Canada-Work

গুছিয়ে কথা বলার চেষ্টা করি সবসময় কিন্তু সবসময়ই অগোছালো হয়। লেখালেখির অভ্যাস কোন সময়ই ছিলনা। কবি, সাহিত্যিক অথবা এজাতীয় কোন ব্যাক্তিত্ব হওয়ার কথা কোনদিন কল্পনাও করিনি। সুতরাং গুছিয়ে বলা ও লেখার প্রয়োজনীয়তা সাধারনভাবে উপলব্ধি করলেও খুব বেশী জোরালোভাবে চেষ্টা করা হয়নি। আমার মনে হয়, কবি বা সাহিত্যিকরাই সুন্দরভাবে বলা ও লেখার অবিরাম চেষ্টা করে। আবার মনে হয় আমি ভুল কারন আমি অনেককে দেখেছি যারা কবি বা সাহিত্যিক না বা লেখালেখির কাজ তেমন করেনা কিন্তু খুব সুন্দর ও গুছালো কথা বলে এবং গুছিয়ে লিখে। যাইহোক, গুছিয়ে না পারলেও এবার কিছু লিখার লোভ সামলাতে পারলাম না। দুইটি কারন, এক- লেখা পাঠাবার অনুরধ এসেছে আমার এক সিনিয়র ভাইয়ের কাছ থেকে যাকে আমি যথেষ্ট শ্রদ্ধা করি তার বিনয়ী ব্যাবহারের জন্য এবং আমাকে অকল্পনীয় সহযোগিতা করার জন্য আমার প্রবাসী জীবনে। আমি আল্লাহ্‌র কাছে শোকরিয়া ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপ্ন করি এজন্য যে আল্লাহ্‌ আমাকে টরেন্টোতে পদার্পণ কিছু দিনের মধ্যে মুকুল ভাইয়ের মত একজনের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন।

বাংলাদেশে এনজিওতে কাজ করার সুবাদে দক্ষ কর্মী হিসাবে কানাডাতে আসার সুযোগ হয় আমার ২০১১ সালে। সেসময় সোশাল ওয়ার্কার হিসাবে এদেশে আসার এবং পি আর হিসাবে থাকার সুযোগ হয়। আমি টরেন্টোতে আসি ২০১১ সালে এবং এখনো এখানেই আছি। একটা নির্দিষ্ট পেশার দক্ষ কর্মী হলেও কানাডাতে এসে সেই একই পেশায় কাজের সুযোগ পাওয়া এত সহজ নয়। কোনোকোনো সময়, কারোকারো জন্য একেবারেই সুযোগ হয়নি। তারা অন্য কোন সাধারন পেশা বেছে নিয়ে তাদের জীবন অতিবাহিত করছে এবং বিষয়টি এখন তাদের গা-সওয়া হয়ে গিয়েছে। একারনে অনেক সময় ইমিগ্রেশনকে আমার ব্রেইন-ড্রেইন মনে হয়। কিন্তু আমি বাংলাদেশে যে জাতীয় পেশায় কাজ করতাম এখানে এসেও সেই একই পেশায় কাজের সুযোগ পেয়েছি। মুকুল ভাই ও আরও কিছু ব্যাক্তির পথনির্দেশনা, পরামর্শ ও মনখোলা সহযগিতার কথা না বললে কৃতজ্ঞতা পোষণ করা হবে না। মুকুল ভাইয়ের সহযোগিতা ছিল ব্যাতিক্রম।

আমার এখনো মনে পড়ে, তিনি আমাকে নিয়ে গিয়ে টিম হর্টনে বসেছিলেন। তিনি আরও দুইজনকে সাথে করে নিয়ে এসেছিলেন তাদের অভিজ্ঞতা শুনানোর জন্য। আমাকে একটি একশন প্লান ক্রে দিয়েছিলেন কিভাবে আমি নিজ পেশায় কাজ পেতে পারি এখানে, টরেন্টোতে। এখান আমি সেই পরিকল্পনা মত এগিয়ে যাচ্ছি। এপর্যন্ত আটটি পেশাতে চাকুরী পেয়েছি। এরকম নতুন একটি দেশে, যেখানে ভাষা, সংস্কৃতি সম্পূর্ণ ভিন্ন,, মুকুল ভাইয়ের মত একজনের দিকনির্দেশনা পেলে পথচলা অনেক সহজ হয়ে যায়। আমাদের আরও মুকুল দরকার যারা উদার মন দিয়ে অন্যকে পথ দেখাবে যাতে বাংলাদেশীদের সাফল্য বাড়বে প্রবাসে।

দ্বিতীয় যে কারনে ইচ্ছা করল সেটা হল বাংলায় লিখা। ২০১১ সালে অগাস্ট মাসে টরেন্টোতে আসার পর আজ যতটুকু বাংলায় লিখলাম তার বিশ ভাগের এক ভাগও বাংলায় লিখা হয়নি এখানে ইমিগ্রেশন এর পর। প্রথম প্রথম এখানে আসার পর বাঙালি খুঁজতাম বাংলায় কথা বলার জন্য। এখন এমন অনেককে চিনি জানি যাদের সাথে সচরাচরই বাংলায় কথা হয়। কেন জানিনা, ইংরেজী ভাষায় খুব ভালভাবে কথা বলতে পারলেও বাংলায় কথা বললে মনটা শান্তি লাগে। মনের ভাষা, প্রানের ভাষা আর মাতৃভাষা আমার বাংলা। অনেকদিন পর বাংলায় লিখতে পেরে খুব ভাল লাগলো। আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম যেন বাংলায় লিখতে, বলতে ও পড়তে পারে সেজন্য আমাদেরই চেষ্টা করতে হবে। লেখার চর্চা না থাকার জন্যে এ লেখায় অনেক ভুল বানান ও অশুদ্ধ বাক্য থাকা স্বাভাবিক। আশাকরি সবাই এটা বুঝতে পারবেন। সাধু ও চলিত ভাষার মিশ্রন দূষণীয় হলেও আমার মত লেখকের জন্য মার্জনীয়।

আপনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন