।
হুজুর আসার আগে আমরা সব সময়ই হাসি তামাশার মধ্যদিয়ে সময় কাটাতাম। একসাথে খেতে যাওয়া ,ঘুরে বেড়ানো বা সিনেমায় যাওয়া,খেলা দেখা এবং বন্ধু বান্ধবের নাম বিকৃতি করা সবই চলত। তবে হুজুর আসার পরে তার সামনে ঐ ধরনের খোলামেলা ইয়ার্কি ঠাট্টা করা কিছুটা ভাটা পড়েছিল। তবে ঐযে….চোরা নাহি শোনে ধর্মের কাহিনী ! কয়েকদিন যেতে না যেতেই আবার আমরা তার উপস্থিতিতেও আমাদের দুষ্টামি ঠিকই চালিয়ে যেতে শুরু করলাম , এমনকি তাকে নিয়েও এসব ইয়ার্কি ঠাট্টা আরম্ভ করলাম। কোনো কোন সময় তাকে অনেক বিব্রতকর প্রশ্নও করা হতো। যেমন আমার স্ত্রীর চাচাতো ভাই তাকে প্রশ্ন করলেন, হুজুর আপনি বিয়ের আগে কোনো প্রেম করেছেন? কিম্বা আর একজন হয়ত প্রশ্ন করলো, ক্লাসে মেয়েদের সাথে বসলে আপনার কি ধরনের ফিলিং হয়। একবার তো একজন তার পাঞ্জাবীর পকেটে নোংরা ভাষায় প্রেমপত্র লিখে রেখে দিল। হুজুর পাঞ্জাবী পরার সময় পকেটে হাত দিয়ে ঐ পত্র পেয়ে দুéএক লাইন পড়ে নাউজুবিল্লাহ বলে আমাকে দিয়ে বললেন, দেখেন মুনির ভাই, এটা অপনাদের কারো পত্র ভুল করে আমার পকেটে রেখে দিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে আমার বন্ধুরা ঐ পত্র নিয়ে জোরে জোরে পড়তে লাগলো আর বললো, “ছি! ছি!! আপনি এসব করে আর আমাদের হেদায়েত করে ? ছি! ছি!! ছি !!!” এভাবে আমাদের শত দুষ্টামি বা অত্যাচার সত্তেও হুজুর কখনো রাগ করেননি বা আমাদের বিরুদ্ধে কোনো নালিশ করেননি।আমাদের ঐ সব দুষ্টামি তিনি মৃদু হেসে উড়িয়ে দিতেন।
তিনি কখনও আমাদের ধর্মীয় বিষয়ে পীর সুলভ হেদায়েত করেনি। তবে নিজে সব সময় লেখাপড়ার পাশাপাশি নামাজ ও অন্যান্য ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলতেন। তিনি তার ক্লাসে বা হলের ছাত্রদের কাছে যথেষ্ট জনপ্রিয় ছিলেন তার সততার জন্য। তিনি ছিলেন তার পীর সাহেবের প্রধান খাদেম। তিনি বলতেন,তার এলাকার বর্তমান পীর অর্থাৎ চাচা শশুর মারা গেলে তাকেই গদ্দিনসীন করা হবে বলে স্থানীয় সকলে মনে করে। একবার তার পীর সাহেব কোনো বিশেষ কাজে ঢাকা এসেছিলেন। তখন হুজুরের যে কি টেনশন তা ছিল বর্ণনাতীত ! কোথায় থাকবেন ,কি খাবেন , কেভাবে ঘুমাবেন ,কিভাবে চলাফেরা করবেন এসব ভেবে হুজুর মহা টেনশনে। তার এসব বিষয় শুধুমাত্র আমার সাথেই শেয়ার করতেন। তার পীর সাহেবের ঢাকা আসার সময়কালীন আমাদের রুমের জনসংখা কম ছিল। কেহ কেহ বাড়িতে থাকার জন্য রুমে আমরা মাত্র ২/৩ জন ছিলাম। একদিন হুজুরকে বললাম ,আপনি পীর সাহেব কে রুমে থাকতে বলেন না কেন ? রুমে তো এখন লোক বেশি নাই। হুজুর বললেন, আপনার আপত্তি না থাকলে আমি হাউজ টিউটর স্যারকে বলে পারমিশন নিতে পারি। আমি বললাম কোনো আপত্তি নাই ,আপনি যেকোনো সময় তাঁকে আপনার কাছে এনে রাখতে পারেন। ঐ দিন সন্ধাবেলা হুজুর তার পীর সাহেব কে রুমে নিয়ে এলেন। পীর সাহেব হালকা পাতলা গড়নের মাঝ বয়সী ভদ্রলোক। মুখে অল্প দাড়ি। পরনে স্বাভাবিক থেকে একটু বড় ফতুয়া। কথাবার্তাও স্বাভাবিক। পীর সাহেব বুঝতে আমরা যেমন বড় ধরনের ফতুয়া বা আলখেল্লা পরা ,লম্বা দাড়ি বিশিষ্ট এবং কথাবার্তায় বিশেষ ভঙ্গি ইত্যাদি মনে করে থাকি তাঁকে আমার সেরকম মনে হলো না। তবে আমার রুমমেট হুজুর তার পীর সাহেবের সাথে আটার মত লেগে রইলেন। তার গোসল করা বা বাথরুমে যাবার সময় তার জন্য অপেক্ষা করা ,খাওয়া,বাইরে হাটত়ে যাওয়া ইত্যাদি সব বিষয়ে তার সাথে একনিষ্ঠ ভাবে লেগে রইলেন। রাতে পীর সাহেব তার বেডে ঘুমাতে গেলে তার সাথে আমাদের হুজুর কে থাকতে বললেন। কিন্তু হুজুর কোনো মতেই রাজী হলেন না। বললেন , আমি আপনার বেডের পাশেই থাকবো। আমি ভোর রাতে একবার ঘুম থেকে উঠে দেখি হুজুর তার পীর সাহেবের দু’পা ধরে বসে অঝর নয়নে কাঁদছেন ! এ ধরনের গুরুসেবা আমি কখনও দেখি নাই! তার সে কান্নার কারণ কি তা আমার বোধগম্য হলো না। হুজুরের গুরুভক্তির ঐ দৃশ্য দেখে আমি অভিভূত হয়ে গেলাম !!
তার মধ্যে বেশ কিছু কামেল বা আধ্যাতিক গুনাবলীও আমি লক্ষ্য করেছিলাম। সেসব বিষয় আমি তাকে ছাড়া আর কারো সাথে শেয়ার করি নাই। আজ তার বিষয়ে লিখতে যেয়ে সে সব বিষয় মনে পড়ছে। তবে সেসব কিছু বিস্তারিত ভাবে উল্লেখ করতে চাই না। শুধু একটা বিষয় উল্লেখ করতে চাই। হুজুর মাঝে মধ্যে দুপুরে ক্লাস না থাকলে খাবার পরে গুন গুন করে ঐ সব দোয়া কালাম পরতেন এবং সেইসাথে লেখাপড়া করতে করতে ঘুমিয়ে পরতেন। আমিও তার পাশে শুয়ে হালকা ঘুম দিতাম। দুপুরের পরে ক্লাস না থাকলে এটা ছিল আমাদের নিত্যকার ঘটনা। অন্য কেহ এসময় রুমে থাকত না। একদিন হুজুর দুপুরে ক্লাসে গেলে আমি একা রুমে শুয়ে রেস্ট নিতেছিলাম। প্রচন্ড গরমে হাত পাখা দিয়ে নিজেকে বাতাস করতে করতে একসময় হালকা তন্দ্রা মত এলো। কিন্তু আমার মনে হলো যে রুমের জানালা দিয়ে হূড় হূড় করে একধরনের প্রাণী প্রবেশ করছে এবং কিচির মিচির করে এক দুর্বোধ্য ভাষায় কি জেনো বলছে। তাদের শরীরে অনেকটা বিড়াল আকৃতির বড় বড় লোম ,চোখ দুটো গোলাকৃতির। বিড়াল আকৃতির হলেও তারা দু’পায়ে হাটছে আর কি যেন খুজছে আমাদের রুমে। আমার মনে হলো, আমি জেনো আধা ঘুম আধা জাগা অবস্থায় এসব দেখছি !একপর্যায়ে তাদের ঐ কিচির মিচির আর সহ্য করতে না পেরে আমি হাতের পাখা দিয়ে আঘাত করে তাদের রুম থেকে বের করে দিতে চেষ্টা করছি !! কতক্ষণ পরে মনে নাই আমি ঐ আধা ঘুম আধা জাগা অবস্থা থেকে বাহির হয়ে দেখি যে আমার সারা শরীর ঘামে ভিজে একেবারে যব যবে। বেশ কিছুক্ষণ পাখা দিয়ে বাতাস করে আগে নিজের শরীর ঠান্ডা করলাম। দু’এক দিন পরে এ বিষয়ে হুজুরকে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি একটুও আশ্চর্য না হয়ে মৃদু হাসলেন। আমাকে বললেন,”মুনির ভাই,ঘাবড়াবেন না। এরা জ্বীন।এরা কোরান তেলাওয়াত শুনতে ভালোবাসে। আপনার কোনো ক্ষতি হবে না, আমি বলে দেব।” আমি জানিনা তিনি বলে দেবেন বলতে কি বোঝাতে চেয়েছিলেন। তবে আমি আর এ ধরনের কোনো স্বপ্ন জীবনে দেখি নাই।
হুজুর ফাইনাল পরীক্ষা দিয়ে আমাদের রুম বিদায় নিয়ে নিজের বাড়ী মধুপুর চলে গেলেন। তিনি যাবার সময় আমাদের সবার জন্য দোয়া করেছিলেন। পরে একবার তার সাথে কিভাবে যোগাযোগ হয়েছিল মনে নাই। তখন তিনি মধুপুর কলেজে শিক্ষকতা করছিলেন। সময়ের সাথে আস্তে আস্তে সব কিছু স্মৃতির আড়ালে চলে যায়। লেখাপড়া শেষ করে আমরা যার যার কর্মক্ষেত্রে চলে গিয়েছিলাম। পরে হুজুরের এলাকার এক বন্ধুর কাছে জেনেছিলাম, তার শশুরের মৃত্যুর পরে তিনি গদ্দিনশীন পীর হয়েছেন। সেইসাথে মধুপুর কলেজের প্রিন্সিপাল হয়েছেন। এর পরে তার সম্পর্কে আর কোনো খবর রাখার সুযোগ হয়নি বা সময়ও হয়নি। আজ ছাত্রজীবনের স্মৃতি চারণ করতে যেয়ে কেন জানি প্রথমেই তার কথা মনে হলো। তাই তার ও আমার সম্পর্কের কিছু অজানা বিষয় আজ সকলের কাছে প্রকাশ করলাম। আমাদের রুম থেকে যাবার সময় আমাদের সকলের বিশেষ করে আমার জন্য যেভাবে দোয়া করেছিলেন অত আজও আমি ভুলি নাই। তিনি বেঁচে আছেন কিনা তাও জানি না। যদি বেঁচে থাকেন তবে মহান আল্লাহ এর কাছে তার দীর্ঘায়ু ও সুসাস্থ্য কামনা করি আর যদি মৃত্যুবরণ করে থাকেন তবে মহান আল্লাহ এর কাছে তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।
“শোনেন গুল গুল এন আলম ভাই আমরা আপনার —“
দয়ে করে গানটা শেষ করুন……..
বাকি অংশ সেন্সর করা হয়েছে….