মাহমুদা নাসরিন ক্যানবাংলা ইমিগ্রেশন সার্ভিসেস, ৩০৯৮ ডানফোর্থ এভিনিউ, স্যুট ২০৫। ইমেইল,[email protected], ফোন- +১৬৪৭৯৪৫৭৬১০, ফ্যাক্স- +১৬৪৭৯৪৫৭৬১১, বাংলাদেশ অফিস, বাড়ি-২১, রোড-৩, ব্লক-এ , বনশ্রী, রামপুরা, ঢাকা, বাংলাদেশ। ফোন +৮৮০১৯৩৭০৬৭৯৬৬।
ঘুরে এলাম আমার দেশ বাংলাদেশ। অক্টোবরের ২৪ তারিখ থেকে নভেম্বরের ৭ তারিখ পর্যন্ত মাত্র পনের দিন ছিলাম বাংলাদেশে। ফিরে আসার পর ২ সপ্তাহের জমে থাকা কাজ- কয়েকটি রেফিউজি হিয়ারিং এর ফাইল, এক্সপ্রেস এন্ট্রি ফাইল ওপেন করা, বিজনেস প্ল্যান সাবমিট করা, প্রভিন্সিয়াল নমিনী এপ্লিকেশন করা, স্টুডেন্ট ভিসার এপ্লিকেশন নিয়ে খুব অল্প সময়ে অনেক কাজ করে ফেলতে হয়েছিল- একটুও সময় পাইনি লেখা লিখি করার। এর পর পরই টরেন্টোতে আমার খুব কাছের তিনজন মানুষের মৃত্যু, তাঁদের জানাজা, কবরস্থ করা, মিলাদে শরীক হওয়া এসব নিয়ে পুরো নভেম্বর মাস চলে গেছে। কাছের মানুষের এই মৃত্যুগুলো বার বার আমাকে ভীষণ ভাবে নাড়া দিয়েছে, জানান দিয়েছে আমাদের এই অনিশ্চিত নশ্বর জীবনের ক্ষণস্থায়িত্বকে; কখনো কখনো আমাদের জীবনের এই অবিরাম প্রাণপণ দৌড়কে অর্থহীন মনে হয়েছে। আমাদের স্থায়ী ঠিকানা কবর কিনে রাখার প্লান করছি। সে যাই হোক, মরতে হবে আমাদের সবাইকেই, কিন্তু তাই বলে জীবন মাঝে মাঝে স্থবির হয়ে গেলেও একেবারে থেমে থাকে না, আর এটিই পৃথিবীর নিয়ম।
২৪ তারিখ রাট ২টায় এয়ারপোর্টে এ আসলো আমার ভাই নাসিম, ওর মেয়ে জিহান আর আমার দেবর মাসুদ। ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছিলো, বাসায় ফেরার পথে জিহান ঘুমিয়ে পড়েছিল। নিজের দেশে পৌঁছে খুব শান্তি লাগছিলো, ঐ অপার আনন্দ তা শুধু একান্তে অনুভব করার, ভাষায় প্রকাশ করার নয়। মনে মনে গাইছিলাম, আমারও দেশেরও মাটিরও গন্ধে ভোরে আছে সারা মন।
২৫ তারিখ গুলশানে তুশান ভাইয়ের বাসায় গেলাম – ৬ই নভেম্বর গুলশান ক্লাবে কানাডিয়ান ইমিগ্রেশন নিয়ে আমার সেমিনার নিয়ে আলোচনা করার জন্য, অর্গানাইজার কামালও ছিল। ভাবী এবং তুষান ভাইকে ঐদিন রাতেই জরুরী প্রয়োজনে মরক্কো চলে যেতে হয়েছিল। আর তাই আলোচনাটি ঐদিনই সারতে হয়েছিল। গুলশান ক্লাবের সেমিনারের মূল উদ্যোক্তা ছিল তুশান ভাই- উনি আবার ৬ তারিখে সেমিনারের দিনই চলে এসেছিলেন। এসব কিছুর জন্যই আমি কৃতজ্ঞ তুশান ভাইয়ের কাছে।
২৬ তারিখ সকালে নরসিংদী থেকে আমার ইউনিভার্সিটির খুব কাছের বান্ধবী শোভা ফোন করলো আমার সঙ্গে দেখা করার জন্য। আমাদের দুইজনের প্রায় ২৮ বছর পর দেখা হলো ঢাকায়, কি যে ভালো লাগলো ওকে দেখে! ২৬ তারিখ শনিবার বেলা সাড়ে বারোটায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার শ্যামল মুখার্জীর অফিসে গেলাম আমার বিএল কলেজের ইংরেজি বিভাগের ৯৫ ব্যাচের ঢাকায় অবস্থানরত ছাত্র ছাত্রীদের সঙ্গে দেখা করার জন্য। (শ্যামল ওই ব্যাচে আমার ছাত্র ছিল) ;শ্যামলের অফিস থেকে আমরা সবাই সেগুনবাগিচায় একটা সুন্দর গোছানো, ছিমছাম রেস্টুরেন্টে গেলাম দুপুরের লাঞ্চ করার জন্য। লাঞ্চ তো আসলে অছিলা মাত্র ,আমরা (শ্যামল, জামান, সানজার, শারমিন, মতিউর, মাহফুজ সহ আরো কয়েক জন) আসলে অনেকদিন থেকেই প্ল্যান করছিলাম একটা গেট টুগেদার করার জন্য- ওদের সাথে আমার অনেক দিন একসাথে দেখা হয় না। সেই ২০০০ সালের ডিসেম্বর মাসে আমি বিএল কলেজ ছেড়ে অস্ট্রেলিয়ান গভমেন্ট স্কলারশিপ নিয়ে অস্ট্রেলিয়া চলে যাই- ঐসময়েই আমার ওদের সাথে শেষ দেখা হয়। ওখানে আমরা অনেক স্মৃতি রোমন্থন করলাম, খুব ভালো লাগছিলো যে ওরা আমাকে এতোদিনও এভাবে মনে রেখেছে। আমার মা-বাবা খুলনা থাকেন, তাই আমার প্ল্যান ছিল আমি ২৬ তারিখেই খুলনা যেয়ে আমার কিছু ব্যাক্তিগত কাজ করে, দুই তারিখে একবারে ঢাকা চলে আসবো। এরপর ঢাকার কাজকর্ম শেষ করবো, আত্মীয়-স্বজন বন্ধু বান্ধবের সঙ্গে দেখা করবো, আমার কিছু ক্লায়েন্টদের সঙ্গে পাঁচ তারিখে গুলশানে দেখা করবো , তারপর ৬ তারিখে গুলশান ক্লাবের ইনফরমেশন সেশন শেষ করে সাত তারিখে টরন্টো রওনা দেব। যাইহোক ঐদিন আমার যশোর যাওয়ার ফ্লাইট বিকাল সাড়ে পাঁচটায় হওয়ায় চারটার মধ্যেই আমি ওদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে এয়ারপোর্টের দিকে রওনা দিলাম- ঢাকার যানজট বলে কথা, আরো কিছুক্ষন থাকতে পারলে ভালো লাগতো। যশোর এয়ারপোর্টে দেখা হয়ে গেলো আমার খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রাক্তন কলিগ, খুব ভালো মনের- সদা হাস্যময় সারোয়ারের সঙ্গে। অনেক দিন পর দেখা হলো সারোয়ারের সঙ্গে, সেই ২০০৮ সালের জানুয়ারী মাসে আমি যখন সৌদি আরবের কিং খালিদ বিশ্ববিদ্যালয়ে লিয়েন নিয়ে চলে যাই তখনি আমার ওর সঙ্গে শেষ দেখা হয়। যশোর থেকে খুলনা আসার পথে অনেক কথা হলো সারোয়ারের সঙ্গে। ইংলিশ ডিপার্টমেন্টের এবং মডার্ন ল্যাঙ্গুয়েজে সেন্টার এর অনেক খবরাখবর পেলাম সারোয়ারের কাছ থেকে। আমার প্রাক্তন সহকর্মীরা কে কোথায়, কেমন আছে, ছাত্র ছাত্রীদের কথাও হলো। টরোন্টোতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক কলিগ এবং ছাত্রছাত্রী আছে; তবে ওরা ইংরেজি বিভাগের তেমন নয়, অধিকাংশই কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, বিবিএ, ফিশারিজ , আর্চিটেক্চার এইসব বিভাগের। সারোয়ার ডিপার্টমেন্টে যেতে অনুরোধ করেছিল, আমিও চেয়েছিলাম যেতে, সময় করে উঠতে পারি নি। এর পরের বার যাবো আশা রাখি।
২৭ তারিখ খুব সকাল সকাল চলে গেলাম ডিসি অফিসে আমার ব্যাক্তিগত কিছু কাজ কর্মের জন্য। ২৬ তারিখে ঢাকা থেকেই বিএল কলেজের ৯৫ ব্যাচের আরো দুইজন স্টুডেন্ট উত্তম আর আনিসের সঙ্গে কথা হয়েছিল ২৭ তারিখ সন্ধ্যায় হোটেল টাইগার গার্ডেন খুলনায় আমি ওদের সাথে বসবো সন্ধ্যা ৬টায়। কিন্তু ৬ টায়ও আমার কাজ শেষ হলো না। উত্তম আর আনিস আমাকে ফোন করছিলো, আমি কখন যাবো। আমি বললাম, আমি খুব দুঃখিত, আমি জানি সবাই অনেক দূর থেকে এসেছে কিন্তু আমিতো এখনো ডিসি অফিসের সামনে আছি, কেবল কাজ শেষ হলো, বাসায় যেয়ে তারপর আসবো , একটু দেরি হবে। আনিস বললো ম্যাম আমি আপনার পাশেই আছি, একটু অপেক্ষা করেন, দুই মিনিটের মধ্যে এসে যাচ্ছি। তারপর দেখি আনিস, ওর অফিস ডিসি অফিসের সাথেই, ও খুলনা সদর থানার এসপি। ওর সঙ্গে বাসায় এসে রেডি হয়ে গেলাম হোটেল টাইগার গার্ডেনে। ৯৫ ব্যাচের প্রায় ৩০/৩৫ জন স্টুডেন্ট এসেছিলো; খুব সুন্দর সময় কাটলো ওদের সঙ্গে। খুব ভালো লাগলো আমার ছাত্র ছাত্রীদের সাফল্য দেখে- কেউ সাংবাদিক, কেউ পুলিশ অফিসার, কেউ শিক্ষক, কেও প্রশাসনে আছে, ওরা সবাই অনেক ভালো মানুষ হয়েছে। আনিসের একটা কথা আমার খুব মনে পড়ছে- ম্যাম , আপনি এখন আর খোঁপায় কাঁটা পরেন না?
২৮ তারিখে আমার খুলনার সব কাজকর্ম ফেলে রেখে আবার ঢাকা চলে যেতে হলো। বাংলাদেশ ব্যাংক এ কিছু জরুরী কাজ আর বাংলা ভিশনে মোস্তফা ফিরোজ ভাইয়ের লাইভ অনুষ্ঠান প্রবাস কথায় অংশ নেয়ার জন্য। পরের দিন ২৯ তারিখেই আবার খুলনা গেলাম খুলনার অসমাপ্ত কাজ কর্ম শেষ করার জন্য। যশোর এয়ারপোর্ট থেকে যখন খুলনা যাচ্ছিলাম, ফারুখ ভাইয়ের ফোন পেলাম। ফারুখ ভাই বিএল কলেজের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর, আমাদের জাহাঙ্গীরনগরের সিনিয়র ভাই। আমি টরেন্ট থাকতেই উনি আমাকে দাওয়াত দিয়েছিলেন, নভেম্বরের ১ তারিখে যশোরের নওয়াপাড়ায় জাহাঙ্গীরনগরের প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদের মিলনমেলায় যাওয়ার জন্য। ফারুখ ভাই ঐদিনই সন্ধ্যায় স্বপন ভাইয়ের বাসায় যেতে বললেন, এর পর পরই স্বপন ভাই ও ফোন করলেন। স্বপন ভাই খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি, উনিও জাহাঙ্গীরনগরের, আমার হাসব্যান্ড এর খুব কাছের বন্ধু। বিকালে স্বপন ভাইয়ের সুন্দর, বিশাল বাংলোতে ঘোড়া, ময়ূর, হরিণ, পাখি আর সুন্দর সুন্দর ফুলবাগানের মাঝে আমার প্রিয় সব খাবার- আমড়া মাখানো, লেবু মাখানো, কদবেল, পেয়ারা, তালের পিঠা, রসগোল্লা আরো হাজার রকমের পিঠা পুলির আয়োজনে আমি বিমোহিত হয়ে গেলাম- আমাদের স্বপন ভাইয়ের রুচির প্রশংসা করতেই হয়। ১ তারিখের মিলন মেলা নিয়ে অনেক আলোচনা হলো।
৩০ তারিখে আমার ননদের ছেলের আংটি পরানো ছিল। এনগেজমেন্টের ট্র্যাডিশনাল পোলাও কোর্মা কোফতা কালিয়া ছাড়াও ছিল,সাদা ভাত , মাছ, ভর্তা, শাক, ডাল , ছোট মাছ, শুঁটকি – খুব অবাক হলাম এই নতুন আত্মীয়রা কিভাবে জানলো আমার পছন্দের খাবারের কথা? যে পরিমান খাবার দাবার বাংলাদেশে খেয়েছি, ওজন বেড়ে গেছে অনেক বেশি।
নভেম্বরের ১ তারিখে আমাদের সতেরোতম ব্যাচের কুতুব আর গফ্ফার সহ রওনা দিলাম নওয়াপাড়া। সারাদিন ব্যাপী ১২০০ জনের উপরে আয়োজন ছিলো, সবাই আমাদের জাহাঙ্গীরনগরের। আমাদের প্রাক্তন ভিসি স্যার, নাট্য ব্যাক্তিত্ব সেলিম ভাই ও রোজি ভাবি, কাইজার ভাই -ভাবি, আমাদের ইয়ার মেট গণেশ, কন্ঠী আপা, স্বপন ভাই, ইন্দু দিদি, মাসুদ ভাই, ছোট ভাই রাহাত, ছোট বোন মনিরা আরো কত জনের সাথে যে কতদিন পরে দেখা হলো । সেই ১৯৯৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়েছি তারপর এরকম আর কোনো বড়ো গ্যাদারিং এ যাওয়া হয় নি। হই হুল্লোড়, হাসি আর আনন্দের মধ্যে চোখের নিমেষে কেটে কেলো সারাটা দিন। মনে হচ্ছিলো জাহাঙ্গীরনগরের সেই দিন গুলোতে চলে গেছি। ২ তারিখে গেলাম সৈয়দ মহল্লা, আমার শশুর বাড়িতে- আমার আব্বা-আম্মা, ভাবি আর দুই ননদদের নিয়ে। আমার শশুর শাশুড়ি আর বড় ভাসুরের কবর জেয়ারত করলাম।
তিন তারিখে খুলনার সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে একবারে ঢাকা চলে গেলাম। ঢাকায় আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বান্ধবী শিখার শান্তিনগরের বাসায় গেলাম- ভেবেছিলাম ওকে নিয়ে একটু শপিং করতে বেরোবো; খালি গল্প আর গল্প, শপিং এর কথা ভুলেই গেলাম। ৪ তারিখে গুলশানের ধানমন্ডির বাসায় আমার স্কুলের বান্ধবীদের সাথে বসলাম- ইতি আসলো ব্যাংকে ওর চাকরি থেকে, রত্না আর স্বপন ভাই, চন্দন ভাই আর গুলশান কে নিয়ে আমাদের আড্ডা জমেছিলো খুব। ওখান থেকে আবার বাংলা ভিশনে গেলাম প্রবাস কথার আর একটি লাইভ প্রোগ্রামে অংশ নেয়ার জন্যে। ৫ তারিখ ধানমন্ডির সন্তুর রেস্টুরেন্টে আমাদের জাহাঙ্গীরনগরের সতেরোতম ব্যাচের সবার সাথে সন্ধ্যা থেকে দুপুর রাত পর্যন্ত আড্ডা হলো। কুতুব, মাসুদ, সাবেরা, রাজু, পপি, মিতু, রিয়া, মাহফুজ, রাজুর ছেলে অন্য রাজু , রুনু, কোহিনূর, সাইফ, তুষার, দুই আলমগীর, আলম, নজরুল, মনির , আজাদ সহ আরো কয়েকজন মিলে অনেকদিন পর আড্ডা হলো। ৬ তারিখে গুলশান ক্লাবে কানাডিয়ান ইমিগ্রেশন নিয়ে আমার সেমিনার ছিল। তুশান ভাই, আসিফ ভাই, হারুন ভাই, মহিদ স্যার, ইসমাইল জাবিউল্লাহ, আলমগীর ভাই সহ কামাল, মাসুদ, মিঠুন, মিথিলের অক্লান্ত পরিশ্রমে হল ভর্তি দর্শকদের মাঝে সেমিনার খুবই প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছিল। ওখানেও একই কথা- আইলটস ছাড়া ইমিগ্রেশন হবে কিনা, জব অফার নিয়ে যাওয়া যাবে কিনা, স্টুডেন্ট ভিসা আইলেটস ছাড়া হবে কিনা ? ওখানেও বোঝাতে হলো- কানাডিয়ান ইমিগ্রেশন একটি প্রসেস- এর জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু শর্ত পূরণ করতে হয় আর এজন্য সময় এবং শ্রম দিতে হয়। ওখান থেকে আবার ইউ টিউব ভয়েস বাংলায় মোস্তফা ফিরোজের রেকর্ডিং এর জন্য গেলাম বাংলা ভিশন অফিস এ। ৭ তারিখ সকালে এনটিভিতে শুভ সন্ধ্যা প্রোগ্রাম এ আলাপ চারিতা অনুষ্ঠানের রেকর্ডিং হলো। সবগুলো টিভি চ্যানেলেই আমি মূলত কানাডিয়ান ভিসা এবং ইমিগ্রেশন পলিসি নিয়ে কথা বলেছি। অনেকদিন পর আবার অনুষ্ঠানের পরিচালক আমাদের জাহাঙ্গীরনগরের হুমায়ুন দুই হাজার টাকার চেক দিলো, ভালোই লাগলো। এনটিভির মোস্তফা আর শ্যামল মুখার্জী আমাকে আবারো টিভির অনুষ্ঠানে ফিরিয়ে নিয়ে গেলো। কথা ছিল চ্যানেল আই , ডিবিসি নিউস এবং বাংলাদেশ টিভিতে প্রোগ্রাম করার, সময়ের অভাবে করতে পারি নি।
৭ তারিখ বিকাল পাঁচটায় এয়ারপোর্টে রওনা দিলাম টরেন্টো ফিরে আসার জন্যে। একদম আসতে ইচ্ছে হচ্ছিলো না- মনে হচ্ছিলো আরো কয়েকটা দিন থাকতে পারলে মন্দ হতো না, আর কবে আসতে পারবো!
এবার বাংলাদেশে খুব অল্প সময় থেকেছি কিন্তু কাজকর্ম করতে পেরেছি খুব দ্রুত, দেখা হয়েছে অনেকের সঙ্গে , অনেক প্রিয় মানুষের সঙ্গে, অনেকদিন পরে। সবচেয়ে ভালো লেগেছে আমার ছাত্র ছাত্রীদেরকে দেশে খুব ভালো মানুষ হিসাবে দেখে, বিভিন্ন বড় বড় পদে দেখতে পেয়ে। গর্বে আমার বুক ভরে গেছে। শিক্ষকতা করার এই এক আনন্দ। টরেন্টোতে যেমন আমি ময়মনসিং গার্লস ক্যাডেট কলেজের, বিএল কলেজের, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের, সৌদি আরবের কিং খালিদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীদের সাথে এবং আমার জাহাঙ্গীরনগরের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাই বোনদের সঙ্গে বছরে কম করে হলেও দুইবার বসি , এবার বাংলাদেশ যেয়েও আমার ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে, স্কুল এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুদের সঙ্গে সময় দিতে পেরেছি। ধন্যবাদ ওদের সবাইকে আমাকে সময় দেওয়ার জন্যে। টরেন্টোতে আসার পর থেকেই আবার দিন গুনছি- কবে যাবো বাংলাদেশে। বাংলাদেশে আমার এবারের স্মৃতিগুলো রবি ঠাকুরের ভাষায় বলি “ভরা থাকে স্মৃতিসুধায় বিদায়ের পাত্রখানি ” আসন্ন বিজয় দিবস এবং নতুন ইংরেজি বছরের শুভেচ্ছা আর শুভ কামনা রইলো সবার জন্য। দোআ করবেন আমার এবং আমার পরিবারের সকলের জন্য। ধন্যবাদ।