পূবের আকাশে ডানা মেলা সূর্যটা প্রাঙ্গণের ঘুম ভেঙে দেয়। গুটিকতক চড়ই খুঁটে খুঁটে খায় শরত সকালের সুখ। নিজস্ব ভাষায় তাদের অবিরাম চলে সেই আনন্দ উপাসনা। মুখে যক্ষের ধন একটা বাদাম নিয়ে ব্যস্ত একাকী কাঠবিড়ালি। ভবিষ্যতের সঞ্চয় মহামূল্যবান এই সম্পদের জন্যে পৃথিবীর কোথাও কোন সুইস ব্যাংক সে খুঁজে পায় না। ভুগছে নিরাপত্তাহীনতায়। একটু পরেই তাই লুকিয়ে রাখা স্থান থেকে তুলে নিয়ে ওটাকে অন্যত্র সরিয়ে রাখে। ফারাও রাজাদের সমাধি পাশে রক্ষিত সম্পদের সর্বশেষ অবস্থাটা সে জেনে ফেলেছে বলেই মনে হয়!
নরম রোদের উষ্ণতা পুষ্ট বারান্দার চেয়ারে আজ কোন ব্যাস্ততা নেই। চায়ের কাপে প্রতিটা চুমুকে তাই দীর্ঘ বিরতি নরেনের। উচ্ছ্বাসহীন বহতা নদীর মত এক নরেন। হৃদয়ের তীর ভাঙা স্রোত যখন নিয়ে যায় আরাধ্য সবকিছু, তখনও প্রকাশহীন নরেন হয়তো নীরবেই গড়ে তোলে জীবনের নূতন দ্বীপ চর। কলেজে তার ছাত্ররা তাই তাকে নাম দিয়েছে ‘বিকারহীন মিনার’।
পারমিতা একদিন বলেছিল…
নরেন পৃথিবীতে বিরল কিছু মানুষ আছে যারা শুধু দিতে জানে, দিয়েই খুশী হয়। কখনো নিতে জানেনা। ছোটবেলা থেকেই দেখে এসেছি তুমি এই বিরল মানুষদের একজন। মানব চরিত্রে এর চেয়ে ভালো কোন দিক হতে পারেনা। তবে আমার মনে হয় কখনো কখনো আমাদের চাওয়াটাকে বুঝে নেয়া প্রয়োজন। জোর করে হলেও। যদি তা অন্যায় কিছু না হয়। বিশেষ করে পুরুষদের ক্ষেত্রে এটা তাদের পৌরুষের এক অন্য প্রকাশ।
ছোট একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে নরেন বলেছিল…
ন্যায় অন্যায়ের বিষয়টা অনেক ক্ষেত্রেই আপেক্ষিক পারমিতা। আর তাছাড়া কিছু বিষয় আছে, যাকে সমাজ সংসারের বাঁধার মুখে জোর করে নিলে প্রাপ্তি সুখটা হয়তো পাওয়া যায় কিন্তু তার সাথে অন্য কিছু মানুষের যে কষ্ট মিশে থাকে, তা যখন সেই সুখের দেহটাকে একটা শোকাহত চাদরে ঢেকে দেয় তখন তো তা আর উপভোগ্য থাকে না!
তুমি শুধু সমাজ সংসারটাকেই বড় করে দেখছো নরেন, অন্য আর একজনের যে…
এটুকু বলেই ধরা কন্ঠে থেমে গিয়েছিল পারমিতা!
কলেজ প্রাঙ্গণে বিরতির সময় চলছিলো। চারপাশে বেশ হৈচৈ। তারই মাঝে কিছুটা সময় ওদের দু’জনকে অবরুদ্ধ করে রাখলো এক হিম শীতল নীরবতা। যে নীরবতায় এক মুখর পৃথিবীকে হঠাৎ মনে হয় জনশূন্য। যে নীরবতা এক অনন্ত প্রবাহে ভাসিয়ে নিয়ে যায় দুটা আনত প্রাণ। যে প্রাণেরা আশৈশব বেড়ে উঠেছে একে অপরের ভিতর বাহিরে বাস করে।
প্রাচীরটা বিত্ত বৈষম্যের। প্রাচীরটা বংশ বিভেদের! সম্পন্ন পরিবার উঁচু বংশের মেয়ে পারমিতা। নরেনের বাবা ওদের পরিবারের মালির কাজ থেকে শুরু করে পূজা–পার্বণ, বাহ্যিক আরও অনেক কিছুরই ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব সামলায়। এর সাথে ছোট্ট একটা ভিটে বাড়ি আর একটুখানি ক্ষেতি জমি। ভদ্র পরিবার। কিন্তু তার মূল্য এ সমাজে কতোটুকুন!? তুলনায় পারমিতারা….! সেই কয়েকটা মূহুর্তে কতোগুলো বছর আর লক্ষ-কোটি স্মৃতি নরেনের মনোভূমিতে সাইক্লোনের মতো তান্ডব করে গেছে। সেই ছোট বেলা থেকেই বাবার সাথে সে পারমিতাদের বাড়ি আসতো। তখন থেকেই ওরা দুজন খেলার সাথী। কখনও কখনও একসাথে স্কুলের পাঠ নিয়ে বসতো। অংকটা ওর চেয়ে ভালো বুঝতো বলে ওকে সহায়তা করতো। একই বয়সী হলেও জীবনটাকে নরেন পারমিতার চেয়ে একটু বেশীই চিনেছে। বলা যায় চিনতে বাধ্য হয়েছে। সময়ের সাথে পারস্পরিক টানটা বাড়লেও সমানুপাতিক হারে অবধারিত সেই অদৃশ্য দেয়ালটিও মাথা তুলেছে। হাইস্কুলটা আলাদা হয়ে গেলে দেখা সাক্ষাৎটাও একেবারে কমে যায়। এই কলেজে ফের একসাথে…। কিন্তু হৃদয় তো কোন প্রাচীর কখনো মানে নি। মানে নি সময়ের ব্যবধান কিংবা পর্দার আড়াল। ‘দূরত্ব এনে দেয় নেতিবাচকতা’ কথাটা অনেক ক্ষেত্রে সত্য হলেও সব সময় তো তা নয়।
নৈশব্দের হিমবাহ ভেঙে ধরাকন্ঠে পারমিতা বললো… আগামী সপ্তাহে আমাকে দেখতে আসছে…! বলেই উঠে পড়লো। শুধু চোখ নয়, মনে হলো এক মহা প্লাবন যেন ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তার গোটা অবয়ব। একি দৃষ্টির ঘোর!? এর আগেও তো বহুবার সে কারণে অকারণে রাগ করে চলে গিয়েছে। কিন্তু এই পারমিতাকে সে তো এর আগে কখনো দেখেনি! তার বোধ শক্তি সব যেন অসার হয়ে আসছে। চোখের সামনে এক কুয়াশার ঝড় বয়ে চলেছে। সেই ঝড়ের ভেতরে ক্রমশঃ বিলীন হয়ে যাচ্ছে এক প্রতিমার প্রতিবিম্ব। শূণ্য এক অন্ধকারে পড়ে আছে এখন তার হৃদয়ে গড়া সেই প্রতিবিম্বের বেদী।
শেষের ক্লাস দুটা আর করা হয়নি নরেনের। কতক্ষন এই হতবিহ্বলতায় কেটেছিলো তাও ঠিক নেই। শেষে বাড়ি ফেরার পথে যে কাজটা সে করলো তা সম্পূর্ণ তার স্বভাব বিরুদ্ধ। এমনিতে সে খুব শান্ত প্রকৃতির ছেলে। জীবনে খুব বেশী কখনো রাগটাগ করে নি কখনো। মাঝেমধ্যে পারমিতা যখন সহজ অংকটাও বুঝতে পারতো না তখনই যা একটু…। সে ও তো সেই কৈশোরের কথা। কিন্তু ঐ দিন বাড়ি ফেরার পথে রাস্তার পাশে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা পরিত্যাক্ত সেই কাঠের গুড়িটায় সে এমন এক লাথি মারলো যে পায়ের পাতাটা ভীষণ রকম মচকে গেলো। ঘরে ফিরে কাউকে কিছু না বলে অর্ধেক দেহ বিছনায় ফেলে পড়েছিলো। চোখবুঁজে পায়ের ভয়াবহ ব্যাথাটাকে অবশ নিমগ্ন চেতনায় ধারণ করছিলো। অনেকক্ষণ পড়ে মা এসে রুমে ঢুকলে চোখ মেললো। ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে অচলার বুকটা কেমন করে উঠলো। মায়ের একাধিক প্রশ্নে অনেকক্ষণ নিরুত্তর থেকে শেষে এতোটা বছর ঝিনুকের মতো হৃদয়ের খোলসে পুষে রাখা ভালোবাসার মুক্তোটাকে মায়ের কাছে তুলে ধরলো নরেন।
বিছানার ওপরে আনত মস্তক নরেন। মায়ের নিষ্পলক দৃষ্টি সেই মাথার পড়ে। ক্ষণিকের জন্যে ঘরে জমে ওঠা পিন পতন নিস্তব্ধতাকে ভেঙে অচলা বললো, এ তুই কি বলছিস? এ তোরা কি করেছিস? মুখ তুলে নরেন মায়ের মুখের দিকে তাকালো। সে মুখে ঈশান কোনের আকাশে জমে ওঠা কাল বৈশাখী মেঘের ছায়া। মায়ের এমন শঙ্কিত মুখ সে আর কখনো দেখেছে কিনা মনে করতে পারলো না। তারপরও নরেন বললো কেন মা ভালোবাসা কি অপরাধ? অচলা বললো না অপরাধ হবে কেন? কিন্তু… ওরা হলো বড়ো ঘর, উঁচু বংশ….। তোর বাবা, ওদের পরিবার, কেউ ই তো রাজি হবেন না। তারপর আস্তে আস্তে ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন ভুলে যাবার চেষ্টা কর বাবা। সময়ে আবার সব ঠিক হয়ে যাবে। কতোটা শক্ত হাজার বছরে গড়ে ওঠা এই সংস্কারের অচলায়তন মায়ের মুখে সেদিন তা পড়তে কোন সমস্যা হয় নি নরেনের। পারমিতা প্রায়শই এই অচলায়তনের কথা বলতো। হয়তো প্রকারন্তরে এর বিরুদ্ধে তাকে তৈরী করার জন্যেই এ বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করতে চাইতো সে। কিন্তু শান্ত প্রকৃতির নরেন তার সাথে সম্পূর্ণ সহমত পোষণ করলেও এর বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর সাহস কোনদিন হয় নি তার! সে বুঝতো এ পাহাড়ে মাথা ঠুকলে পাহাড়ে কোন কাঁপন ধরুক বা না ধরুক মাথায় যে ফাটল ধরবে সেটা তো নিশ্চিত। আজ এই সিদ্ধান্তটাই পারমিতা তার সামনে ছুঁড়ে দিয়ে গেলো। অচলা বললেন, যা কাপড় ছেড়ে পরিস্কার হয়ে আয়। খাবি। তুমি যাও মা পরে খাবো, ক্ষুধা নেই। তারপরও কিছুক্ষণ ছেলের দিকে তাকিয়ে থেকে ঘর ছেড়ে বেড়িয়ে গেলেন অচলা।
এরপরে আরও দু’দিন কলেজে যায় নি নরেন। মাথার মধ্যে সারাক্ষণই একটা ইতস্ততা বোধ নিয়ে কাটিয়েছে। কলেজে গিয়ে পারমিতার মুখোমুখি হলে সে কি বলবে? কিভাবে সামাল দিবে সেই মূহুর্ত? কিন্তু বিষয়টা সেভাবে আর এগোয়নি। দুজনে দুজনকে দেখেছে ঠিকই কিন্তু পারমিতাই যেন তাকে দৃষ্টির পাশে ঠেলে রেখেছিলো। হয়তো বুঝাতে চেয়েছে সমাধানটা নিয়ে এখন তোমাকেই আসতে হবে নরেন। হয়তোবা এ-ও নরেনের মনের ভুল। তবে এটা যে তাকে একটুখানি স্বস্তিকর অবস্থা এনে দিয়েছে মনের গোপন অনুভূতিতে নরেন তা পরিস্কার উপলব্ধি করেছে। কিন্তু বজ্রপাতের শেষ অংশটা এলো আরও মাস খানেক পরে। সেদিন কলেজ ছুটি হলে মেইন গেটের দিকে হাঁটছিল নরেন। পেছন থেকে পারমিতার কন্ঠ। নরেন ফিরে তাকাতে সে আরও একটু কাছে এসে বললো দুদিন পড়ে আমার বিয়ে। আমি চাই না তুমি ঐ অনুষ্ঠানে আসো! বলেই দ্রুত পায়ে সে অন্যদিকে চলে গেলো। কিংকর্তব্যবিমূঢ় নরেন অনেকক্ষণ ঠায় দাঁড়িয়ে তার অদৃশ্য হয়ে যাওয়াটাকেই যেন আকন্ঠ পান করলো! কথাটা বলার জন্যে নিশ্চয়ই পারমিতা অনেকটা সময় ধরে তাকে অনুসরণ করছিল। কারণ এতক্ষণ ওর সাথে সজল ছিলো। সে মাত্র ও অন্যদিকে চলে গেলো এবং তখনই…। দুদিন পরে বিয়ে! নিশ্চয়ই তার বাবা-মা ও বিষয়টা জানে, ভাবলো নরেন। হয়তো ইচ্ছে করেই তারা এটা জানায়নি তাকে।
পরদিন নরেন ছোট্ট সন্তুকে দিয়ে পারমিতার প্রিয় ফুল এক ঝুড়ি কাঠগোলাপ পাঠিয়ে দিয়েছিলো তার জন্যে। শৈশব কৈশোরে কত শতদিন গাছ থেকে এই কাঠগোলাপ সে পেড়ে দিয়েছে তাকে। আর আজ…! অদ্ভুত এক জায়গা এই সমাজ সংসার। সময়ের সাথে সাথে তার আপন নিয়মেই যেন সে নির্ধারিত করে দেয় প্রতিটা মানুষের স্থান। ব্যাক্তি মানুষের ইচ্ছা অনিচ্ছার কোন মূল্য সেখানে নেই বললেই চলে! ফুলের ঝুড়িতে সে খুবই অপাংক্তেয়র মত এক টুকরা সাদা কাগজে লিখে দিয়েছিলো ‘সুখী হও’! ফুলগুলি রেখে কাগজটাকে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছিলো পারমিতা। উল্টো পাশে অতিপরিচিত হস্তাক্ষরে লেখা ছিলো ‘নিজে বিয়ে করে সুখী হওয়ার পরে কোনদিন এই আশীষ করো আমাকে’।
আমাদের জীবনে বরাদ্দকৃত সময়টাই শুধু তার ইতি টানে। যেখানে বিদায়ের পরেও প্রতিটা জীবন ই যেন হয়ে রয় এক অসমাপ্ত উপাখ্যান। এক কুশলী ইস্তফা দিলে তার রেশ নিয়ে নূতন পর্ব শুরু করে পরবর্তী কুশীলবরা। এভাবেই চলে। এখানে যা কিছু চলমান তার মাঝে একমাত্র বিরতিহীন হলো শুধু সময়। এই সময়ই সব কিছু বদলে দিয়ে যায়। সবচেয়ে দ্রুত বদলায় হয়তো মানুষের মন। তারপরও কারো কারো জীবনে কিছু সিদ্ধান্ত রয়ে যায় আমৃত্যু অটল।
ছুটির দিনটায় রান্নার বুয়া সাধারণত একটু দেরী করে আসে। ব্যবস্থাটা নরেনই করে রেখেছে। তাতে সে একটু বেলা করে উঠতে পারে। ঘরের টুংটাং শব্দে ঘুম ভেঙে যায় না। কিন্তু ভোর রাতের স্বপ্নটা ভেঙে গেলে আর ঘুম আসেনি আজ। তাই সকাল সকালই সে বিছানা ছেড়ে দেয়। পেছনের দিনগুলো ভাবতে ভাবতে মনটা কেমন হয়ে গেলো। সাপ্তাহিক ছুটির দিনটায় ই সে যা একটু বাজার করে। আজ আর তাও ইচ্ছে করছে না। বুয়া মানে রতনের মা আসলে তাকেই দায়িত্বটা দিবে ভাবছে। একার জীবন, ওটা তাই এমন জরুরী কিছু নয়।
সে বুঝতে পারে তার আজকের এই সকালটাকেও নিয়ন্ত্রণ করছে সেই অতীত। আরও পরিস্কার করে বললে বলতে হয় পারমিতা। মাথার মধ্যে শতভাবে ঘুরিয়েও সে একটা প্রশ্নের কোন সঠিক উত্তর এখনো খুঁজে পায়নি নিজের কাছে। খুব জেদি মেয়ে ছিলো পারমিতা এটা তো কমবেশি সবাই জানতো। কিন্তু তার বিয়ের প্রায় দু’বছর পরে এসে এমন কাজটা সে কেন করলো!? সবাই যখন ভাবলো সবকিছু মানিয়ে নিয়েছে সে তখনই…! এটাই যদি হবে তাহলে তো বিয়ের আগেই করতে পারতো। নাকি চেষ্টা করে দেখতে চেয়েছিলো। শেষে নিজের সাথেই যুদ্ধটা হেরে গিয়ে…! এভাবে ইহজাগতিক মুক্তি থেকে সে তার ভালোবাসার জয়টাকে ছিনিয়ে নিলো। যে অচলায়তনে নরেন একটা আঁচড় কাটারও সাহস পায়নি সেই দেয়ালে সে এমন ভাবেই আঘাত হানলো! এবার আর সে কাউকে কিছু বলা বা জানানোর প্রয়োজনও বোধ করে নি। তিলে তিলে গড়ে ওঠা ভালোবাসার ভস্মস্তূপে দাঁড়িয়ে চূড়ান্ত বিশ্বাসে হয়তো সে উপলব্ধি করেছে এ যুদ্ধ একান্তই তার একার! জন্ম মৃত্যুর সীমানার মাঝে এটাই জীবনের পরম সত্য। মা, বাবা, ভাই,বোন, নরেন সবাই ই সেখানে এক একজন পার্শ্ব চরিত্র মাত্র। আর ভাবতে পারে না নরেন।
কাল রাতে সে এসেছিলো। হালকা কমলা রঙের সুতির জামদানী পরিহিতা। কলেজ গেটে শেষ দেখা সেই দিনটায় সে ঠিক এমনই একটা শাড়ি পড়া ছিলো। প্রায়ই সে এমন হুটহাট চলে আসে। দু’একটা কথা হয়। কিন্তু এই একটা প্রশ্নই সে প্রতিবার জিজ্ঞেস করতে ভুলে যায়। কেন সে এটা করলো? ঘুম ভেঙে গেলে তার রাগটা তাই গিয়ে পড়ে সূর্যের উপর। ভাবে এতো দ্রুত কেন আলো ছড়িয়ে দিলো ওটা? আর ও না উঠলেই বা কি আসে যায়? যে ঘুমে পারমিতাকে পাওয়া যায় সেই ঘুমে যে সে অনন্তকাল ধরেই পড়ে থাকতে চায়…!
_______ফরিদ তালুকদার… / নভেম্বর ১১, ২০২০