,,”ভাসমান পথিকের উদাস হৃদয়ে এই তত্ত্বের উদয় হইলো, জীবনে এমন কত বিচ্ছেদ,কত মৃত্যু আছে,ফিরিয়া ফল কি? পৃথিবীতে কে কাহার?
কিন্তু রতনের মনে কোন তত্ত্বের উদয় হইলো না। সে সেই পোস্ট আপিস গৃহের চারিদিকে কেবল অশ্রুজলে ভাসিয়া ঘুরিয়া বেড়াইতেছিলো”।
কম্পিত পায়ে নৌকায় উঠলো কপিলা।
– “আমারে নিবা মাঝি লগে”?
সময় সম্মতি অসম্মতির অপেক্ষা করলো না। ততক্ষণে নোঙর মাটি ছেড়েছে, কুল ছেড়েছে নাও। দক্ষিণা বাতাসে ভেসে চললো ময়না দ্বীপে।
……..ভালবাসা!!! সৃষ্টি লগ্ন থেকে এ এক অজানা অনুভূতি, জিজ্ঞাসা, উপলব্ধি। যেখানে দিক নির্ণয়ের যন্ত্রের কাঁটা কাজ করে না। কখনো মধুর, কখনো অম্ল, কখনো বাঁধ ভাঙা ঢেউ, কখনো বা ভয়ংকর আবার কখনো বিয়োগান্ত। কথিত আছে,পৃথিবীর জমিনে প্রথম মনুষ্য রক্ত ঝরেছিলো, তাও এই ভালবাসার কারণে।
“আমায় এতো রাতে কেন ডাক দিলি প্রাণ কোকিলা-রে”!! বড় অদ্ভুত এই ডাক!! বড় নেশা এই ডাকে !! রাজা রাজ্য ছাড়ে, প্রেমিক প্রেমিকা ঘর ছাড়ে, কেউ বা সাজানো সংসার ছাড়ে। অনিশ্চিতার বন্ধুর পথ!! তবুও ছাড়ে!! কেউ জয়ী হয় কেউ বা হারে।
কতো হাজারো লোকগাঁথা শোকগাঁথা, লাখো কবিতা গল্প,গান, গুঞ্জন এই ভালবাসাকে ঘিরে। ভাবতত্ত্ব আর দেহতত্ত্বের মোহনায় ঐশ্বরিক যে মিলন মেলা, তারই নাম বোধ হয় ভালবাসা।
অপ্রিয় সত্য যে, ভালবাসা আর আবেগী মিথ্যার মধ্যে একটা সম্পর্ক রয়েছে।আবেগী মিথ্যা কখনো কখনো ভালবাসার বৃক্ষে জল সিঞ্চনের কাজ করে। ” আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচবো না”। এটা একটা বড় আবেগী মিথ্যা কথা। অথচ এই মিথ্যাটাই ভালবাসাকে বাঁচিয়ে রাখে।
হিসাবের ভুলে অথবা নিয়তির অমোঘ নিয়মে মিথ্যাটা একসময় প্রমাণিত হয়। মানুষ বাঁচে, কেউ জীবনের মোড় ঘুরিয়ে বাঁচে, কেউবা একাই বাঁচে। বাঁচতে হয়।
বেঁচে থাকা সহজ, মরে যাওয়া সহজ নয়।।।
ছবি:-সৌজন্যে Kompasiana.com