গোধূলির রং মেখে ডাক দিয়ে যায় যাযাবর মেঘ
স্বপ্নের ঘুম ভেঙে মাধবীরা হয় দিগন্তের অভিসারী
চোখের নীল সাগর পাড়ি দিয়ে নামে সন্ধ্যা
রঙিন উত্তরীয় ডানায়
কতো কতোদিন পরে আবার
নীল জোছনার কার্নিশে হেলান দিয়ে
জেগে ওঠে এইসব রূপালী বোধ
ব্যস্ততা নেই
নেই কোন অহেতুক আনন্দের উচ্ছ্বাস
শঙ্খের উলুধ্বনিতে ছিলোনা কোন
দিন অবসানের শোকাতুর বিউগল
রাতের পসরা নিয়ে ছুটে চলা আগন্তুক বাতাস
হৃদয়ের খোলা দুয়ারে
নিভৃত ছোঁয়ায় উল্টে দেয় পূরণ পান্ডুলিপির পাতা
সেই কতো কতোদিন আগে
শেওলা দিঘির ঘাটে জোনাকিদের সাথে শেষ সভা
বাতাসে হিজল বকুলের রেণু উড়ানো একটি দিন
সবকিছুর ধর্মান্তর ঘটালো
তুই চলে গেলি বলে
বুকের শূন্য করিডোরে আর কোনদিন মেতে উঠলো না
রোদ-ছায়ার কোলাহল, খুঁটে খাওয়া পাখিদের সুখ
নবীনা..
সেদিন আমি জেনেছিলাম
পৃথিবীতে কষ্টের চেয়ে গভীরতা আর কিছুতেই নেই..!
রাতের পর রাত আমি ডুবে গেছি গভীর থেকে গহীনে
কতো নক্ষত্র বিলীন হলো আকাশের গাঁয়ে
আর কোনদিন দেখিনি আমি তাদের বিদায়ী হাতছানি
শব্দগুলো ঝরে ঝরে কঙ্কালসার হলো কবিতার দেহ
মন তবু জাগেনি কাছে ডেকে নিতে কোন জীবনানন্দ
কতো কতোদিন পর
আজ আবার সেই বেদুঈন চাঁদ
ধলেশ্বরীর জলে নামে টলোমলো
শান্ত বুকের ঢেউয়ে
অবিরাম ভাঙে গড়ে তোর মুখ তোর প্রতিবিম্ব
আজ আবার
নিশী জাগা পাখিদের হঠাৎ ডানার ঝাপটায়
শুনি ভালোবাসার সুর
একি সেই কবি হৃদয়?
একি সেই পরাঙ্মুখ প্রাণ??
কবি জানে পরাবাস্তবে বিচরণ
প্রতীক্ষায় কবি দেখে স্বপ্ন রঞ্জন-নিরঞ্জনে
কবি জানে কালাহারির বুকে
কতটা তুমুল হয় উদগ্র বাসনা
রাতের মরু ঝড়ে
বর্ষান্ত বিকেলের শুভ্রতা মেখে যে বিরহ কাঁদে সমুদ্দুর
কবি জানে তাকে এনে দিতে রমনীয় সুখ
ভালোবাসার তর্জনীতে চুমুক দিয়ে
কবি জানে পড়ে থাকতে অযুত বছর
বিবসনা করে হৃদয়..!!
ফরিদ তালুকদার / নভেম্বর ১৬, ২০১৯