বেডরুমের ডিজিটাল দেয়াল ঘড়িটা ইদানিং খাদক হয়ে উঠেছে । একটা ব্যাটারি দু‘মাসেই খেয়ে ফেলে। তখন সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কাঁটা আর ঘোরে না। নতুন ব্যাটারি লাগাই , আবার তথৈবচ । অনেকদিন ধরে দেয়ালে ঝুলে আছে । অবিরাম সেবা দিয়ে যাচ্ছে । ব্যাটারি বেশী খাচ্ছে , উজ্জ্বল চকচকে রং মলিন প্রায় । এক এক সময় মনে হয় বদলে ফেলি, স্টোর রুমে রেখে আসি। কেন জানি পারিনা। কেমন যেন একটা মায়া পড়ে গেছে ।
নিজের অজান্তেই বুকের বাম পাশে হাত চলে যায় । টিক টিক, টিক টিক । অনেক দিন তো হলো । হাফ সেঞ্চুরি পার করে, এক দুই তিন, সাড়ে তিন, পৃথিবীর দেয়ালে ঝুলে আছি । যদিও এখনও ঠিকঠাক মতো চলছে, কিন্তু কতদিন চলবে জানি না । উপরন্তু বাস্তবতার কঠিন পথ পাড়ি দিতে গিয়ে সময়ের বিবর্তনে, সেই লালচে আভার গৌরবর্ণ আজ অনেকটাই তামাটে । সখের ঘনকৃষ্ণ ঝাকড়া বাবরি চুল এখন ক্রমশঃ হালকা আর সফেদ হয়ে আসছে ।
বেডরুমের দেয়াল ঘড়িটার মতো আমিও পুরোনো হয়ে যাচ্ছি । পৃথিবীর দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে ভাবি ।দেহ ঘড়ির মালিক যিনি, তিনি কি আমার মত মায়ার কাছে হেরে যাবেন ? নাকি খুব বিরক্ত হয়ে একসময় পৃথিবীর দেয়াল থেকে নামিয়ে দিয়ে, তার আবর্জনার ঝুড়িতে ছুঁড়ে ফেলবেন ?
জানি একদিন এমনটাই হবে । এমনই হয়, শুধু দিনক্ষণ আমার জানা নেই । কেউ জানেনা , কাওকেই জানানো হয় না ।
জানিয়ে দিলে কি এমন ক্ষতি হতো ???