Mandal, Norway.
যোগ্যতা আর পরিশ্রম দিয়ে সব সময় বড় হওয়া যায়না , বড় হতে হলে নিজের সুশৃঙ্খল জীবন যাপন, যোগ্যতা, পরিশ্রমের সাথে সাথে পরিবার,বন্ধুবান্দব, আত্বিয়স্বজন, এবং দেশবাসীর সহযুগিতা লাগে,,
লাফিয়ে লাফিয়ে উপরে উঠতে হলে সামনে প্লাটফর্ম লাগে।
গত কয়েক মাস আগে ঘুম আসছিলোনা , তাই ঘুমাবার আগে ইন্ডিয়ান একটা মুভি দেখছিলাম, মুভিটা ইন্ডিয়ান ক্রিকেটার মহেন্দ্র সিং ধনীর জীবনের উপর নির্মিত। আমি বারে বারে মুভিটা দেখি, দেখি কেননা আমি নিজেও বড়ো হতে চাই, কিন্তু শত পরিশ্রম আর চেষ্টার পর যখন দেখি কিছুই করতে পারছিনা তখন এর কারণ খুঁজি, কেননা যেকোনো সমস্যা হতে বের হতে হলে, সে সমস্যার জড় কোথায় তা আগে বের করতে হয়, সে সমস্যা থেকে আগে বেরিয়ে আসতে হয় এবং তাতেই মূল সমস্যা থেকে উত্তরণ মিলে।
মহেন্দ্র সিং ধনী ইন্ডিয়ার বিহার রাজ্যের একেবারে গ্রাম থেকে উঠে আসা একটা ছেলে, যে আজ শত শত কোটি রুপির মালিক। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মুভিটা দেখলে বুঝতে পারবেন, মহেন্দ্র সিং ধনী হয়ে উঠবার পেছনে মহেন্দ্রর পেছনে কত শত মানুষের সহযোগিতা ছিল।
আমরা যারা বাংলাদেশী ছেলেমেয়েরা অনেক কষ্ট করে বিদেশের মাটিতে পা রাখি তারা একেতো দেশ থেকে ভালো করে কিছুই শিখে আসিনা তার উপর আসার পর থেকেই পরিবার পরিজনদের কাছ থেকে শুরু হয় টাকা পাঠানোর চাপ, নিত্য নতুন আবদার আর চাপের মাঝে পড়ে স্বাধীনতার পর থেকে প্রবাসী কত শত বাংলাদেশী ছেলেমেয়ের সত্যিকারের বড়ো হয়ে উঠবার স্বপ্ন ধুলিৎসাৎ হয়েছে তার খবর কেউ হয়তোবা রাখেন না, কিন্তু ১৯৭১ থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত যে সকল বাংলাদেশী ছেলে মেয়েরা প্রবাসী হয়ে ছিল তাদের যদি সামান্য একটু সহযুগিতা থাকতো তবে বিশ্বের ভিবিন্ন প্রান্তে আজ বাংলার পতাকাটা আরো উজ্জ্বল আরো সুপ্রভিত হয়ে উড়তে পারতো।
জাতিগতভাবে এমনিতে আমরা একটু বেশি ইমোশনাল, যেখানেই থাকিনা কেন, কোনো বাংলাদেশি ছেলে মেয়েদের পক্ষে তাদের বাবা মা ভাই বোনদের ভুলে থাকা সম্ভব নয় , কিন্তু মা বাবা ভাই বোনদের সোহো আত্মীয় স্বজন বন্ধু বান্ধবদের জন্য কোনো কিছু করার আগে একজন মানুষকে নিজেকে গুছিয়ে উঠতে হয়, নতুন পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নিতে হয় এবং নিজেকে আগে সুদৃঢ় করতে হয়। পরিবার পরিজনের চাপে মহাবৃক্ষ হবার আগেই অঙ্কুরেই মরে যাওয়া কারো কাছে ভালো কিছু, বিশাল কিছু আশা করা আর না করা সমান কথা। যে বীজ অঙ্কুরেই ধ্বংস সে তো নিজেই অন্তরীণ, আপনাদের অহেতুক প্রত্যাশায় আপনাদের আদরের ছেলে মেয়েকে কোনো সমুদ্রে লাশ হয়ে ভাসতে দিয়েন না প্লিজ। ইউরোপের রাস্তায় রাস্তায় কত শত আলকোহলিক, হতাশ ছেলে মেয়েদের দিনানিপাত, আর তা শুধু দেশে থাকা তাদের বাবা মা ভাই বোনদের অহেতুক প্রত্যাশার নেগেটিভ প্রতিফলন মাত্র ।
আপনাদের ছেলেমেয়ে , ভাই বোন কেউ যদি সুন্দর ভবিষতের আশায় দেশের বাইরে পাড়ি দেয় তবে তাকে চাপ মুক্ত রাখুন, আস্তা যোগান , নিজেকে গুছিয়ে নেবার জন্য উৎসাহ দিন। দেখবেন কয়েক বৎসরের ব্যবধানে আপনার সে ছেলে -মেয়ে কিংবা ভাই, বোন শুধু আপনাদের জন্য নয় , সারা বাংলাদেশের জন্য অনেক অনেক বিশাল কিছু নিয়ে আসতে সক্ষম হবে। বাবা – মা হিসাবে আপনাদের মুখ উজ্জ্বল হবে , দেশের পতাকাও বিদেশের মাটিতে আরো গৌরবে, আরো অভিলাষে উড়বে।
Photo model: Waki Ahmed Suni.