চারদিকে ঘন অন্ধকার। প্রচন্ড শীতের ভিতর একা একা রিতুন বসে আছে লেকের পাড়ে। ঘন কুয়াশা তাকে ঘিরে ধরেছে। রাত নেমেছে অনেক আগে। শীতের এই সময়টাতে মানুষজন তাড়াতাড়ি ঘরে ফেলে। রাস্তাঘাট সব ফাঁকা হয়ে যায় সন্ধ্যার পর পর। দু’চারজন বাইরে থাকেন একান্ত প্রয়োজনে। তবে রিতুন কোনো প্রয়োজনে বসে নেই। অন্ধকার তাকে গ্রাস করেছে। চারদিকে তাকিয়ে দেখে কোথাও কেউ নেই। শুধু একা একা বসে আছে সে। হিমেল বাতাস তার শরীরকে কাঁপিয়ে তুলছে। তাতে কিছু এসে যায় না। তার আশা অন্যদিনের মতো জয়িতা তাকে ফোন করবে। জানতে চাইবে কেমন আছে। বলবে: ঠান্ডার ভিতর এভাবে বাইরে বসে থেকো না। ঠান্ডা লাগবে।
কি দরদ মাখানো সেই কথা।
মনে হতেই রিতুনের বুকটা মোচড় দিয়ে ওঠে। মনে হয়, এই বুঝি জয়িতা বিনা তার বেয়ে আসবে। তার কানে কানে বলবে- এমন ডানপিঠে কেন তুমি?
রিতুন তাকিয়ে থাকে সামনে। দু’চার হাত পরে আর কিছু দেখা যায় না। কি করবে সে? কি করা উচিত তার?
নিজের সঙ্গে অনেকক্ষণ যুদ্ধ করে। বুঝে উঠতে পারে না। জয়িতার জন্য কি সে তার জীবন উৎসর্গ করে নি! তাহলে কেন জয়িতা তার কথা রাখছে না। এমন ভালবাসার জন্য রিতুন দিনের পর দিন অপেক্ষা করেছে? কার কাছে যাবে সে? কে তাকে শান্তনা দেবে? নিয়তি তার সামনে কি লিখে রেখেছে? সে কি আত্মহত্যা করবে? সে কি বাঁচতে পারবে? কার জন্য বাঁচবে?
না, যাদেরকে সে আপন ভেবেছিল তারা সবাই এখন অনেকটা দূরে সরে গেছে।
রিতুন বসে থাকে! বসে থাকে!! আর বসে থাকে!!!