নরওয়ে থেকে:-
বয়স যখন ১৫-১৮ ছিল, অন্য পাড়ার ক্রিকেট টিমের বিরুদ্ধে একটা জয় পাওয়ার জন্য জান -প্রাণ লাগিয়ে দিতাম। দলনেতা হিসেবে দায়িত্বের ভারও বেশি থাকতো। খেলায় কখনো হারতাম কখনো জিততাম , তবে আত্মবিশ্বাস রাখতাম জয়ী হবার। দলের জয়ে আনন্দে আত্মহারা হতাম, দলের সবাই মিলে কোকাকোলা কিনে খেতাম। মাঝ বয়সে এসে নিজের কোম্পানির জন্য, আমার সহকর্মীদের জন্য একই ভাবে লড়ে যাচ্ছি, সময়ে অসময়ে নানান পদক্ষেপ নিচ্ছি , কম্পেটেটিভ কোম্পানিগুলোর সাথে ঠিকে থাকার লড়াইয়ে প্রতিদিন সংগ্রাম করে যাচ্ছি।
ছোট বেলার সেই খেলাগুলো, নেতৃত্ব দেয়ার দিনগুলো আমাকে অনেক শিখিয়েছে, শিখিয়েছে কিভাবে ঠিকে থাকতে হয়, কিভাবে নেতৃত্ব দিতে হয়, কিভাবে প্ল্যান বদলাতে হয় এবং লক্ষ্য ঠিক করে কিভাবে জয় ছিনিয়ে নিতে হয়। বর্তমানের দিনগুলো অনেক কষ্টের, কোনো কিছুতে হেরে গেলে মায়ের আঁচলের পিছে মুখ লুকানোর জন্য এখানে মা নেই, বড়ো কোনো ভুল করে বিপদে পড়লে বাবা চাচাদের কেউ নেই সমস্যা থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসার। বর্তমানের জীবন বড় বাস্তব, বড় কঠোর, বড় নির্মম। এখানে নিজের প্রয়োজনগুলো মেঠানোর জন্য প্রতিদিন কাজ করতে হয়, সময়মতো বিলগুলো পরিশোধ করতে হয়, আর বড়ো ভীষণ কোনো বিপদে পড়লে নিজের আত্মসম্মান বিকি দিয়ে নিজেকেই সমস্যার সমাধান করতে হয়।
জীবনে অনেকটা পথ হেটে এসেছি, অনেক দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে হেটে চলেছি না জানা কোনো এক সূর্যালোকিত দিনের সন্ধানে। জানিনা আগামীর দিনগুলো কেমন হবে:- তবে ছেলেবেলার সে দিনগুলো, সে দিনগুলোর সঙ্গীসাথীদের কাছে আমি চির কৃতজ্ঞ। গ্রামের ছেলে আমি, সংগ্রামে যার শুরু, তাকে কি এমনি এমনি হারিয়ে দেয়া যায় ?
গ্রামীণ বিশুদ্ধ বাতাসে বেড়ে উঠা এই বুকে যে শক্তি আছে তা কি এতো সহজেই ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়া যায় ??